উটের গোশ্ত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
, ১৬ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন-
ثُـمَّ انْصَرَفَ اِلَى الْمَنْحَرِ فَـنَحَرَ ثَلاَثًا وَّسِتِّيْنَ بِيَدِهٖ ثُـمَّ اَعْطٰى (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَام) كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهُ عَلَيْهِ السَّلَام فَـنَحَرَ مَا غَبَـرَ وَاَشْرَكَهٗ فِىْ هَدْيِهٖ ثُـمَّ اَمَرَ مِنْ كُلِّ بُدْنَةٍ بِبَضْعَةٍ فَجُعِلَتْ فِىْ قِدْرٍ فَطُبِخَتْ فَاَكَلَا مِنْ لَـحْمِهَا وَشَرِبَا مِنْ مَّرَقِهَا.
অর্থ: “অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র কুরবানী উনার স্থানে এসে নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ্ মুবারকে (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারকে) (১০০টি উটের মধ্য থেকে) ৬৩টি উট নহর মুবারক করেন আর ইমামুল আউয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে বাকী (৩৭টি) উট নহর করার দায়িত্ব মুবারক দেন এবং উনাকে উনার কুরবানী মুবারক উনার মধ্যে শরীক করে নেন। অতঃপর প্রত্যেকটি উট থেকে এক টুকরা করে গোশত মুবারক পাতিলে একত্রিত করে রান্না করতে বলেন। অতঃপর উনারা দু’জনেই সেই গোশ্ত মুবারক (দ্বারা) আহার মুবারক করেন এবং সুরুয়া পান করেন। ” (মুসলিম শরীফ: ১ম খ-, কিতাবুল হজ্জ: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং- ২৮৪০)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণীত হলো, যে উট কুরবানী করা ও উটের গোশ্ত খাওয়া নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
পিঠের গোশত (لَـحْمُ الظَّهْرِ) লাহমুয যাহ্র:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি গোশ্তের মধ্যে পিঠের গোশ্তকে সর্বোত্তম বলেছেন।
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ جَعْفَرَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ يُـحَدِّثُ ابْنَ الزُّبَيْرِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ وَقَدْ نَـحَرَ لَـهُمْ جَزُوْرًا اَوْ بَعِيْرًا اَنَّهٗ سَـمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَالْقَوْمُ يُـلْقُوْنَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اللَّحْمَ يَـقُوْلُ اَطْيَبُ اللَّحْمِ لَـحْمُ الظَّهْرِ
অর্থ: “হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে তিনি হযরত ইবনে যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি উনাদের জন্য একটি ছোট উট অথবা বড় উট নহর করলেন অর্থাৎ যবেহ করলেন। তখন তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছেন, যখন লোকেরা উনার জন্য গোশত মুবারক (পাত্রে) ঢালছিলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখন ইরশাদ মুবারক করতেছিলেন, গোশতের মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে পিঠের গোশ্ত মুবারক। ” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ: ৩য় খ-: কিতাবুত ত্বয়ামাহ্: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৩০৮)
উটের গোশ্ত যেকোনো গোশ্তের চেয়ে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ। শক্ত আঁশের আমিষ নিয়ে গঠিত উটের গোশ্তে সম্পৃক্ত চর্বি গরু বা ভেড়ার গোশ্তের তুলনায় একেবারেই কম থাকে। তবে এতে অসম্পৃক্ত চর্বি বেশি পরিমাণে থাকে বলে, এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
উটের দুধের উপকারীতাঃ
গরুর দুধের থেকে উটের দুধে ভিটামিন সি তিনগুণ বেশি থাকে। আর আয়রন থাকে ১০ গুণ বেশি। ছাগল ও গরুর দুধের থেকে অনেক কম পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। উচ্চমাত্রার ভিটামিন বি এবং অসম্পৃকত চর্বিজাত এসিড পাওয়া যায় উটের দুধ থেকে। গরুর দুধের থেকে স্বল্পমাত্রার ল্যাকটোজ থাকে উটের দুধে। যাদের ল্যাকটোজ হজমে সমস্যা হয় তাদের জন্য এটা বেশ সুবিধাজনক। উটের দুধে চর্বির পরিমাণ কম। যা পাকস্থলির জন্য বেশ উপকারি। উচ্চমাত্রার মিনারেলের পাশাপাশি ইমুইনোগ্লোবিন নামে এক ধরনের অ্যান্টিবডি থাকে যা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংসে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
উটের গোশ্তের ক্যালোরির পরিমাণ ১৬০.২ কিলোক্যালরি।
উটের গোশ্তের পুষ্টিগুণ:
প্রোটিন - ১৮.৯ গ্রাম,
চর্বি - ৯.৪ গ্রাম,
কার্বোহাইড্রেট - ০ গ্রাম।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)