কোন ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, এলাকার খারাপ অর্থবোধক নাম পরিবর্তন করে শরীয়তসম্মত নাম রাখা নিয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশনা
, ২৯ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৮ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِى الدَّرْدَاءِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ
অর্থ: হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ক্বিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের নাম ও পিতার নামানুসারে ডাকা হবে। তাই তোমাদের নামসমূহ উত্তম রেখো। (আবূ দাউদ শরীফ)
কাজেই, ব্যক্তি হোক, বস্তু হোক, স্থান হোক, শরীয়তসম্মত, অর্থবহ ও উত্তম নাম হওয়া আবশ্যক।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা প্রতিভাত যে, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ বা বিরোধী অনেক ব্যক্তি ও স্থানের নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন। যেমন এ প্রসঙ্গে ছহীহ মুসলিম শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ ابْنَةً لِّعُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَانَتْ يُقَالُ لَهَا عَاصِيَةُ فَسَمَّاهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَمِيْلَةَ.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার) এক মেয়ের নাম ‘আছিয়া (অবাধ্য গুনাহগার মহিলা) পরিবর্তন করে জামীলাহ (সুন্দরী) রেখেছেন।
আবূ দাউদ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
وَغَيَّرَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْمَ الْعَاصِ وَعَزِيزٍ وَعَتَلَةَ وَشَيْطَانٍ وَالْحَكَمِ وَغُرَابٍ وَحُبَابٍ وَشِهَابٍ فَسَمَّاهُ هِشَامًا وَسَمَّى حَرْبًا سَلْمًا وَسَمَّى الْمُضْطَجِعَ الْمُنْبَعِثَ وَأَرْضًا تُسَمَّى عَفِرَةَ سَمَّاهَا خَضِرَةَ وَشِعْبَ الضَّلاَلَةِ سَمَّاهُ شِعْبَ الْهُدَى وَبَنُو الزِّنْيَةِ سَمَّاهُمْ بَنِى الرِّشْدَةِ وَسَمَّى بَنِى مُغْوِيَةَ بَنِى رِشْدَةَ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আলআছ, আযীয, আতালা, শয়তান, আল হাকাম, গুরাব, হুবাব নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন এবং শিহাব নাম পরিবর্তন করে হিশাম রেখেছেন। হারব (যুদ্ধ) এর পরিবর্তে সালম্ (শান্তি) মুদ্বত্বাজি’ (অস্থির) এর পরিবর্তে মুনবাইছ (সক্রিয়) আফিরা (মরুভূমি) নামক ভূমিকে খদ্বিরাহ (সবুজ), শা’বুদ্ব দ্বলালাহ (গোমরাহ জনপদ)কে শা’বুল হুদা (হিদায়েতপ্রাপ্ত জনপদ), অবৈধ বংশকে হিদায়েতের বংশ এবং গোমরাহ সন্তানকে হিদায়েতপ্রাপ্ত সন্তান নামে নামকরণ করেছেন।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُغَيِّرُ الاِسْمَ الْقَبِيْحَ.
অর্থ: হযরত উম্মুল মু’মিনীন ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খারাপ নাম পরিবর্তন করে দিতেন। (তিরমিযী শরীফ)
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُمِرْتُ بِقَرْيَةٍ تَأْكُلُ الْقُرَى يَقُولُونَ يَثْرِبَ وَهِىَ الْمَدِينَةُ تَنْفِى النَّاسَ كَمَا يَنْفِى الْكِيْرُ خَبَثَ الْحَدِيْدِ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি এমন এক জনপদে হিজরত মুবারক করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি যে জনপদ অন্য জনপদসমূহকে গ্রাস করবে। লোকেরা উনাকে ইয়াছরিব বলে কিন্তু উনার নাম মুবারক মদীনা শরীফ। মদীনা শরীফ মানুষকে এরূপভাবে বিশুদ্ধ করে যেভাবে হাঁপর লোহার মরিচা দূর করে বিশুদ্ধ করে। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পূর্ব নাম ইয়াছরিব পরিবর্তন করে মদীনা শরীফ রাখেন। শুধু তাই নয়, তিনি ইয়াছরিব নাম বলতে নিষেধও করেন। এবং কেউ ভুলে ইয়াছরিব বললে তার কাফফারা স্বরূপ ১০ বার মদীনা শরীফ বলার জন্য নির্দেশ মুবারক করেন।
অতএব, কাফির মুশরিকদের নামে কোন স্থানের নামকরণ করা হলে কিংবা সুন্দর অথবা অর্থবহ নয় এরূপ কোন স্থানের নাম হয়ে থাকলে তা পরিবর্তন করে সুন্দর, অর্থবহ ও শরীয়তসম্মত নাম রাখাই হচ্ছে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের নির্দেশ বা হুকুম তথা ফরয।
-মুহম্মদ সা’দ
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিক্বাহ বা ফতওয়ার সকল কিতাবেই গান-বাজনা, বাদ্য-যন্ত্র ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দেয়া হয়েছে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪২)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে সমস্ত উলামায়ে সূ’ ও তাদের শাগরেদ নামধারী মুসলমানরা মুশরিকদের মন্দির ও পূজায় পাহারা দিয়েছে তাদের ব্যাপারে শরঈ ফায়ছালা (৩)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রত্যেক মুসলমান পুরুষের জন্য দাড়ি রাখা ফরয
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যে সমস্ত উলামায়ে সূ’ ও তাদের শাগরেদ নামধারী মুসলমানরা মুশরিকদের মন্দির ও পূজায় পাহারা দিয়েছে তাদের ব্যাপারে শরঈ ফায়ছালা (২)
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)