ওয়াজ শরীফ উলামায়ে ‘সূ’দের হাক্বীক্বত
, ০৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
عَنْ حضرت زِيَادِ بْنِ حُدَيْرٍ رحمة الله عليه قَالَ: قَالَ لِىْ عُمَرُ بن الخطاب : هَلْ تَعْرِفُ مَا يَهْدِمُ الْإِسْلَامَ؟ قَالَ: قُلْتُ: لَا، قَالَ: يَهْدِمُه زَلَّةُ الْعَالِمِ وَجِدَالُ الْمُنَافِقِ بِالْكِتَابِ وَحُكْمُ الْأَئِمَّةِ الْمُضِلّيْنَ
হযরত যিয়াদ বিন হুদাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত উমর বিন খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে জিজ্ঞাস করলেন
هَلْ تَعْرِفُ مَا يَهْدِمُ الْإِسْلَامَ
দ্বীন ইসলাম উনাকে কোন বিষয়, কারা, ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে সেটা কি আপনি জানেন?
قَالَ: قُلْتُ: لَا،
তিনি বললেন, আমারতো সেটা জানা নেই। তখন স্বয়ং খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, কি বললেন?
يَهْدِمُه
দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষতি করবে, মুসলমান উনাদের ক্ষতি করবে তিন শ্রেণীর লোক।
প্রথম হচ্ছে-
زَلَّةُ الْعَالِمِ
আলিমদের পদস্খলন অর্থাৎ উলামায়ে ‘সূ’। প্রথম হচ্ছে উলামায়ে ‘সূ’ তারা মানুষকে গোমরাহ করবে, তারা ভুল ফতওয়া দিবে। দুনিয়া হাছিল করার জন্য তারা মনগড়া ফতওয়া দিবে।
দুই নম্বর হচ্ছে-
وَجِدَالُ الْمُنَافِقِ بِالْكِتَابِ
মুনাফিকদের মুনাফিকি। তারা কিতাব নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করবে, বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে। উলামায়ে ‘সূ’দের মিথ্যা ফতওয়া নিয়ে, ভুল ফতওয়া নিয়ে মুনাফিকরা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।
তিন নম্বর হচ্ছে-
وَحُكْمُ الْأَئِمَّةِ الْمُضَلّينَ
বিভ্রান্ত শাসক, আমীর- উমারা, রাজা-বাদশা এদের গোমরাহিমূলক আদেশ-নির্দেশ মানুষকে বিভ্রান্ত করে দিবে। যেমন এখন করে যাচ্ছে।
ছবি না তুললে এরা একবার বলেই ফেললো যে, শাস্তি দেয়া হবে। নাউযুবিল্লাহ! কত বড় সে যালিম, বেয়াদব, তারতো স্পর্ধা কম নয়। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিষেধ করলেন ছবি তোলা আঁকা রাখা হারাম আর সে নাকি বলে ছবির বিরুদ্ধে ফতওয়া দিলে সে শাস্তি দিবে। নাউযুবিল্লাহ! তাকে চরম শাস্তি দেয়া উচিত ছিলো। সে তার কথা প্রত্যাহার করেছে। এরপরও তারা বলেছে মসজিদে মসজিদে ছবি তোলার জন্য মানুষদেরকে উৎসাহিত করবে। নাউযুবিল্লাহ! আমরা সেটা বলেছি, এই কথা যদি সে বলেই থাকে সত্যি এর উপর ইস্তিক্বামত থাকে তাহলে সেটাও তার কুফরী হয়েছে সে বিভ্রান্ত হয়েছে, সে গোমরাহ হয়েছে সে মুরতাদ হয়ে গেছে। কারণ মসজিদ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। এখানে কেউ যদি সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ কথা বলে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ মসজিদে দুনিয়াবী কথা বললেই চল্লিশ বছরের নেকী নষ্ট হয়ে যায়, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি এদের সম্পর্কেই ইরশাদ মুবারক করেছেন-
