স্থাপত্য-নিদর্শন
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০২)
, ২১ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৭ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন
মসজিদের ইতিহাস:
ফাতেমীয় যুগে মসজিদটি ছিলো মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মিত আচ্ছাদিত উঠোন। মসজিদের বাম থেকে ডানে, আল-গাওরি মিনার ও কাইতবাই মিনার। গম্বুজের পেছনে আকবাগাউয়িয়া মিনারের শীর্ষভাগ। পেছনের মিনার কাতখুদা নির্মাণ করেছিলেন।
ফাতেমীয় শাসক আল-মুইজ লিদিনাল্লাহ তার সেনাপতি জওহর আল-সিকিলির মাধ্যমে মিশর বিজয় করেছিলেন। জওহর নতুন শহরের জন্য মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন। ৯৭০ খৃ: এর ৪ এপ্রিল এর নির্মাণ শুরু হয়। ৯৭২ খৃ: এর নির্মাণ সমাপ্ত হয়। সে বছরের ২২ জুন পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে এখানে প্রথম জুমুয়ার নামাজ আদায় করা হয়।
আল-আজহার শীঘ্রই মুসলিম বিশ্বের একটি প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র হয়ে উঠে। সরকারি ঘোষণা ও অধিবেশন এখানেই জারি ও অনুষ্ঠিত হত। ফাতেমীয় শাসনের সময় জনসাধারণের শিক্ষার জন্য ব্যবস্থা করা হয়। কাজি আল-নুমানকে কাজি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় এবং তাকে শিক্ষাদানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। শাসকর প্রাসাদ ও আল-আজহার উভয় স্থানে পাঠদান করা হত এবং নারীদের জন্য পৃথক পাঠদানের ব্যবস্থা থাকত। ৯৭৩ খৃ: এর ঈদুল ফিতরের সময় শাসক কর্তৃক আল-আজহারকে কায়রোর সরকারি জুমুয়া মসজিদ ঘোষণা করা হয়। আল-মুইজ ও তার পুত্র শাসক হওয়ার পর রমাদ্বান শরীফের সময় আল-আজহারে অন্তত একবার জুমার খুতবা প্রদান করতেন।
পলিমেথ ও আইনবিদ ইয়াকুব ইবনে কিলিস ছিলেন ফাতেমীয়দের প্রথম দাপ্তরিক উজির। তিনি ৯৮৮ খৃ: আল-আজহারকে ইসলামি আইনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন। পরের বছর শিক্ষাদানের জন্য ৪৫ জন আলেমকে নিয়োগ দানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
শাসক আল-আজিজ বিল্লাহর (শাসনকাল ৯৭৫-৯৯৬) শাসনামলে মসজিদ সম্প্রসারিত হয়। আল-মুফাদ্দালের মতে শাসক মসজিদের কিছু অংশ সংস্কার এবং ছাদের উচ্চতা এক কিউবিট বৃদ্ধি করেছিলেন। পরবর্তী ফাতেমীয় শাসক আল-হাকিম বি-আমিরিল্লাহ মসজিদ সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখেন। তিনি ১০১০ খৃ: মসজিদে একটি নতুন কাঠের দরজা স্থাপন করেছিলেন। আল-হাকিমের সময় আল-হাকিম মসজিদ নির্মিত হওয়ার ফলে আল-আজহার কায়রোর মূল মসজিদ হিসেবে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। ১০০৯ খৃ: এর মে মাসে আল-হাকিম মসজিদ শাসকেরা খুতবার মূল স্থান হয়ে উঠে। এর পূর্বে শাসক খুতবার স্থান পরিবর্তন করতেন। পরবর্তীতে আল-মুসতানসির বিল্লাহ পুনরায় আল-আজহারকে পূর্বের মত ব্যবহার শুরু করেন। পরবর্তী ফাতেমীয় শাসকদের যুগে মসজিদের সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হয়েছে।
শুরুতে এখানে কোনো গ্রন্থাগার ছিল না। ১০০৫ খৃ: শাসক কয়েকশত পা-ুলিপি সংবলিত একটি গ্রন্থাগার গড়ে তোলেন। ফাতেমীয় খিলাফতের পতনের পর গোলযোগে পা-ুলিপির অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এরপরে আল-আজহার একটি সুন্নি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত হয়।
সম্পাদনায়: মুহম্মদ নাঈম
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৭)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাজীগঞ্জ দুর্গ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৬)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুনামগঞ্জে কালের সাক্ষী শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পাগলা বড় মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৩)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৪০০ বছরের আলোচিত প্রাচীন স্থাপত্য তেবাড়িয়া জামে মসজিদ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (২)
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)