আসন্ন নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপ তথা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমেরিকা, রাশিয়া তথা বিদেশীদের সক্রিয় তৎপরতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণহীণতার নেপথ্যে কি?
এ অপতৎপরতার শুরু স্বাধীনতার পর থেকেই জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাওয়া বৈদেশিক প্রভাব ও চাপে পিষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব দোষের ভার নিতে হবে দেশের মালিক জনগণকেই কারণ ক্ষমতালিপ্সু ও ক্ষমতাসীন উভয়ের কাছে এখন জনস্বার্থের চেয়ে মসনদের মোহই বড়। নাউযুবিল্লাহ! (পর্ব-৫)
, ১৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
উল্লিখিত পরিসংখ্যানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বর্তমান নতুন শ্রমনীতি, যেখানে নতুন করে ভিসানীতি প্রয়োগের হুমকি রয়েছে। বাংলাদেশে এ নিয়ে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছুটা প্রশ্নের সৃষ্টি হওয়াটাও স্বাভাবিক। কারণ দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তরফে দফায় দফায় কূটনীতিক প্রেরণ, এদেশে অবস্থানকারী সে দেশের রাষ্ট্রদূতের নিরবচ্ছিন্নভাবে সরকার এবং বিএনপির সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে দরকষাকষি এবং সবশেষে সংলাপের আহ্বান জানানো এসবই এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি প্রেরণ এসব কিছুতেও যখন এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেল না, এ অবস্থায় এই শ্রমনীতি নিয়ে আলোচনার মূল কারণ এই যে, এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নতুন কোনো উপায়ে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কি না সেই সংশয়। এর মধ্যে খবর ছড়িয়েছে, ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ এই শ্রমনীতির টার্গেটে পরিণত হতে পারে বলে সতর্ক করা। কূটনৈতিক পর্যায়ে যখন এ ধরনের বার্তা আদান-প্রদান করা হয়, তখন এর গুরুত্ব থাকাটাই স্বাভাবিক। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘দেশের মানুষের ভক্তি কম, গোপন তথ্য প্রকাশ হয়ে যায়।’ মন্ত্রীর বক্তব্যের আলোকে বিনীতভাবে বলতে চাই প্রথমত, সাংবাদিকরা তাদের সাংবাদিকতার দৃষ্টিকোণ থেকেই কাজ করেছেন। এটি যদি গোপন তথ্য হয়ে থাকে তাহলে সরকারসংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সঠিক মনযোগের অভাব রয়েছে; দ্বিতীয়ত, এর মধ্যে কী এমন গোপনীয়তা রয়েছে, যার মাধ্যমে আমাদের জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণœ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে? বরং তা আমাদের মধ্যে অনেক ভাবনার খোরাক দিতে পারে, যার কিছুটা এই লেখায় উল্লেখ করেছি অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে এদেশ যতটা না লাভবান হয়েছে, এর চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হয়েছে সে দেশগুলো।
আরেকটি বিষয় উল্লেখ করতে হয়, তৈরি পোশাক রপ্তানির দিক দিয়ে বিশ্বে চীনের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। অথচ চীনের অভ্যন্তরে রয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ, এখানে কেবল তৈরি পোশাকের দিকটি বাদ দিলে সার্বিক উৎপাদনের দিকে যদি মনযোগ দিই, তাহলে এটা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে, বৈদেশিক রপ্তানিতে চীন বিশ্বে শীর্ষস্থান দখন করে আছে। বিশ্বের সব নামিদামি এবং বিলাসী পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য চীনকে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রেখেছে উন্নত সব দেশ। যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের মতাদর্শগত ব্যাপক অমিল, সেখানকার সাধারণ মানুষের স্বার্থ এবং প্রয়োজন বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার চীনের ওপর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের সাহস পায় না। অথচ দেশটিতে শ্রম অধিকারের আন্তর্জাতিক মানদ-ের অনেক নন-কমপ্লায়ন্সের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে কেবল এই শ্রমনীতির আলোকে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটে পরিণত হবে, এটা যদি সত্য হয় তাহলে ভাবতে হবে যুক্তরাষ্ট্র সে দেশের প্রয়োজনকে সাময়িকভাবে বিসর্জন দিয়ে তাদের মতো করে আমাদের রাজনীতি সাজাতে চাইছে। বিষয়টি আসলে এতটা সহজ নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতগুলো অনেকটাই সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে স্বাধীনভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। এক্ষেত্রে সে দেশের সরকারকে কোনো নির্দিষ্ট দেশকে ভিসানীতির আওতায় আনতে হলে বেসরকারি খাতের স্বার্থে তা আঘাত করলে তাদের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তা ছাড়া বাংলাদেশে হঠাৎ করে শ্রম স্বার্থসংশ্লিষ্ট এমন কোনো কিছু ঘটে যায়নি, যার মধ্য দিয়ে এদেশের ক্ষেত্রে তাদের নতুন ঘোষিত শ্রমনীতি প্রয়োগযোগ্য হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের অসন্তোষ আমলে নিলে নিজেদের মনে কিছুটা প্রশ্নের উদ্রেক হওয়া স্বাভাবিক যে, এর পেছনে তাদের পরোক্ষ কোনো ইঙ্গিত ছিল কি না।
মনে রাখা দরকার, বাইরের শক্তিগুলো তখনই তাদের তৎপরতা দেখানোর সুযোগ পায়, যখন ঘরের ভেতর গৃহবিবাদ চাঙ্গা হয়। নির্বাচন বর্জন করে, জনগণের মতামতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কিংবা বিশ্বাস না রেখে, কেবল যেকোনো উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হওয়ার স্বপ্ন দেখা যে আসলে আমাদের জাতীয় স্বার্থকেই বাদ দেওয়ার শামিল, দেশের মানুষ এ ব্যাপারে এখন বেশ সজাগ। আর তাই এই শ্রমনীতির মাধ্যমে দেশের মানুষকে ভয় দেখানোর প্রয়াস এক অপপ্রয়াস বৈ কিছু নয়।
স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে এটাকে আমি ওয়েলকাম করি না। আমাদের দেশের চেয়ে বিভিন্ন দেশে অনেক বড় বড় সমস্যা রয়েছে। আমাদের নির্বাচন তো আইন ও সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই হয়। তারপরও কোনো সমস্যা থাকলে সেটা দেশের জনগণই তা মিট করবে। আমি মনে করি বিদেশিদের এ ধরনের হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে দেশের নাগরিক হিসেবে সবার সচেতন থাকা উচিত।
কোনো রাজনৈতিক পক্ষ যদি বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করে, তখন সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পড়ে। অন্যের সিদ্ধান্তের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলে তখন তারা প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কর্মক্ষম জনশক্তি তথা কর্মক্ষমতার স্বর্ণযুগে বাংলাদেশ বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭৫ জনই কর্মক্ষম
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কেন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও পাহাড়িদের কোনভাবেই ‘আদিবাসী’ বলার সুযোগ নেই? (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)