গ্রন্থাগারবিমুখ দেশের মন্ত্রী-এমপিরা। পাঠাভ্যাস না থাকলে এমপিরাও জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করতে পারেনা; মন্ত্রীরাও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।
সাধারণের মধ্যে পাঠাভ্যাস প্রবণতা তৈরী করতে হলে মন্ত্রী-এমপিদেরই দৃষ্টান্ত তৈরী করতে হবে।
, ০৮ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০১ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০১ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১৫ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মন্তব্য কলাম
কিন্তু যাদের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই সমৃদ্ধ লাইব্রেরি তৈরী করা হয়েছে সেই মন্ত্রী-এমপিরাই লাইব্রেরিতে পাও ফেলছে না। গত ২২ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমাগত লাইব্রেরিবিমুখ হয়ে পড়েছে এমপিরা। ৩৫০ জন এমপির ৩২৭ জনই কখনোই সংসদ লাইব্রেরিতে যায়নি। আর মন্ত্রীসভার ৪৭ জন মন্ত্রীর ৪৬ জনই কখনো সংসদ লাইব্রেরিতে যায়নি। তাদের জন্য কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও সর্বশেষ কোন এমপি ব্যবহার করেছে, তাও মনে করতে পারেনা লাইব্রেরির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী। গবেষণার ব্যবস্থা থাকলেও এর ধারে কাছেও দেখা যায় না কোনো মন্ত্রী-এমপিকে।
মন্ত্রী-এমপিদের এমন লাইব্রেরিবিমুখতা অনেকটা বিস্ময়কর ব্যাপার। কারণ স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের অনেক পড়া উচিত, জানা উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের এমন লাইব্রেরি বিমুখতার পেছনে বর্তমান সমাজে বিত্তশালী হওয়ার প্রবণতাই দায়ী। তারা এখন জ্ঞানের চর্চা না করে বিত্তশালী হওয়ার চিন্তায় মগ্ন। এটি একটি রাষ্ট্রের জন্য খুবই ক্ষতিকর দিক।
মন্ত্রী-এমপিরা লাইব্রেরিবিমুখ হওয়ার কারণে সংসদে এখন গঠনমূলক ও বাস্তবিক কোনো আলোচনা-পর্যালোচনা লক্ষ্য করা যায় না। মন্ত্রী-এমপিরা এখন সংসদে এক দল আরেক দলকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে। পর্যাপ্ত গবেষণা, অনুসন্ধান, দলীলাদি দিয়ে পর্যালোচনা কিংবা আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন কিংবা জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো নিয়ে তেমন কোনো কথাই বলা হয় না।
দেশের মন্ত্রীরা তাদের দাপ্তরিক কাঠামোতে বর্তমানে এককভাবে পিএসনির্ভর হয়ে পড়েছে। দপ্তরভিত্তিক ফাইলপত্র, কাগজপত্র ইত্যাদি খুলে পড়ার অভ্যাস একেবারেই চলে যাচ্ছে তাদের। ফলে মন্ত্রীদের দপ্তরগুলো পিএসদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। যে মন্ত্রী দেশের যে বিষয়ে দায়িত্বশীল সে বিষয়ে মন্ত্রীর উদ্যোগে কোনো কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন হচ্ছে না। ফলে দেশের প্রতিটি খাতই গৎবাধা নিয়মনীতি, আইনকানুন এবং পূর্বনির্ধারিত অবকাঠামো নিয়েই পড়ে রয়েছে। যা দেশের উন্নয়নের পথে বড় বাধার সৃষ্টি করছে।
