ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ (পর্ব-২০)
, ০২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আইন ও জিহাদ
(সম্মানিত বদর জিহাদ মূলত: খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্ পাক উনার খাছ গায়েবী মদদের ঘটনা। যারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ অনুযায়ী চলেন, খ¦লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্ পাক উনার উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুুল করেন, উনারাই গায়েবী মদদের অধিকারী হন। আর যারা সন্ত্রাসী হামলা চালায় ও সন্ত্রাসবাদ লালন করে তারা মুরতাদ ও জাহান্নামী। সন্ত্রাসীদের উপর খ¦লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্ পাক উনার লা’নত। সন্ত্রাসী আর মুজাহিদ কখনও এক নয়। সন্ত্রাসী হামলা আর জিহাদ কখনও এক নয়।)
পূর্ব প্রকাশিতের পর
সাইয়্যিদুনা হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি কি শহীদ নই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, অবশ্যই আপনি শহীদ। অতঃপর হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বদর জিহাদ শেষে পবিত্র মদীনা শরীফে প্রত্যাবর্তনের সময় সুফরা নামক স্থানে শাহাদাত মুবারক বরণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৮০ বছর।
এ প্রসঙ্গে অন্য এক হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَلِيٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ تَقَدَّمَ عُتْبَةُ بْنُ رَبِيعَةَ وَتَبِعَهُ ابْنُهُ وَأَخُوهُ فَنَادَى مَنْ يُبَارِزُ فَانْتَدَبَ لَهُ شَبَابٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ مَنْ أَنْتُمْ فَأَخْبَرُوهُ فَقَالَ لاَحَاجَةَ لَنَا فِيكُمْ إِنَّمَا أَرَدْنَا بَنِي عَمِّنَا. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " قُمْ يَا حَضْرَتْ حَمْزَةُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، قُمْ يَا حَضْرَتْ عَلِيٌّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، قُمْ يَاحَضْرَتْ عُبَيْدَةُ بْنُ الْحَارِثِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ " فَأَقْبَلَ حَمْزَةُ إِلَى عُتْبَةَ وَأَقْبَلْتُ إِلَى الْوَلِيدِ وَاخْتُلِفَ بَيْنَ عُبَيْدَةَ وَشَيْبَةَ ضَرْبَتَانِ فَأَثْخَنَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ ثُمَّ مِلْنَا عَلَى شَيْبَة فَقَتَلْنَاهُ وَاحْتَمَلْنَا عُبَيْدَةَ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বর্ণনা করেন; ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ উনার দিন যখন উভয় কাফিলা মুখোমুখি হলেন, তখন কুরাইশ কাফির মুশরিকদের পক্ষ থেকে এগিয়ে এলো তিনজন উত্বা ইবনে রবীয়া’, উত্বার ছেলে ওলীদ এবং উত্বার ভাই শায়বা ইবনে রবীয়া’।
অতঃপর উতবা ইবনে রবীয়া’ সে ঘোষণা করলো কে আমাদের মুকাবিলা করবে? এমন সময় তাদেরকে মুকাবিলা করার জন্য কয়েকজন নওজোয়ান আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এগিয়ে গেলেন। তখন সে জিজ্ঞাসা করলো আপনারা কারা? নওজোয়ান আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উনাদের পরিচয় ব্যক্ত করলেন। তখন উতবা বললো, আপনাদের সাথে মুকাবিলা করা আমাদের কোন প্রয়োজন নেই। আপনারা তো আমাদের সমকক্ষ নন। আমরা তো আমাদের চাচার পুত্রদের চাই। আমাদের সমকক্ষ কুরাইশদের চাই। একথা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “হে হযরত হামযা আলাইহিস সালাম!, হে হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! হে হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনারা যান।
অতঃপর হযরত হামযা আলাইহিস সালাম তিনি উত্বাকে তরবারী দিয়ে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ্্! অতঃপর হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ওলীদকে তরবারী দিয়ে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ্!
অতঃপর হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শায়বার দিকে এগিয়ে গেলেন। আর উনার এবং শায়বার মধ্যে আক্রমণ চলল। ফলে উনারা উভয়েই একে অপরকে মারাত্মকভাবে আহত করলেন। হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজ্হাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এই অবস্থা দেখে আমি এবং হযরত হামযা আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ আমরা দুজনেই শায়বার উপর তৎক্ষণাত আক্রমণ করলাম। (এবং তরবারী দিয়ে তাকে হত্যা করে ফেললাম। সুবহানাল্লাহ্্!)।
অতঃপর হযরত ইমামুল আউওয়াল র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম এবং হযরত হামযা আলাইহিস সালাম উনারা দুজনেই হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে কোলে করে উঠিয়ে নিয়ে আসলেন (তাফসীর মাযহারী, মিশকাত শরীফ)
কুরাইশ কাফির মুশরিকরা তাদের চোখের সামনে তাদের তিন নেতা উতবা, ওলীদ এবং শায়বার শোচনীয় মৃত্যুতে পরাজয় দেখে একযোগে মুসলিম বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও একযোগে কাফিরদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য নির্দেশ মুবারক দিলেন। নির্দেশ মুবারক পাওয়া মাত্র মুজাহিদ কাফিলা উনারাও একযোগে কুরাইশদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন। সুবহানাল্লাহ্্!
-আল্লামা মুহম্মদ জাহাঙ্গীর হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)