সুন্নত মুবারক তা’লীম
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
, ৩ রা জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেক রোগের সাথে শেফাও পাঠিয়েছেন:
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ قَالَ مَا أَنْزَلَ اللهُ دَاءً إِلاَّ أَنْزَلَ لَهٗ شِفَاءً
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন কোন রোগ পাঠাননি যার আরোগ্যের ব্যবস্থা দেননি অর্থাৎ প্রত্যেক রোগের আরোগ্যতাও দান করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বিব, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৫৬৭৮)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ قَالَ مَا أَنْزَلَ اللهُ دَاءً إِلاَّ أَنْزَلَ لَهٗ دَوَاءً
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন কোন রোগ পাঠাননি যার প্রতিষেধকও পাঠাননি অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি রোগের সাথে সাথে তার ঔষধও পাঠিয়ে থাকেন সুবহানাল্লাহ। ” (সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ: কিতাবুত ত্বিব, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৪৩৮)
প্রত্যেক রোগেরই ঔষধ আছে। রোগ অনুযায়ী ঔষধ প্রয়োগ হলে, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইচ্ছায় রোগ ভালো হয়ে যায়।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ لِكُلِّ دَاءٍ دَوَاءٌ فَإِذَا أُصِيبَ دَوَاءُ الدَّاءِ بَرَأَ بِإِذْنِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক রোগেরই ঔষধ আছে। যদি কোন রোগের সঠিক ঔষধ প্রদত্ত হয় অর্থাৎ রোগ অনুযায়ী যদি ঔষধ প্রয়োগ হয় বা মিলে যায়, তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত অনুমতিক্রমে বা মুবারক ইচ্ছায় রোগী ব্যক্তি রোগ থেকে মুক্তি লাভ করে। (মুসলিম শরীফ)
মৃত্যু ও বার্ধ্যক্য ছাড়া সকল রোগের চিকিৎসা গ্রহণের মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أُسَامَةَ بْنِ شَرِيْكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا عِبَادَ اللهِ تَدَاوَوْا فَإِنَّ اللهَ لَمْ يَضَعْ دَاءً إِلاَّ وَضَعَ لَهٗ شِفَاءً أَوْ قَالَ دَوَاءً إِلاَّ دَاءً وَاحِدًا قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ! يَا حَبِيْبَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ! وَمَا هُوَ؟ قَالَ" الْهَرَمُ
অর্থ: হযরত উসামা ইবনে শারীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হে মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দাগণ, আপনারা চিকিৎসা গ্রহণ করুন, কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেননি, যার কোন প্রতিষেধক তিনি সৃষ্টি করেননি।
তবে একটি রোগ আছে যার কোন প্রতিষেধক নেই, তখন উনারা (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেটি কি? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তা হলো “বার্ধক্য”। (তিরমিযী শরীফ: কিতাবুত ত্বীব, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২০৩৮, সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ: ৩৪৩৬)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أُسَامَةَ بْنِ شَرِيكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ تَدَاوَوْا عِبَادَ اللهِ ، فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَمْ يُنَزِّلْ دَاءً ، إِلاَّ أَنْزَلَ مَعَهُ شِفَاءً ، إِلاَّ الْمَوْتَ ، وَالْهَرَمَ.
অর্থ: হযরত উসামা ইবনে শারীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহিমাময় পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ পাক তিনি যত রোগ অবতীর্ণ করেছেন প্রত্যেকটি রোগের সাথে শেফা বা আরোগ্য মুবারকও নাযিল করেছেন। অর্থাৎ রোগমুক্তির উপায়-উপকরণও অবতীর্ণ করেছেন মৃত্যু ও বার্ধক্য ছাড়া। (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
যে ব্যক্তি চিকিৎসায় পারদর্শী তিনিই চিকিৎসা দিবেন, অনভিজ্ঞ ব্যক্তি চিকিৎসা দিলে, সে ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকবে।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ تَطَبَّبَ وَلاَ يُعْلَمُ مِنْهُ طِبٌّ فَهُوَ ضَامِنٌ.
অর্থ: হযরত আমর ইবনে শুয়াইব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা থেকে, তিনি উনার দাদা থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি চিকিৎসায় রত হবে; কিন্তু চিকিৎসা বিদ্যায় তার দখল আছে বলে জানা যাবে না, সে ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকবে। (আবূ দাউদ শরীফ)
হারাম বস্তু দিয়ে চিকিৎসা নিষিদ্ধ। এর মধ্যে কোন রোগ মুক্তি নেই:
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ لَمْ يَجْعَلْ شِفَاءَكُمْ فِيمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمْ.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যা হারাম করেছেন তার মধ্যে তোমাদের রোগমুক্তি প্রদান করেননি। (বায়হাক্বী শরীফ)
মদ দিয়ে চিকিৎসা নিষিদ্ধ, মদ তো ঔষধ নয় বরং তা ব্যাধি:
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
أَنَّ حَضْرَتْ طَارِقَ بْنَ سُوَيْدٍ الْجُعْفِىَّ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ سَأَلَ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْخَمْرِ فَنَهَا أَوْ كَرِهَ أَنْ يَصْنَعَهَا فَقَالَ إِنَّمَا أَصْنَعُهَا لِلدَّوَاءِ فَقَالَ إِنَّهُ لَيْسَ بِدَوَاءٍ وَلَكِنَّهُ دَاءٌ.
অর্থ: হযরত তারিক ইবনে সুওয়াইদিল জু’ফী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ঔষধরূপে মদের ব্যবহার বিষয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করতে নিষেধ করেন। অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মদ তো ঔষধ নয়; বরং তা ব্যাধি। (মুসলিম শরীফ)
নাপাক জিনিস ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ:
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الدَّوَاءِ الْخَبِيثِ .
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নাপাক জিনিসকে ঔষধ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাউদ শরীফ)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (১)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘তালবীনা’
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নতী খাবার পরিচিতি ও উপকারিতা : দুধ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খেজুরের রস খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মেশ্ক মিশ্রিত সুন্নতী ইসমিদ সুরমা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ক্বমীছ বা জামা নিছফে সাক্ব পর্যন্ত প্রলম্বিত হওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)