ছহিবু সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ
মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে- পবিত্র হজ্জ এবং পবিত্র উমরাহ উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, হুকুম-আহকাম সম্পর্কে
, ২৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৬ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
১৪ পর্ব-
যেখানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِـيْ هُرَيْـرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ حَجَّ لِلّٰهِ فَـلَمْ يَـرْفُثْ وَلَـمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَـوْمِ وَّلَدَتْهُ أُمُّهٗ
হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ حَجَّ لِلّٰهِ
যে মহান আল্লাহ পাক যিনি খলিক যিনি মালিক যিনি রব উনার রেজামন্দি সন্তুষ্টির জন্য এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারকের জন্য হজ্জ করলো। তিনি
فَـلَمْ يَـرْفُثْ وَلَـمْ يَـفْسُقْ
সে অশ্লীল-অশালীন কোন কাজ করলো না। নাফরমানীমূলক কোন কাজ করলো না। সে কি হলো?
رَجَعَ كَيَـوْمِ وَّلَدَتْهُ أُمُّهٗ
সে এমনভাবে ফিরে আসবে বা প্রত্যাবর্তন করবে যেন আজকেই তার জন্ম হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সে মা’ছূম নিস্পাপ হিসাবে প্রত্যাবর্তন করবে। সুবহানাল্লাহ! তারই হজ্জে মাবরূর নছীব হবে যে কোন নাফরমানীমূলক কাজ করলো না। কোন অশ্লীল-অশালীন, বেপর্দা, বেহায়ী কোন কাজ করলো না। তার গুনাহ-খ¦তাগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। মা’ছূম হিসাবে সে প্রত্যাবর্তন করবে তার হজ্জে মাবরূর নছীব হবে। সুবহানাল্লাহ! এটা স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে।
কাজেই যারা হজ্জে মাবরূর করতে চায় তাদের সমস্ত বদ আমল থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেঁচে থাকলে তখন তার হজ্জ কবুল হবে, হজ্জে মাবরূর নছীব হবে। এখন যারা হজ্জে মাবরূর করতে চায় সে হিসাবে তার আমলগুলো করতে হবে। আর এ ব্যতিক্রম করলে, হজ্জে মাবরূর নছীব হবে না বরং সেটা লা’নতের কারণ হবে। নাউযুবিল্লাহ!
এবং হজ্জ করার যে তাক্বীদ করা হয়েছে। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَلِىٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কি বলেন? মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ مَّلَكَ زَادًا وَّرَاحِلَةً
যে মালিক হলো, পাথেয় এবং বাহনের যে মালিক। অর্থাৎ যার পাথেয় তার ব্যবস্থা হয়ে গেল, টাকা-পয়সার ব্যবস্থা হলো। পাথেয় বাহন তারও ব্যবস্থা হলো। সব ব্যবস্থা তার হয়ে গেল।
تُـبَلِّغُهٗ إِلٰى بَـيْتِ اللهِ
সে মহাপবিত্র কা’বা শরীফ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এ ব্যবস্থা তার হলো সব দিক থেকে সঠিক ভাবে। সেখানে সে কোন নাফরমানীমূলক কাজ করবে না। অশ্লীল, বেপর্দা, বেহায়ী কোন কাজ করবে না এবং মারা-মারি, কাটা-কাটি করবে না, এ অবস্থায় সে পৌঁছার ব্যবস্থা হয়ে গেল। এরপরও যে হজ্জ করলো না। সমস্ত ব্যবস্থা থাকার পরও যে হজ্জ করলো না
وَلَـمْ يَـحُجَّ فَلَا عَلَيْهِ أَنْ يَّـمُوتَ يَهُوْدِيًّا أَوْ نَصْرَانِيًّا
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, এরপরও কেউ যদি হজ্জ না করে তাহলে সেটা আমি জানি না। অর্থাৎ এখানে বলা হচ্ছে, সে ইহুদী বা নাছারা হয়ে মারা যাবে। নাউযুবিল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানেন, এটার গুরুত্ব বোঝানোর জন্য। সে ইহুদী হয়ে মারা যাক অথবা নাছারা হয়ে মারা যাক, সে আমার উম্মত দাবি করার পরও যখন সে আমার আদেশ পালন করলো না তাহলে তার কোন দায় দায়িত্ব আমার উপর থাকবে না। সেটাই তিনি স্পষ্ট করে বলে দিলেন। এরপর তিনি বললেন-
