ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ (পর্ব-১৯)
, ২৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৬ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) আইন ও জিহাদ
পূর্ব প্রকাশিতের পর
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
كَمَثَلِ الشَّيْطَانِ إِذْ قَالَ لِلْإِنسَانِ اكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّي بَرِيءٌ مِّنكَ إِنِّي أَخَافُ اللَّـهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ
অর্থ: “তারা ইবলীস শয়তানের মতো, যে মানুষকে বলে তোমরা কুফরী করো। এরপর যখন তারা কুফরী করে, তখন ইবলীস শয়তান বলে, তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। নিশ্চয়ই আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করি, যিনি সমস্ত জগতের মহান রব বা প্রতিপালক। (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ১৬)
উক্ত আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এখানে “মানুষকে বলে” অর্থ আবূ জেহেলকে বলে। ইবলীস শয়তান বদর জিহাদের ময়দানে মানুষের ছূরত ধারণ করে আবূ জেহেলকে বলেছিলো, “তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। নিশ্চয়ই আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করি, যিনি সমস্ত জগতের মহান রব বা প্রতিপালক।”
হযরত তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ্্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বর্ণনা করেন, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র আরাফার দিনে (পবিত্র হজ্জের দিনে) মহান আল্লাহ পাক উনার সীমাহীন রহমত মুবারক নাযিল হতে দেখে এবং অসংখ্য মানুষকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হতে দেখে ইবলীস শয়তান নিজেকে খুবই অপমানিত ও লাঞ্ছিতবোধ করে। ইবলীস শয়তান এ রকম লাঞ্ছনা এবং অপমানবোধ করেছিলো ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ উনার মুবারক দিনে।
অতএব ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ উনার ময়দান থেকে সর্বপ্রথম পলায়নকারী হলো ইবলীস শয়তান।
জিহাদ উনার প্রাথমিক অবস্থা এবং মল্ল যুদ্ধ
ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ উনার ময়দানে সর্বপ্রথম সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম উনার হাতে কুরাইশ বাহিনীর আসওয়াদ ইবনে আব্দুল আসাদ মাখযূমী নিহত হয়। যার ঘটনাটি ১৪তম পর্বে বর্ণিত হয়েছে।
এরপর কুরাইশ কাফির মুশরিকদের পক্ষ থেকে এগিয়ে এলো ৩জন কাপুরুষ উতবা ইবনে রবীয়া’, উতবার ছেলে ওলীদ এবং উতবার ভাই শায়বা ইবনে রবীয়া’ তাদেরকে মোকাবিলা করার জন্য মুজাহিদ বাহিনী উনাদের থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, সাইয়্যিদুনা হযরত মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ বিন রাওহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা ৩ জন হযরত আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এগিয়ে গেলেন। উনাদেরকে সামনে দেখে উতবা বললো, আপনারা কারা? হযরত আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যখন পরিচয় মুবারক দিলেন যে, আমরা হযরত আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম। তখন উতবা বললো, আপনাদের সাথে মোকাবিলা করা আমাদের কোন প্রয়োজন নেই। আপনারা তো আমাদের সমকক্ষ নন। আমরা তো আমাদের চাচার পুত্রদের চাই। আমাদের সমকক্ষ কুরাইশদের চাই। একথা শুনার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “হে হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা হামযা আলাইহিস সালাম! হে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! হে সাইয়্যিদুনা হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনারা এগিয়ে যান।
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা আলাইহিস সালাম তিনি উতবার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তরবারী দিয়ে এক কোপ দিয়ে তার নাপাক শরীরটাকে দুই টুকরা করে তার গর্দানটা মাটিতে ফেলে দিলেন, তাকে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ্্!
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ওলীদের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তরবারী দিয়ে এক কোপ দিয়ে শরীরটাকে দুই টুকরা করে তার গর্দানটা মাটিতে ফেলে দিলেন, তাকে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ্্!
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শায়বার দিকে এগিয়ে গেলেন। উনার এবং শায়বার মধ্যে উভয়পক্ষ থেকে আক্রমণ চলল। ফলে উভয়েই একে অপরকে মারাত্মকভাবে আহত করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এই অবস্থা দেখে আমি এবং সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ আমরা দুজনেই শায়বার উপর তৎক্ষনাত আক্রমণ করলাম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম উনারা দুজনেই শায়বার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তরবারী দিয়ে এক কোপ দিয়ে শরীরটাকে দুই টুকরা করে তার গর্দানটা মাটিতে ফেলে দিলেন, তাকে হত্যা করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ্্!
অতঃপর উনারা দুজনেই হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে কোলে করে উঠিয়ে নিয়ে আসলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুদ্ দারাজাত মুবারকে (পা মুবারক)। সুবহানাল্লাহ্
উল্লেখ্য, হযরত উবাইদাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পা মুবারক কেটে যখম হয়েছিলেন।
-আল্লামা মুহম্মদ জাহাঙ্গীর হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)