চাঁদ দেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার পবিত্র রোযা শুরু করা খাছ সুন্নত মুবারক- ২
, ৩০ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৩ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২৩ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حضرت عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ لَيْلَةً فَلاَ تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا الْعِدَّةَ ثَلاَثِينَ.
অর্থ: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মাস ঊনত্রিশ রাত বিশিষ্ট হয়। তাই তোমরা চাঁদ না দেখে পবিত্র রোযা শুরু করবে না। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে চাঁদ দেখা না যায় তাহলে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। (বুখারী শরীফ)
মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে -
عَنْ حضرت أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ غُمِّيَ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا الْعَدَدَ .
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা (পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার) চাঁদ দেখে পবিত্র রোযা পালন শুরু করো এবং (পবিত্র শাওওয়াল শরীফ উনার) চাঁদ দেখে পবিত্র রোযা ভঙ্গ করো (অর্থাৎ পবিত্র ঈদ) পালন করো। আর যদি (নতুন চাঁদ উদয়ের দিন) আকাশ মেঘাছন্ন থাকে তাহলে চাঁদের মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ করো। (মুসলিম শরীফ)
মূলত সব মাসের ক্ষেত্রে একই হুকুম। এক্ষেত্রে একদিন আগ-পিছ হলেই উক্ত আমল মুবারকসমূহ আদায় অশুদ্ধ হয়ে যাবে। পবিত্র আরবী মাস ২৯ কিংবা ৩০ দিনে হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসের ২৯ তারিখ শেষে চাঁদ তালাশ করে তারিখ নির্ধারণ করতে হয়। ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা না গেলে সেই মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হয়ে থাকে। তারপর থেকে পরবর্তী মাস গণনা শুরু করতে হয়।
সুতরাং এ থেকে বুঝা যায় যে, ইবাদতসমূহ ছহীহ-শুদ্ধভাবে আদায় করার জন্য চাঁদ দেখার গুরুত্ব অপরিসীম।
অতএব, প্রত্যেক এলাকা থেকে কিছু লোককে অবশ্যই চাঁদ তালাশ করতে হবে যা ওয়াজিবে কিফায়া। যদি কেউই তালাশ না করে তাহলে সকলেই ওয়াজিবে কিফায়া তরক করার কারণে গুনাহগার হবে।
দীর্ঘ দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে চাঁদ নিয়ে ইহুদী-মুশরিকদের গভীর চক্রান্ত - মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন -
إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই সময়কে (মাসকে) আগ-পিছ করা কুফরীকে বৃদ্ধি করে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তওবা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭)
নাসী বলা হয় চাঁদের মাস সঠিকভাবে গণনা না করে তারিখ আগ-পিছ করাকে। যা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে সুস্পষ্ট কুফরী বলা হয়েছে। শুধু কুফরীই নয়, বরং তা কুফরীকে বৃদ্ধি করে। নাঊযুবিল্লাহ!
কেননা, চাঁদ যে দিন দৃশ্যমান হলো সেদিন থেকে তারিখ গণনা না করে যদি তার পর থেকে বা পূর্ব থেকে গণনা করা হয় তবে ওই মাসের চাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল আমল নির্দিষ্ট সময়ে আদায় না করার কারণে বাতিল বলে গণ্য হবে।
মূলত এ বিষয়টি কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারারা উপলব্ধি করে মুসলমানদের আমলসমূহ নষ্ট করার লক্ষ্যে বর্তমানে বিভিন্ন মুসলিম দেশে মুসলমান নামধারী মুনাফিক শ্রেণীর লোকদের দ্বারা নাসী অর্থাৎ মাসকে আগ-পিছ করে যাচ্ছে। যার বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে সউদী ওহাবী-ইহুদী সরকার। তাদের পূর্বপুরুষ ইহুদী হওয়ার কারণে ইহুদীরা তাদের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশে তারিখ আগ-পিছ করে মুসলমানদের বিশেষ বিশেষ আমল যেমন পবিত্র রোযা, পবিত্র হজ্জ, পবিত্র ঈদ, পবিত্র কুরবানী, পবিত্র শবে বরাত শরীফ, পবিত্র শবে ক্বদর শরীফ ইত্যাদি আমল বিনষ্ট করছে। এমনকি উলামায়ে ছূ’দের মাধ্যমে আমাদের দেশসহ সারা পৃথিবীতে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
তাই সকলকে এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে যেন ইহুদী-নাছারা, মুশরিকরা তাদের এজেন্ট ওহাবী-খারিজী, লা-মাযহাবী, সালাফী, উলামায়ে ছূ’দের মাধ্যমে মুসলমানদের ঈমান-আমল নষ্ট করার সুযোগ না পায়। এক্ষেত্রে সকল মুসলিম উম্মাহকে সঠিকভাবে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীবে চাঁদ দেখে পবিত্র রোযা শুরু করা ও পবিত্র ঈদ পালন করার দিকে মনোযোগী হতে হবে।
আর এই কাজটি সুষ্ঠুভাবে করার জন্য এবং ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্র থেকে মুসলমানদের ঈমান-আমল হিফাযত করার লক্ষ্যে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুইইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-উনার মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি আন্তর্জাতিক চাঁদ দেখা কমিটি- ‘রু’ইয়াতে হিলাল মজলিস’ গঠন করেন। যার মাধ্যমে প্রায় সারাবিশ্বের চাঁদের পরিসংখ্যান প্রতি মাসে বিশ্বের প্রায় সোয়া ৩০০ কোটি মুসলমানের সম্মুখে তুলে ধরা হচ্ছে। সুবহানাল্লাহ!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘আঙুর’
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার বরকতময় রোগমুক্ত শিফা দানকারী সুন্নতী খাদ্য “ভাত”
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (১)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘তালবীনা’
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুন্নতী খাবার পরিচিতি ও উপকারিতা : দুধ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খেজুরের রস খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)