হিলাল
চাঁদ দেখে সকল আরবী মাস শুরু করার গুরুত্ব
, ০৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১১ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৫ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
৩) চাঁদের উচ্চতা:
চাঁদ দেখতে পাওয়ার জন্য আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে দিগন্ত রেখার উপর চাঁদের উচ্চতা। চাঁদ সূর্যাস্তের সময় দিগন্ত রেখা থেকে যথেষ্ট পরিমাণ উচ্চতায় না থাকলে চাঁদ দৃশ্যমান হয় না। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ পর্যবেক্ষণ স্থানে যদি চাঁদের কৌণিক দূরত্ব ৯ক্ক-১২ক্ক অথবা বেশি হয় এবং দিগন্তরেখা থেকে চাঁদের উচ্চতা নূন্যতম ৮ক্ক-১০ক্ক হয় তবে সে স্থানে চাঁদ দৃশ্যমান হতে পারে যদি মেঘ এবং অন্যান্য উপাদান বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। যদি তার একটি মানও কম হয় তখন দেখা যাবার সম্ভাবনা কমে আসবে। যখন কৌণিক দূরত্ব ৯ক্ক-র কম এবং দিগন্ত রেখা থেকে চাঁদের উচ্চতার মান ৮.৫°-র কম হয় তখন একজন সতর্ক এবং অভিজ্ঞ দর্শকেরও চাঁদ দেখার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
পৃথিবী পৃষ্ঠের একজন পর্যবেক্ষক যদি নিজের চোখ থেকে দিগন্তে একটি রেখা আর পশ্চিমাকাশে চাঁদে অপর একটি রেখা কল্পনা করে তবে দুই রেখার মিলিত বিন্দুতে যে কোণ তৈরি হবে সেটাই হবে চাঁদের উন্নতি কোণ। মহাকাশ বিজ্ঞানীর ভাষায় একে বলা হয়- Angle of height of moon above the hori“on ev altitude of moon। এই উন্নতি কোণ পরিমাপের মাধ্যমেই বুঝতে হয় চাঁদ দিগন্তরেখার উপর কত ডিগ্রি উচ্চতায় অবস্থান করবে। চাঁদ যখন দর্শকের মাথার উপর অবস্থান করে তখন চাঁদের উন্নতি কোণ ৯০ক্ক। যে চাঁদ সূর্যাস্তের সময় দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সে চাঁদ সাধারণতঃ ১০° বা তার চেয়েও অধিক উচ্চতায় অবস্থান করে থাকে। হিলাল বা বাঁকা চাঁদ যে সন্ধ্যায় বা সূর্যাস্তের পর দৃশ্যমান হয় প্রকৃতপক্ষে তা ওইদিন সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পর আকাশে উদয় হয় এবং সারাদিন সূর্যের সামান্য পূর্ব দিকে থাকে কিন্তু তা দেখা যাওয়ার অবস্থায় থাকে না। চাঁদ সূর্যের কিছুটা পূর্ব দিকে অবস্থান করার কারণে সূর্য যখন অস্ত যায় তখনও চাঁদের অস্ত যেতে কিছু সময় বাকি থাকে। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার ১০ক্ক বা তারচেয়ে বেশি উপরে অবস্থান করলে, অতঃপর সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে চাঁদ নিচের দিকে নামতে থাকে এবং কেবলমাত্র ভূমি থেকে ৪°-৫° উপরে অবস্থানরত অবস্থায় ২৯ দিনের চাঁদকে দেখা যায়।
দিগন্তরেখার উপর চাঁদের উচ্চতা চাঁদ দেখতে পাবার জন্য এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ যে, যদি সূর্যাস্তের সময় চাঁদ ১০ক্ক বা তারচেয়ে বেশি উচ্চতায় অবস্থান না করে বরং তার নিচে অবস্থান করে তাহলে চাঁদ দেখা যাওয়ার সময় দিগন্ত রেখার মাত্র ২°-৩° উপরে অবস্থান করবে। আর এই উচ্চতায় অধিকাংশ সময়ই অস্ত যাওয়া সূর্যের বিচ্ছুরিত আলোতে দিগন্ত এত উজ্জল থাকে যে- সে আলোতে চাঁদের আলো মøান থাকে এবং চাঁদ দেখা যায় না। সে কারণেই বিজ্ঞানীরা দিগন্তরেখার উপর চাঁদের উচ্চতাকে চাঁদ দেখতে পাবার অনেকগুলো শর্তসমূহের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
প্রশ্ন :
১) সূর্যাস্তের সময় দিগন্তরেখার কত ডিগ্রী উপরে থাকলে চাঁদ দেখা যেতে পারে?
ক) ৪°-৬°, খ) ১°-২°, গ) ৮°-১০°
২) চাঁদের উচ্চতার কোণ কিভাবে তৈরি হয়?
ক) বস্তু থেকে দর্শকের চোখে একটি রেখা এবং চোখ থেকে যমীনে যেখানে বস্তু থেকে রেখা টানা হয়েছে সেখানে যে কোণ উৎপন্ন হয়।
খ) বস্তু থেকে দর্শকের চোখে এবং সূর্যের দিকে যে রেখা টানা হয়।
গ) চাঁদ থেকে দিগন্তরেখায় এবং দিগন্তরেখা থেকে চোখে রেখা টানলে কোণ উৎপন্ন হয়।
৪) সূর্যাস্ত ও চন্দ্রাস্তের পার্থক্য:
আরবী মাসের ২৯তম দিন শেষে কখনো কখনো সূর্যাস্তের আগে চন্দ্রাস্ত হতে পারে। সে দিন চাঁদ দেখতে পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই থাকে না। কিন্তু সূর্যাস্তের পর চন্দ্রাস্ত হলে জানা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় সূর্যাস্তের কত সময় পর চন্দ্রাস্ত হবে। সাধারণত ২৯তম দিন শেষে সূর্যাস্ত ও চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ৪২ মিনিট থাকা প্রয়োজন। তবে এই ৪২ মিনিটের প্রথম ১০ মিনিট দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না আবার শেষ ১০ মিনিটেও সম্ভাবনা থাকে না। মাঝের ২২ মিনিটের শেষ ১০ মিনিটে চাঁদ দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা যেমন নামাযের সময়সূচী থেকে সূর্যাস্ত জানতে পারি (সেখানে সূর্যাস্তের সঙ্গে ৫ মিনিট যোগ করা থাকে) তেমনি চাঁদের ক্যালেন্ডার থেকে চন্দ্রাস্তও জানতে পারি। সূর্যাস্ত ও চন্দ্রাস্তের ব্যবধান বা পার্থক্যকে ইংরেজীতে Lag Time বলে। যেমন সূর্যাস্ত ৬টায় আর চন্দ্রাস্ত ৭টায় হলে Lag Time হবে ১ ঘন্টা। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)