ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ
ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি
(বিলাদত শরীফ ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ ১৫০ হিজরী)
, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অধিকহারে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত ও খতম:
ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আগত-অনাগত সকল সালিক বা মুরীদের আদর্শ। প্রতিটি আমল পূর্ণতার ক্ষেত্রে ফানা ও বাক্বা লাভের পন্থা-পদ্ধতি তিনি হাতে কলমে শিক্ষা দিয়েছেন। বেশি বেশি করে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়া, প্রতিদিন পড়া সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। তিনি এতো বেশি পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছেন; যার মেছাল বিরল। তিনি সাধারণত প্রতি রাতেই পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করতেন। (তারীখে বাগদাদ-১৩/৩৫৪, তাবয়ীদ্বুস ছহীফা-১০৫)
বিশুদ্ধ মতে বর্ণিত আছে যে, ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যে স্থানে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন সেখানে তিনি সাত হাজার বার পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (তাবয়ীদ্বুস সহীফাহ-১০৫)
হাফিয ইমাম যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সহপাঠী হযরত মিসওয়ার ইবনে কুদাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন-
رَأَيْتُ الْاِمَامَ اَبَا حَنِيْفَةَ رَحْمَهُ اللهِ عَلَيْهِ قَرَأَ الْقُرْاٰنَ فِىْ رَكْعَةٍ
অর্থ: আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখেছি যে, তিনি এক রাকায়াতে পূর্ণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (সিয়ারু আ’লামীন নুবালা)
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হযরত খারিজা ইবনে মুসয়াব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, চারজন সম্মানিত ইমাম ছিলেন। উনারা প্রত্যেকে এক রাকায়াতে সম্পূর্ণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছেন।
১. খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম।
২. ছহিবে রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত তামীম দারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
৩. সাইয়্যিদুনা হযরত সাঈদ ইবনে যুবাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪. সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি।
আরো উল্লেখ আছে যে, তিনি প্রতি রমাদ্বান শরীফ মাসে ৬১ বার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ খতম করতেন।
দিনে এক খতম রাতে এক খতম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারাবীহ উনার নামাযে এক খতম। সুবহানাল্লাহ! (তাহযীবুল কামাল-২৯/৪৩৪ আত তাবাকাতুস সুন্নিয়্যাহ ফী তারাজিমিল হানাফিয়্যাহ-১/৩২, তারীখে বাগদাদ- ১৩/৩৫৬)
সাইয়্যিদুনা হযরত আসাদ ইবনে আমর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন- ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি রাতের বেলা তাহাজ্জুদ নামায আদায় করতেন। তিনি প্রতি রাতে এক খতম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ পড়তেন। আর এত বেশী কাঁদতেন যে, তাতে প্রতিবেশীর দয়া হতো। তিনি চল্লিশ বছর পর্যন্ত ইশার নামাযের ওযূ দ্বারা ফজরের নামায আদায় করেছেন। তিনি যে স্থানে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন সেখানে সত্তর হাজার বার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (তারীখে বাগদাদ-১৩/৩৫৪, তাযীবুল কামাল-২৯/৪৩৪, ওয়াফিয়াতুল আ’ইয়ান-৫/৪১৩, আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ-১০/১৩৮, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা- ১১/৪৮৪, ইমাম আ’যম আবু হানীফা (রহমতুল্লাহি আলাইহি) এর জীবন ও কর্ম-৮৩৪)
অধিকহারে ছলাত আদায়কারী এবং একাধারে রোযা পালনকারী:
ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার যুগে সর্বাধিক পবিত্র নামায আদায়কারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! যা স্বাভাবিক ছিল না।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাদের যুগে সবচেয়ে বেশী নামায আদায়কারী ছিলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি। (সীরাতে মুস্তাকীম-২৪৩)
সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ আসেম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
كَانَ اَبُوْ حَنِيْفَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يُسَمَّى الْوَتَدُ لِكَثْرَةِ صَلَاتِهٖ
অর্থ: অধিক পরিমাণে নামায আদায় করার কারণে ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে খুঁটি বলা হতো। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা-৬/৪০০, আখবারু আবী হানিফা-১/৫৭, তারীখে বাগদাদ-১৩/৩৫৪, মাওসুয়াতু উসূলিল ফিকহ-৩/২৪৭)
এছাড়া ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিষিদ্ধ দিনগুলি ব্যতীত ধারাবাহিকভাবে ত্রিশ বছর রোযা রেখেছেন। (তারিখে বাগদাদ-১৩/৩৫৪)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)