ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৮)
[পবিত্র হাদীছ শরীফ জাল বানানো নিয়ে ওহাবী, সালাফী, দেওবন্দীদের হাক্বীকত ফাঁস]
, ০১ লা শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৪ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ১৮ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ওহাবী সালাফীরা কি জানে বুখারী শরীফেও দ্বয়ীফ সনদের বর্ণনা আছে
(পূর্ব প্রকাশিতের)
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রচিত “তাগলীকুত তালীক ‘আলা ছহীহ বুখারী” দেখা যেতে পারে। সুতরাং বুখারী শরীফ হলেই এক ঢোক পানি বেশি খাওয়ার সুযোগ নেই।
দ্বয়ীফ হলেই কি হাদীছ শরীফ গ্রহণ করা হবে না? যারা এমন কথা বলে তাদের জেনে রাখা দরকার, ইমাম হযরত বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত কিতাব “আদাবুল মুফাররাদ” কিতাবে এমন অনেক হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন যার সনদ দ্বয়ীফ। বিখ্যাত হাদীছ শরীফ বিশারদ হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “তাকরীবুত তাহযীব” কিতাবে প্রায় ৫২ জন রাবীকে দুর্বল সাব্যস্ত করেছেন যারা সকলেই “আদাবুল মুফাররাদ” কিতাবের রাবী। ইমাম হযরত বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যদি দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ নাই মানতেন বা গ্রহণ করতেন তাহলে কি “আদাবুল মুফাররাদ” কিতাবে ওই সকল রাবীদের রেওয়ায়েত গ্রহণ করতেন?
এছাড়া মূল বুখারী শরীফ উনার মধ্যেই একধিক হাদীছ শরীফ আছে যার রাবী সম্পর্কে দ্বয়ীফ বলা হয়েছে। যেমন, মুহম্মদ বিন আব্দুর রহমান তুফাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনাকে হাফিজ আবু যুরআ রহমতুল্লাহি আলাইহি মুনকারুল হাদীছ বলেছেন। (ফতহুল বারী ৬১৫ পৃষ্ঠা)
আরেকজন রাবী হচ্ছেন “হযরত উবাই বিন আব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি”। তিনি ছহীহ বুখারী শরীফ উনার রাবী। উনার উপস্থিতি সহ বুখারী শরীফ উনার ‘কিতাবুজ জিহাদ’ অধ্যায়ের ২৮৫৫ নং হাদীছ শরীফ উনার সনদ হচ্ছে,
حدثنا علي بن عبد الله بن جعفر حدثنا معن بن عيسى حدثنا ابـي بن عباس ابن سهل عن ابيه عن جده قال
উক্ত রাবী ‘হযরত উবাই বিন আব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি’ সম্পর্কে হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি দ্বয়ীফ। হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি মুনকারুল হাদীছ। ইমাম হযরত নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি শক্তিশালী নন। (মিযানুল ইতিদাল ১ম খ- ৭৮ পৃষ্ঠা)
আরেকজন রাবী হচ্ছেন, হযরত মুহম্মদ বিন তালহা মুসাররিফ কুফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। বুখারী শরীফ উনার ২৮৯৬ নং হাদীছ শরীফ উনার সনদ-
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا مُـحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ عَنْ طَلْحَةَ عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ سَعْدٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
হযরত মুহম্মদ বিন তালহা মুসাররিফ কুফী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম হযরত সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম হযরত নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা দ্বয়ীফ বলেছেন। (মিযানুল ইতিদাল)
আবার এমন অনেক হাদীছ শরীফ রয়েছে, যেগুলো ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা ছহীহ বলে গ্রহণ করেন, কিন্তু ছিহাহ সিত্তার অন্যান্য ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সেগুলো ছহীহ নয় বলে পরিত্যাগ করেন। (সায়িকাতুল মুসলিমীন)
আর তাই বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইমাম সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি “আলফিয়া” কিতাবের হাশিয়ায় উল্লেখ করেনে যে, “ছহীহ বুখারী শরীফ উনার ৮০ জন ও ছহীহ মুসলিম শরীফ উনার ১৬০ জন রাবীর বর্ণনাকৃত হাদীছ শরীফ দ্বয়ীফ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ” (নুয্হাতুন্ নাযার ফী তাওযীহি নুখবাতিল ফিকর ১০৭ পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “হযরত ইমাম দারে কুতনী, আবূ আলী ও আবূ দাউদ দামেস্কী রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ছহীহ বুখারী ও মুসলিম উনাদের ২০০ হাদীছ শরীফকে দ্বয়ীফ বলে উল্লেখ করেন। ” (মুকাদ্দিমায়ে শরহে মুসলিম ১/২৭, ফতহুল বারী ১/৩৪৬)
হযরত ইমাম কুস্তলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ছহীহ বুখারী শরীফ উনার মধ্যে তো এরূপ হাদীছ শরীফও রয়েছে, যা কারো মতে ছহীহ, আর কারো মতে দ্বয়ীফ। (শরহে বুখারী)
কাশফুয যুনুন, মুকাদ্দিমায়ে ফতহুল বারী ইত্যাদি কিতাবে ছহীহ বুখারী শরীফ উনার কিছু কিছু হাদীছ শরীফকে দ্বয়ীফ বলে প্রমাণ করা হয়েছে।
এবার উছুলে হাদীছ শরীফ উনার সম্পর্কে কিছু তথ্য সবার জানা থাকা জরুরী। যেগুলো জানা থাকলে ওহাবী সালাফীরা সহজেই ধোঁকা দিতে পারবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
এই উপমহাদেশে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের ঈমান-আমলের ক্ষতিসাধনে দেওবন্দীদের কার্যক্রম এবং তাদের ভ্রান্ত ফতওয়া (১)
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
গণতন্ত্রে পাঁচ বৎসরের জন্য ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ইসলামী শব্দ ব্যবহারকারীরা সত্যিকারে ইসলামী আইন জারী করলে পাঁচ বৎসর পর ক্ষমতায় আসা অসম্ভব। সুতরাং গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে কুরআন শরীফের আইন বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলা একটা চরম মিথ্যা, ধোঁকা ও প্রতারণা (পর্ব ৩)
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (১০)
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৯)
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মানুষ মূর্খতার কারণে এমন কিছু চেয়ে বসে যেটা সে পরবর্তীতে বরদাশত করতে পারে না
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক অবমাননাকারীদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৮)
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১৩)
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)