ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ (২)
, ০৭ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৪ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২২ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
সাধারণভাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মধ্যে আমরা যাঁরা অতীতের হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের যাঁরা আযওয়াজ-আহলিয়া হযরত উম্মুল বাশার হাওওয়া আলাইহাস সালাম, হযরত সারাহ আলাইহাস সালাম এছাড়া যাঁরা বিশেষ মহিলা হযরত র্মাইয়াম আলাইহাস সালাম, হযরত আসিয়া আলাইহাস সালাম উনাদের শানে আমরা এই শব্দগুলি, ছিফতগুলি ব্যবহার করে থাকি। সেদিক থেকে যাঁরা উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাই এই ছিফতগুলির সর্বাধিক হক্বদার। আরেকদিক থেকে যাঁরা আহলে বাইত শরীফ উনারাও আলাইহাস সালাম, আলাইহিস সালাম, আলাইহিমুস সালাম বা আলাইহিন্নাস সালাম এই শব্দগুলি, ছিফতগুলির অধিক হক্বদার।
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত আন নূরুর রবিআহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার শান, উনার ফযীলত, উনার বুযুর্গী-সম্মান সম্পর্কে আমরা এখানে আলোচনা করবো ঠিক ততটুকু যতটুকু যিনি খালিক্ব, যিনি মালিক, যিনি রব মহান আল্লাহ পাক এবং যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তাওফীক ইনায়েত করেন।
বিশেষ করে জুমাদাল উখরা শরীফ এই মাস হচ্ছে সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত আন নূরুর রবিআহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মাস। কাজেই, আরেকটা বিষয় হচ্ছে বর্তমান আমাদের দেশে হোক, বিদেশে হোক যারা মহিলাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব অতিবাহিত হয়েছেন, অতীত হয়েছেন এখন পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের যাঁরা আহাল ও ইয়াল আলাইহিমুস সালাম এবং খাছ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাঁরা আহাল ও ইয়াল আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং পরবর্তীতে ইমাম, মুজতাহিদ এবং আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্য থেকে যাঁরা মহিলা রহমতুল্লাহি আলাইহিন্না, উনাদের সম্পর্কে আসলে কিতাবাদিতে আলোচনা অনেক কম করা হয়ে থাকে, অল্পই করা হয়ে থাকে। যার কারণে মুসলমান মহিলাগণ উনারা উনাদের অনুসরণীয়-অনুকরণীয় কারা সে বিষয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বগ্রস্ত। মুসলমানগণ সে ইলিম সম্পর্কে এক প্রকার অজ্ঞই বলা যেতে পারে। সেজন্য যাঁরা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম এবং আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম রয়েছেন এবং পরবর্তী ইমাম, মুজতাহিদ, আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম পুরুষ এবং মহিলা, আর বিশেষ করে যাঁরা মহিলা রহমতুল্লাহি আলাইহিন্না রয়েছেন উনাদের জীবনী মুবারকগুলো জানা, আলোচনা করা এবং বুঝার কোশেশ করা পুরুষ মহিলা সকলের জন্যই প্রয়োজন। সাধারণভাবে যাঁরা পুরুষ রয়েছেন উনাদের তো জীবনী মুবারক পাওয়া যায়, আলোচনা করা হয়। আর যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পরবর্তীতে যাঁরা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম আর যাঁরা ইমাম-মুজতাহিদ, মশহূর আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম- উনারা পুরুষের অন্তর্ভুক্ত সেহেতু এই বিষয়গুলো মানুষ সহজে বুঝে থাকে, জেনে থাকে। কিন্তু যাঁরা মহিলা উনাদের সাওয়ানেহ উমরী মুবারক অনেক সময় পর্দার কারণে আলোচনা করা হয় না। হ্যাঁ, যাঁরা অতীত হয়েছেন উনাদের বিষয়টা আলোচনা করা যেতে পারে। যাঁরা বর্তমান থাকেন উনাদের জন্য পর্দার বিষয়টা উল্লেখ্য। যাঁরা অতীত হয়েছেন উনাদের বিষয়গুলি আলোচনা করা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
মহান আল্লাহ পাক যিনি খালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যিনি খালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই বিষয়টা বলে দেন উম্মতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য।
যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওহী ছাড়া কোন কথা বলেন না।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى
মহান আল্লাহ পাক যিনি খালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব তিনি নিজেই বলেন, আমার যিনি হাবীব নূরে মুজাসসাম যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন যিনি ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওহী ব্যতীত কোন কথা মুবারক বলেন না, কোন কাজ মুবারকও করেন না। অর্থাৎ তিনি যিনি খালিক্ব মালিক রব উনার দ্বারা পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রিত। সেই হিসেবে ওহী মুবারক ব্যতীত তিনি কোন কথা বলেন না, বলবেন না, কাজ করেন না, করবেন না।
সেজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি বলে দিলেন, আমার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
قُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى
“আপনি বলে দিন উম্মতদেরকে, সমস্ত কায়িনাতকে, আমি তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চাচ্ছি না, তোমরা কোন বিনিময় দিতে পারবে না, তোমাদের সেই যোগ্যতা নেই।” মহান আল্লাহ পাক যিনি খালিক্ব মালিক রব উনার শরাফত মুবারক সেজন্য তিনি ভাষাটা এইভাবে বলেছেন। কোন বিনিময় চাওয়া হচ্ছে না, তোমরা দিতে পারবে না। তবে তোমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, কর্তব্য হচ্ছে, আমার যাঁরা আহাল ও ইয়াল, আওলাদ যাঁরা রয়েছেন, আহলে বাইত শরীফ যাঁরা রয়েছেন উনাদের প্রতি তোমরা মুহব্বত পোষন করবে ও সৎ ব্যবহার করবে, উনাদের খিদমত করবে, তা’যীম-তাকরীম করবে সবদিক থেকে। উনাদের যেভাবে তোমাদের খিদমতের আঞ্জাম দেয়া দরকার, তা’যীম-তাকরীম করা দরকার, ছানা-ছিফত করা দরকার সেভাবে তোমরা করবে।
এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই বলেন-
وَمَنْ يَقْتَرِفْ حَسَنَةً نَزِدْ لَهُ فِيهَا حُسْنًا إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ شَكُورٌ
“যে ব্যক্তি নেক কাজ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি তার নেকিগুলো বৃদ্ধি করে দেই। সুবহানাল্লাহ! এবং নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক যিনি খালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব তিনি ক্ষমাশীল এবং বান্দারা যে কাজগুলো করে থাকে সে বিষয়ে তিনি তাদের হক্বগুলো আদায় করে দেন।” এখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহাল ও ইয়াল- আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম যাঁরা রয়েছেন উনাদের তা’যীম-তাকরীম, উনাদের খিদমত এটা উম্মতের জন্য, বান্দাদের জন্য, বান্দীদের জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
এটা কিতাবে এসেছে-
لَا اَسْئَلُكُمْ اَجْرًا اِلَّا اَنْ تُوَدُّوْا اَقْرِبَائِىْ وَاَهْلَ بَيْتِيْ وَعِتْرَتِىْ وَذَلِكَ لِاَنَّهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ خَاتَمُ النَّبِيِّيْنَ لَا نَبِىَّ بَعْدَهُ
কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারকে এই আয়াত শরীফ উম্মতদেরকে, বান্দাদেরকে, বান্দীদেরকে জানিয়ে দিলেন উনার যাঁরা নিকটবর্তী, যাঁরা আহাল-ইয়াল, আওলাদ উনাদের সকলের খিদমত, তা’যীম-তাকরীমের যে বিষয়টা, সম্মানের বিষয়, মুহব্বতের যে বিষয়টা সেটা যেনো তারা যথাযথভাবে আদায় করে। কেননা তিনি হচ্ছেন শেষ নবী, শেষ রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার পরে কোন নবী-রসূল আসবেন না। কাজেই উনার পরে যাঁরা মূল ক্বায়িম-মাক্বাম হবেন উনারা হচ্ছেন উনার আহাল ও ইয়াল এবং আওলাদ। উনারা হচ্ছেন খাছ ক্বায়িম-মাক্বাম। কাজেই উনাদের খিদমত করার বিষয়টিই এখানে তাকীদ করে দেয়া হয়েছে। উনাদের ইজ্জত-সম্মান, বুযুর্গীর বিষয়টা যাতে উম্মত, বান্দা, মানুষ অনুধাবন করে সেজন্যই এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন।
(পবিত্র ওয়াজ শরীফ অডিও রেকর্ড পেতে যোগাযোগ করুন-
তাহযীব তামাদ্দুন বিভাগ, রাজারবাগ শরীফ ঢাকা)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)