ওলী আউলিয়াগণের নামে কুৎসা রটনার পেছনে কে? (১)
, ২১ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আপনাদের মতামত
সমাজে কারা ওলী আউলিয়া সম্পর্কে খারাপ চেতনা তৈরী করেছে, এ বিষয়টি একটু অনুসন্ধান করলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে। যেমন, পীর সাহেব সম্পর্কে উদ্ভট চিন্তাধারার প্রচারকারী ‘লালসালু’ উপন্যাস। যার রচয়িতা ওয়ালীউল্লাহ নামক ব্রিটিশ মদদপুষ্ট এক লেখক। তার বাবা ছিলো ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, মামা ছিলো ব্রিটিশদের থেকে খান বাহাদুর উপাধিপ্রাপ্ত। সে নিজেও ছিলো ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত এবং তার সাহিত্যের মাধ্যমে সেই বিলেতি সংস্কৃতির প্রচার হয়েছে। সে মারাও গেছে ইউরোপে।
প্রশ্ন হচ্ছে, ব্রিটিশদের আর্শিবাদপ্রাপ্ত এ লোকগুলো কেন ওলী আউলিয়া, পীর সাহেবদের বিরোধীতা করতো?
আসলে শত শত বছর আগে এ অঞ্চলে ব্রিটিশরা অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করে, তখন তারা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলো ওলীআল্লাহ বা সূফী ধরণের ব্যক্তিদের দ্বারা। উনারা জিহাদ করে ব্রিটিশদের আটকানোর চেষ্টা করেন। যেমন- আমরা পাঠ্যবইয়েই পড়েছি, ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে এসে প্রথম যে বাধার সম্মুখীন হয়, তার নাম ছিলো ফকির-সন্নাসী বিদ্রোহ। আমাদের নতুন প্রজন্ম ফকির বলতে বুঝে দরিদ্র মানুষকে। কিন্তু ফকির আসলে আরবী শব্দ। দুনিয়াবিরাগী সুফী পীর সাহেব ওলীআল্লাহ উনাদের একটি উপাধি হলো ফকির। ফকির-সন্নাসী বিদ্রোহ নামক যে ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধের কথা আমরা শুনি, তার নেতৃত্ব ছিলেন পীর মজনু শাহ, যিনি মাদারিয়া নামক একটি তরিকার সূফী ছিলেন। ১৭৭০ সাল থেকে প্রায় ২৬ বছর তিনি প্রায় ৫০ হাজার সূফীকে নিয়ে ব্রিটিশবিরোধী জিহাদের নেতৃত্ব দেন। উনার জিহাদের কারণে ব্রিটিশদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
তবে ‘ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হবে’ এ চেতনার মূল সূচনা করেছেন সূফী পীর সাহেব হযরত শাহ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ব্রিটিশ শাসিত হিন্দুস্তানকে ‘দারুল হারব’ ঘোষণা করে ফতওয়া দেন। উনার ফতওয়ার কারণে ‘ব্রিটিশবিরোধী’, এই চেতনা ব্যাপকভাবে প্রচার লাভ করে। পরবর্তীতে উনারই মুরিদ ও প্রধান খলিফা সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী রহমতুল্লাহি এ অঞ্চলে ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধের মূল নেতৃত্ব দেন। তিনি নিজেও পীর সাহেব, ওলীআল্লাহ সূফী ছিলেন। তিনি উনার মুরিদেরকে নিয়ে ব্রিটিশ ও তাদের অনুচর শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং শহীদ হন। এ অঞ্চলে পরবর্তীকালে যত ব্রিটিশবিরোধী জিহাদের ঘটনা ঘটে, সবগুলো ছিলো উনার তরীক্বার বা পরবর্তী মুরিদদের থেকে। ইতিহাসের পাতায় ব্রিটিশ বিরোধী তীতুমীরের বাঁশেরকেল্লার যে কথা শোনা যায়, সেই তীতুমীর (মূল নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী তিতুমীর রহমতুল্লাহি) ছিলেন সৈয়দ আহমেদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহির মুরিদ।
-মুহম্মদ গোলাম সামদানী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বর্তমান সময়ে এসে মুসলমানদের শোচনীয় অবস্থার মূল কারণ
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিজাতীয়দের দেশগুলোর ‘সন্ত্রাসীপনার’ একটি পরিসংখ্যান
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খিলাফত মানে কী?
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নারিকেল দ্বীপে পর্যটকদের ভ্রমনে বাধা; নেপথ্যে রয়েছে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নারিকেল দ্বীপকে যেভাবে করা হয়েছিলো সেন্টমার্টিন
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৬)
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দূষণের অজুহাতে নারিকেল দ্বীপে যাওয়া নিষিদ্ধ করতে হলে, সবার আগে রাজধানী ঢাকায় মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৫)
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৪)
২৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (৩)
২৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (৯)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)