ঐতিহাসিক সম্মানিত খন্দকের জিহাদ (৪১)
, ১০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২৯ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আইন ও জিহাদ
ঐতিহাসিক সম্মানিত খন্দকের জিহাদ সম্পর্কে নাযিলকৃত মহাসম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ৯ থেকে ২৭ পর্যন্ত উনাদের সংক্ষিপ্ত তাফসীর
হযরত কাজী ছানাউল্লাহ পানিপথী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, বনী কুরায়জার পরিকল্পনা ছিলো, তারা রাতের অন্ধকারে দুর্গের উপর হামলা চালাবে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে আগেভাগেই জানতেন। তাই তিনি হযরত সালমা ইবনে আসলাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নেতৃত্বে দুইশত সৈন্য পাঠালেন অরক্ষিত দুর্গগুলোর নিরাপত্তার্থে।
এক বর্ণনায় এসেছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাবু মুবারক রক্ষার জন্য পাহারায় নিয়োজিত ছিলেন হযরত উব্বাদ ইবনে বশীর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এবং উনার সঙ্গী সাথীগণ। কুরাঈশ বাহিনী পরিখা ভেদ করে ভেতরে ঢুকে পড়বার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছিল। আর বারবার প্রস্তর ও তীর বর্ষণের দ্বারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ঠেকিয়ে রাখছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেও সাবধানতা অবলম্বন করছিলেন।
পবিত্র বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে, হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেছেন, পবিত্র মদীনা শরীফে আগমনের পর প্রথম দিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শত্রুর আক্রমণ আশঙ্কায় সদা সতর্ক থাকতে হতো।
এক রাতে শয্যাগ্রহণের পূর্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কেউ যদি পাহারায় থাকতেন। হঠাৎ আমরা শুনতে পেলাম অস্ত্রের আওয়াজ। মনে হয় অস্ত্রধারী কে যেনো এগিয়ে আসছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, কে? আওয়াজ এলো, আমি হযরত সা’দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি বলেন, অকস্মাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিরাপত্তা চিন্তা আমাকে ব্যাকুল করে তুললো। আমার সশস্ত্র আগমন সেকারণেই। এরপর তিনি উনার জন্য দোয়া করলেন এবং নিশ্চিন্তচিত্ত হয়ে শয্যাগ্রহণ করলেন।
হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেছেন, পরিখার যুদ্ধের সময় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রধান নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন হযরত সা’দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তখন থেকেই উনার প্রতি আমার মায়া পড়ে গিয়েছিলো খুব। পরিখার বেষ্টনীর একটি স্থানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিলো দুর্বল। আশঙ্কা ছিলো, ওই জায়গা দিয়েই শত্রুরা ব্যুহ ভেদ করার চেষ্টা করবে। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন ওই জায়গাতেই। ছাহাবীদেরকে সতর্ক থাকতে বলে চলে আসতেন আমার সান্নিধ্যে। জিসিম মুবারক উনাতে উষ্ণতা ফিরে পাবার পর পূনরায় চলে যেতেন উনার রণ অবস্থানে।
একবার আমাকে বললেন, শত্রুর আক্রমণ থেকে আমরা আশঙ্কামুক্ত নই। কেউ যদি পাহারা দিতো, তবে আজ রাতে আমি একটু ইতমিনানের সাথে বিশ্রাম নিতে পারতাম। এমন সময় আমরা শুনতে পেলাম সশস্ত্র কারো এগিয়ে আসার আওয়াজ। সতর্ক হলাম আমরা।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ধমক দিয়ে বললেন, কে? জবাব এলো, হযরত সা’দ ইবনে মুয়ায রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি বলেন, আজ রাতে আমি এখানেই প্রহরায় থাকবো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আর দ্বিরুক্তি করলেন না। ইতমিনানের সাথে শয্যাগ্রহণ করলেন। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই হলেন নিদ্রাভিভূত।
আমি শুনতে পেলাম উনার শ্বাস-প্রশ্বাসের বিশেষ শব্দ মুবারক।
হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেছেন, প্রচ- শীত উপেক্ষা করেও প্রতি রাতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাহারা দিতেন পরিখার বেষ্টনীতে। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে মাযহারী, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)।
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হাররার ঘটনা এবং ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির কুফরী কাজের ফিরিস্তি (৭)
০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৫)
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হাররার ঘটনা এবং ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির কুফরী কাজের ফিরিস্তি (৬)
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আইনী কার্যক্রম
২৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৪)
২৫ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাররার ঘটনা এবং ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির কুফরী কাজের ফিরিস্তি (৫)
২৪ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হাররার ঘটনা এবং ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির কুফরী কাজের ফিরিস্তি (৪)
১৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৩)
১৪ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আইনী কার্যক্রম
১২ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বানূ নাযীরের সম্মানিত জিহাদ এবং ইহুদী গোত্রকে পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে বিতাড়িত করা প্রসঙ্গে (২৩)
১২ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হাররার ঘটনা এবং ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির কুফরীমূলক কাজের ফিরিস্তি (৩)
১০ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (২)
০৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)