মন্ত্রীদের পড়াশুনা এবং ফাইলপত্র পর্যালোচনার অভ্যাস কমে যাওয়ার কারণে দপ্তরগুলোতে দুর্নীতি জেকে বসেছে। দপ্তরে তাদের গ্রহণযোগ্যতা ও কার্যকারিতা কমে যাচ্ছে। গত ২ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত এক খবরে প্রকাশ হয়েছে যে, সরকারি দপ্তরের পিয়নরাও এমপিদের দাম দেয় না। তাদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ নেই। পড়াশুনা, অনুসন্ধান ও কার্যকর তদারকির অভাবে ক্রমাগত মন্ত্রী এমপি নিজেরাই আমলাতন্ত্রের ফাঁদে আটকা পড়ে যাচ্ছে। সরকারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এতই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে, রাষ্ট্রীয় আইনমতে জনতার যে প্রতিনিধিত্বকারী; নির্বাচিত সেই সংসদ সদস্যের কোনো গুরুত্ব নেই তাদের কাছে। তাদের মন্তব্য হলো, ‘মহোদয় তো কোনো ফাইলই দেখে না’।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদ্বীন সম্মানিত ইসলাম। আর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে ইলম অর্জন তথা পড়াশুনাকে অকল্পনীয় গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। আর পূর্ব অতীতে মুসলমানগণ তো অবশ্যই মুসলমান শাসকগণ অত্যাধিক পরিমাণ ইলম অর্জন করার কারণে তারা সেই ইলমের বাস্তবিক রূপ দিয়েছেন শাসনব্যবস্থায়। ফলে শাসনকাঠামো শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশের মন্ত্রী-এমপি হয়েও তারা ইলম অর্জন তথা পড়াশুনা, অনুসন্ধান এবং গবেষণা থেকে দূরে থাকছে। যা অতিশয় দুঃখজনক ব্যাপার।
বর্তমান ডিজিটালাইজেশনের যুগে ডাটা তথা তথ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তথ্যকে অন্যতম শক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর এই তথ্য তখনই হাছিল হবে যখন এসব বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করা হবে। তাই আমরা মনে করি, দেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তি হয়ে দেশের মন্ত্রী এমপিদের পড়াশুনা, অনুসন্ধান এবং গবেষণার দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। সংসদের সমৃদ্ধ লাইব্রেরির সঠিক ব্যবহার করা প্রয়োজন। লাইব্রেরির দলীল, দস্তাবেজ রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, জনগণের উন্নয়নে সঠিকভাবে কাজে লাগানো প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারী শিক্ষামন্ত্রী বলেছে, ‘একটি বই পেতে কাউকে যেন তার নিজ বাসস্থান থেকে এক মাইলের বেশি যেতে না হয় সেজন্য দেশের প্রতি এক মাইল দূরত্বে একটি করে গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি স্থাপন করা হবে।’ শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলতে হয়, দেশের প্রতিটি জেলায় বহুসংখ্যক লাইব্রেরি রয়েছে। কিন্তু এসব লাইব্রেরিতে পাঠক নেই। জনসাধারণের আগ্রহ নেই। তাই জনসাধারণকে লাইব্রেরিমুখী করতে হলে প্রথমে মন্ত্রী এমপিদেরই এ বিষয়ে দৃষ্টান্ত তৈরী করতে হবে। তাদের লাইব্রেরিমুখী হতে হবে। তবে এ বিষয়ে যে আমলাদের দৃষ্টান্তও উজ্জল নয়। সচিবালয়েও যে গ্রন্থাগারগুলো রয়েছে সেগুলোতেও যে সচিব, যুগ্ন-সচিবদের খুব আনাগোনা বা পাঠচর্চা হয়; তাও নয়। জেলা পর্যায়ে উপসচিব বা ডিসিও যে পাঠাভ্যাস প্রিয় সে নজীরও নেই। অর্থাৎ দেশের দায়িত্বশীলদের মাঝেই মেধাচর্চা বা পাঠাভ্যাস প্রবণতা নেই। কিন্তু তাদের জন্যই এটা বেশি সমীচিন ছিল। তাদের নিজেদের জন্য না হলেও জনস্বার্থেই এটা গুরুত্বপূর্ণ।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)