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن مَّنَعَ مَسَاجِدَ اللّـهِ أَن يُذْكَرَ فِيهَا اسْمُه وَسَعى فِى خَرَابِهَا
ঐ ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম কে রয়েছে? যে মহান আল্লাহ পাক উনার ঘরে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির করতে, মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দিয়ে থাকে। মহান আল্লাহ পাক উনার ঘরগুলিকে মসজিদগুলিকে সে বিরান করতে চায়? সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ কথা বলতে চায়। সেখানে হারাম কাজ করাতে সে বাধ্য করায়। তার চেয়ে বড় যালিম কে রয়েছে? সে সবচেয়ে বড় যালিম। শুধু সে যালিম নয় সে কঠিন যালিম হবে, গোমরাহ হবে, মুরতাদ হবে এবং সে কাফিরও হবে।
কাজেই, এই বিষয়গুলি থেকে খুব সাবধান থাকতে হবে। কেউ বললেই সেটা করতে হবে তা নয়। মুসলমান উনাদেরকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ। এই চারটা হচ্ছে মুসলমান উনাদের দলীল। এর মধ্যে তাকে থাকতে হবে। এখন অনেক লোক মালানা, মুফতী নাম দিয়ে উলামায়ে ‘সূ’ তারা ছবি তুলে থাকে এরা মসজিদের ভিতরে ভিডিও করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এরা বেপর্দা হয়ে থাকে, বেগানা মেয়ে লোকের সাথে চলে থাকে, দ্বীন ইসলাম উনার নামে তন্ত্র-মন্ত্র করে, মূর্তি বানিয়ে থাকে, পুড়িয়ে থাকে। অনেক হারাম কাজ করে। এখন এই সমস্ত উলামায়ে ‘সূ’দের হারাম কাজ করার কারণে এটাতো ইসলামী শরীয়ত উনার মধ্যে জায়িয হয়ে যাবে না। এটাকে কেউ জায়িয বললে সে কাফির হয়ে যাবে। কারণ উলামায়ে ‘সূ’ এরা সবসময় থাকবে। বণী ইসরাইলে যেমন উলামায়ে ‘সূ’ ছিলো আকৃতি-বিকৃতি হয়েছে। আবুল হারিছা, বালয়াম বিন বাউরা এই ধরনের যারা, তারা বিভ্রান্ত হয়েছে, ইবলীসও বিভ্রান্ত হয়েছে। ঠিক উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যেও উলাময়ে ‘সূ’ যুগে যুগে থাকবে। হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যামানায় আবুল ফজল, ফৈজি, মোল্লা মুবারক নাগোরী বিশ্বখ্যাত মালানা ছিলো। তারা গোমরাহ হয়েছে। উলামায়ে ‘সূ’ তারা ছিলো। প্রতি যুগে উলামায়ে ‘সূ’ ছিল এবং এখনও উলামায়ে ‘সূ’ রয়েছে। সারা পৃথিবীতে রয়েছে ক্বিয়ামত পর্যন্ত উলামায়ে ‘সূ’ থাকবে। যারা ইহুদী-নাছারা, বেদ্বীন-বদদ্বীন, মুশরিক কাফিরদেরকে ইসলাম উনার বিরুদ্ধে ইন্ধন যোগাবে, ওয়াসওয়াসা দিবে, মুসলমান উনাদেরকে কষ্ট দেয়ার চেষ্টা করবে। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, উলামায়ে সূরা কোন একটা কাজ করলেই সেটা জায়িয হয়ে যাবে না। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনার মধ্যে কি রয়েছে সেটা দেখতে হবে। আর এই উলামায়ে ‘সূ’গুলি দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে তারা হালাল হারাম সব ভুলে গেছে। হারাম হালাল একাকার করে ফেলেছে। এদের সম্পর্কে অনেককে আমি বলেছি এটা সবসময় মনে রাখবে, এই ধরনের উলামায়ে ‘সূ’ যারা রয়েছে, যারা দ্বীন ইসলাম উনার নামে হারাম কাজ করে থাকে এদের মৃত্যুর পর আপনারা এদের চেহারা দেখবেন, এদের কিন্তু আকৃতি-বিকৃতি হয়ে যাবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)