খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার গুণে গুণান্বিত হচ্ছেন উনার শ্রেষ্ঠতম ও সম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
, ১৫ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অর্থ: “তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ, তিনিই প্রকাশ্য, তিনিই গোপন, তিনিই সবকিছু সম্বন্ধে জ্ঞাত।”
উদ্ধৃত পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ উনার ৩ নং পবিত্র আয়াত শরীফখানা মহান আল্লাহ পাক উনার সুমহান শান মুবারক প্রকাশার্থে নাযিল হয়েছে।
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফখানা উনার হুবহু মিছদাক মহান আল্লাহ পাক উনার শ্রেষ্ঠতম ও মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও। সুবহানাল্লাহ!
যেমন এ প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হয়েছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে আমাকে এ বলে সালাম মুবারক পেশ করলেন-
اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا أَوَّلُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا اٰخِرُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا بَاطِنُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا ظَاهِرُ قَالَ فَأَنْكَرْتُ ذَالِكَ عَلَيْهِ وَقُلْتُ يَا حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَيْفَ تَكُوْنُ هٰذِهِ الصِّفَةِ لِمَخْلُوقٍ مِّثْلِىْ وَهٰذِهٖ صِفَةٌ لَا تَكُوْنُ اِلَّا لِلْخَالِقِ جَلَّ وَعَزَّ قَالَ يَا حَبِيْبَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِعْلَمْ أَنَّ اللهَ تَعَالٰى أَمَرَنِـيْ أَنْ اُسَلِّمَ عَلَيْكَ بِـهٰذَا السَّلَامِ لِأَنَّه اِخْتَصَّكَ بِهٖ دُوْنَ جَمِيْعِ الْـخَلْقِ فَسَمَّاكَ بِالْأَوَّلِ لِأَنَّكَ اَوَّلُ الْأَنْبِيَاءِ أَلْقٰى نُوْرَكَ فِيْ صُلْبِ اَبِيْكَ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ ثُمَّ نَقَلَكَ مِنْ صُلْبٍ إِلٰى صُلْبٍ إِلٰى اَنْ أَخْرَجَه فِيْ اٰخَرِ الزَّمَانِ وَسَـمَّـاكَ الْاٰخِرَ لِأَنَّكَ اٰخِرُ الْأَنْبِيَاءَ فِي الْعَصْرِ وَخَاتَـمُ النَّبِيِّيْنَ إِلٰى اٰخِرِ الدَّهْرِ وَسَمَّاكَ بِالْبَاطِنِ لِأَنَّه قَرَنَ اِسْـمَكَ مَعَ اِسْمِهٖ فِيْ سَاقِ الْعَرْشِ مِنْ قَبْلِ اَنْ يـَخْلُقَ أَبَاكَ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِاَلْفَىْ عَامٍ ثُمَّ اَمَرَنِـىْ بِالصَّلَاةِ عَلَيْكَ فَصَلَّيْتُ يَا حَبِيْبَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْفَ عَامٍ بَعْدَ أَلْفِ عَامٍ حَتّٰـى بَعَثَكَ اللهُ بَشِيْرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا إِلَى اللهِ بِإِذْنِهٖ وَسِرَاجًا مُّنِيْرًا وَسَمَّاكَ بِالظَّاهِرِ لِأَنَّه أَظْهَرَكَ عَلٰى جَمِيْعِ الْأَدْيَانِ وَعَرَّفَ نُبُوَّتَكَ وَفَضْلَكَ وَشَرْفَكَ أَهْلَ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاشْتَقَ لَكَ اِسْـمًا مِّنْ اِسْـمِهٖ وَصِفَاتَه مِنْ صِفَاتِهٖ فَرَبُّكَ مَـحْمُوْدٌ وَأَنْتَ مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْـحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ فَضَّلَنِيْ عَلٰى جَـمِيْعِ خَلْقِهٖ حَتّٰـى فِيْ اِسْمِيْ وَصِفَتِيْ.
অর্থাৎ, আসসালামু আলাইকা ইয়া আউওয়াল, আসসালামু আলাইকা ইয়া আখিরু, আসসালামু আলাইকা ইয়া বাতিনু, আসসালামু আলাইকা ইয়া যাহিরু। এভাবে সালাম মুবারক পেশ করাটা আমার নিকট অপছন্দনীয় মনে হলো, আমি ইরশাদ মুবারক করলাম, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! এ সমস্ত ছিফত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক আমার ক্ষেত্রে কিরূপে প্রযোজ্য হতে পারে? এ সমস্ত ছিফত মুবারক তো যিনি খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য প্রযোজ্য।
তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি এভাবে সালাম মুবারক পেশ করতে আমাকে আদেশ মুবারক করেছেন। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে শুধু আপনাকে এরূপ গুণে বিভূষিত করেছেন।
আপনাকে ‘আউওয়াল’ আখ্যা মুবারক দিয়েছেন এজন্য যে, আপনিই হচ্ছেন সকল নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের আদি বা প্রথম। আপনার নূর মুবারক উনাকে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার মধ্যে দেয়া হয়। অতঃপর একজনের পর একজন ক্রমাগত স্থানান্তরিত করে এই শেষ যামানায় আপনাকে প্রকাশিত করা হয়। আপনাকে ‘আখির’ আখ্যা দেয়ার কারণ হচ্ছে, আপনি যামানার দিক দিয়ে সকল নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের শেষ এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত আপনিই সর্বশেষ রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আপনাকে ‘বাতিন’ বলা হয়েছে এ কারণে যে, আপনার পূর্বে হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির দুই হাজার বছর পূর্বে আরশে আযীম উনার খুঁটির মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উনার সাথে আপনার নাম মুবারক সংযুক্ত করে রেখেছিলেন। পরে আপনার প্রতি আমাকে ছলাত (দুরূদ) শরীফ পাঠ করার জন্য আদেশ মুবারক করেন। আপনার প্রতি আমি হাজার হাজার বছর ধরে দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলাম যেই পর্যন্ত না মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সুসংবাদ দানকারী, সতর্ককারী মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে উনার দিকে আহ্বানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। আর আপনাকে ‘যাহির’ আখ্যা দিয়েছেন এজন্য যে, তিনি আপনাকে সমস্ত দ্বীন উনাদের উপর প্রভাবান্বিত এবং আপনার নুবুওওয়াত, মর্যাদা ও মহিমাকে সমগ্র আসমান ও যমীনবাসীর নিকট সুবিদিত করেছেন। এবং তিনি উনার নাম মুবারক থেকে আপনার নাম মুবারক বিন্যাস করেছেন এবং উনার মুবারক গুণে গুণান্বিত করেছেন। তাই আপনার সম্মানিত রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন মাহমূদ এবং আপনি হচ্ছেন মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সমস্ত প্রশংসা সেই মহিমাময় মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য যিনি আমাকে সমস্ত সৃষ্টির উপর ওজুদ মুবারক হিসেবে ফযীলত মুবারক দান করেছেন সাথে সাথে আমার নাম মুবারককেও এবং আমাকে মুবারক গুণ-বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে সমস্ত সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (আল মালায ওয়াল ই’তিছাম)
উপরোক্ত বর্ণনা মুবারকের আলোকে প্রতিভাত যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠতম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বীয় গুণে গুণান্বিত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
-শুয়াইব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)