وَذٰلِكَ أَنَّ اللهَ يَـقُوْلُ فِى كِتَابِهٖ وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَـيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيْلًا
যেহেতু মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব তিনি নিজেও বলে দিয়েছেন। যাদের পথ এবং পাথেয় সমস্ত ব্যবস্থা থাকবে তারা যেন মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক্ব যিনি মালিক যিনি রব উনার রেজামন্দি সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হজ্জ আদায় করে নেয়। এখানে যেন কোন প্রকার গাফলতী না করে, সেটাই তাকীদ করা হয়েছে। এখন সব ব্যবস্থা থাকলে তাকে হজ্জ করতেই হবে। এখানে কোন অবস্থাতেই বিরত থাকতে পারবে না। তবে হজ্জের বাধা স্বরূপ যে বিষয়গুলি, বাধার কারণ সেটা অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ أُمَامَةَ رَضِىْ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ لَّـمْ يـَمْنَـعْهُ مِنَ الْـحَجِّ حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ، سُلْطَانٌ جَائِرٌ، مَرَضٌ حَابِسٌ فَمَاتَ وَلَـمْ يَـحُجَّ فَـلْيَمُتْ إِنْ شَاءَ يَهُوْدِيًّا وَّإِنْ شَاءَ نَصْرَانِيًّا
এখানে হযরত আবূ উমামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ لَّـمْ يَـمْنَـعْهُ مِنَ الْـحَجِّ
যার হজ্জে যাওয়ার কোন বাধা হলো না। কোন বিষয়গুলি
حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ
প্রকাশ্য, বাহ্যিক তার কোন বাধা নেই। কেউ বাধা দিচ্ছে না যেতে।
سُلْطَانٌ جَائِرٌ
কোন জালিম বাদশা সেখানে নেই। যে বাধা দিবে, জালিম বাদশা জুলুম করবে এমন কেউ নেই
مَرَضٌ حَابِسٌ
কঠিন কোন রোগে সে আক্রান্ত নয়। এখানে তিনটা বিষয় বলা হয়েছে। একটা হচ্ছে, বাহ্যিক কোন বাধা সেখানে যেতে বাধা হচ্ছে না বা দিচ্ছেনা তাকে যেতে। দুই নম্বর সেখানে কোন জালিম শাসক নেই যে তাকে জুলুম করবে। তার ঈমান আমল ক্ষতি করবে এমন কোন জালিম শাসক নেই। এরপর বলা হচ্ছে কঠিন অসুস্থ সে নয়, যেতে তার অসুবিধা হবে।
فَمَاتَ وَلَـمْ يَـحُجَّ
এরপরও যে হজ্জ করলো না সে মারা গেল। সেটাই বলতেছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
فَـلْيَمُتْ إِنْ شَاءَ يَهُوْدِيًّا وَّإِنْ شَاءَ نَصْرَانِيًّا
হয় সে ইহুদী হয়ে মরুক অথবা সে নাছারা হয়ে মরুক তাতে কোন অসুবিধা নেই। নাউযুবিল্লাহ! এখানে কিন্তু স্পষ্ট বলে দেয়া হচ্ছে, যদি কোন অসুবিধা না থাকে, বাহ্যিক বাধা না থাকে, জালিম বাদশা। এখনতো জালিম বাদশা রয়েছে। ছবি তুলতে হয়, পর্দা করা যাচ্ছে না, তাহলে কি করে তার হজ্জ করবে সে। এখনতো বাধা দিচ্ছে, ছবি ছাড়া সে ঢুকতে দিবে না। তার পাসপোর্ট সে ছবি ছাড়া গ্রহণ করবে না। আবার সেখানে পুরুষ হোক মহিলা হোক ছবি দিতে হচ্ছে। তাহলে মেয়েদের বেপর্দা হতে হচ্ছে। আগে যে একটা পর্দার ব্যবস্থা ছিল সেটাতেও এখন তারা গাফলতী করে যাচ্ছে। আবার সেখানে ক্যামেরা ফিট করেছে। সিসি ক্যামেরা, সিসি টিভি সেগুলো দ্বারা ছবি তোলা হচ্ছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে সেতো জালিম বাদশার অন্তুর্ভুক্ত। সেতো হারাম কাজ করাচ্ছে। তাহলে তার ঈমানের নিরাপত্তা কোথায় রইল। বিষয়টা ফিকির করতে হবে। সে বাধা দিচ্ছে। অসুস্থ না হলে বাহ্যিক বাধা রয়েছে। জুলুম করা হচ্ছে ঈমানদারদেরকে। আমল থেকে তাকে মাহরুম করা হচ্ছে, ঈমান থেকে তাকে মাহরুম করার কোশেশ করা হচ্ছে। কাজেই বিষয়টা ফিকিরের বিষয়। সেটাই বলা হচ্ছে, যদি এ ধরনের কোন বাধা না থাকে তাহলে হজ্জ ফরয হবে। তাকে করতেই হবে। (অসমাপ্ত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১)
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র মসজিদ নির্মাণের ফাযায়িল-ফযীলত
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১)
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)