ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
, ০৪ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৭ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
بينا عمر رضي الله عنه ذات ليلةٍ يَعُسّ سمع صوت امرأةٍ من سطح وهي تُنشد
تطاول هذا الليل وازدرّ جانبه - وليس الي جنبي خليلٌ الاعبه
فوالله لو لا الله لا شئ غيره - لزعزع من هذا السرير جوانبه
مخافة ربي والحياء يصدني - واكرم بعلي ان تنال مراكبه
فقال عمر لا حول ولا قوة الا بالله ماذا صنعت يا عمر بنساء المدينة ثم جاء فضرب الباب علي حفصة ابنته فقالت ماجاء بك في هذه الساعة قال اخبريني كم تصبر المرأة المغيبة عن اهلها قالت اقصاه اربعة اشهر فلما اصبح كتب الي امرائه في جميع النواحي ان لا تجمّر البعوثُ وان لا يغيب رجلٌ عن اهله اكثر من اربعة اشهر.
অর্থ: “এক রাতে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ঘুরে ঘুরে জনগনের অবস্থা দেখছিলেন। তখন তিনি এক ঘরের ছাদ থেকে একজন মহিলার আওয়াজ শুনতে পান। মহিলা কবিতা পাঠ করছেন, ‘এ রাত দীর্ঘ হয়ে গেছে, আঁধারও ছেয়ে গেছে অথচ আমার পাশে বন্ধু নেই যার সাথে মন দেয়া-নেয়া করব। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি না হতেন, তাহলে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিল না বাধা দেয়ার। তখন এ খাটের সর্বাংশ অবশ্যই কাঁপতে থাকত। নিজ প্রতিপালকের ভয় ও লজ্জা আমাকে বাধা দিচ্ছে। তা ছাড়া নিজ স্বামীর মর্যাদাবোধ আমার রয়েছে। তাই তার সওয়ারীতে আমি তো অন্য কাউকে আরোহী করতে পারি না।’
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি এ কবিতা শুনে বলে উঠলেন, লা-হাওলা ওয়া লা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। হে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার নারীদের সাথে কিরূপ আচরণ করতেছেন? অত:পর তিনি গিয়ে নিজের মহাসম্মানিত মেয়ে ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার দরজা মুবারক-এ কড়া নাড়লেন। ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এগিয়ে এসে বললেন, কী কারণে আপনি এই অসময় এখানে উপস্থিত হয়েছেন? তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমাকে সংবাদ দিন, কোনো মহিলার স্বামী বিদেশে থাকা অবস্থায় মহিলা তার স্বামীর জন্য কতদিন ধৈর্য ধারণ করতে পারে? তিনি জবাব দিলেন, খুব বেশী হলে চার মাস।
অত:পর সকাল হওয়া মাত্র তিনি সমস্ত গভর্নর বা দায়িত্বশীল উনাদের নিকট লিখলেন, কোনো সৈন্যকে যেন বেশী দিন আটকে না রাখা হয়। বিশেষত বিবাহিত সৈনিকদের যেন চার মাস অন্তর ছুটি দেয়া হয়।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
ثُمَّ دَخَلَ عَلَى حَفْصَةَ فَقَالَ إِنِّي سَائِلُكِ عَنْ أَمْرٍ قَدْ أَهَمَّنِي فَأَفْرِجِيهِ عَنِّي كَمْ تَشْتَاقُ الْمَرْأَةُ إِلَى زَوْجِهَا فَخَفَضَتْ رَأْسَهَا فَاسْتَحَيَتْ فَقَالَ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ فَأَشَارَتْ ثَلَاثَةَ أَشْهُرٍ وَإِلَا فَأَرْبَعَةً فَكَتَبَ عُمَرُ أَلَّا تُحْبَسَ الْجُيُوشُ فَوْقَ أَرْبَعَةِ أَشْهُرٍ.
অর্থ: “অত:পর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি (গভীর রাতেই) ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট গিয়ে বললেন যে, নিশ্চয়ই আমি আপনাকে এমন একটি বিষয়ে সুওয়াল করছি, যে বিষয়টা আমাকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। আপনি আমাকে সে বিষয়ে সংবাদ দিন। একজন মহিলা কতদিনে তাঁর আহাল বা স্বামীকে কামনা করে? তখন ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি লজ্জায় উনার সম্মানিত মাথা মুবারক নিচু করে ফেলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
فَإِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ
‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সত্য বিষয় প্রকাশে লাজ্জাবোধ করেন না।’
তখন ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ইশারা মুবারক করলেন- ‘তিন মাস। আর যদি তা না হয়, তাহলে চার মাস’। অর্থাৎ তিন থেকে চার মাস। অত:পর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি চিঠি লিখেন, সৈন্যদেরকে যেন চার মাসের অধিক সময় আটকিয়ে রাখা না হয়। অর্থাৎ প্রতি চার মাস অন্তর যেন ছুটি দেয়া হয়।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)
সুতরাং ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিত মু‘য়াল্লিমাহ। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত দয়া-দান, ইহসান মুবারকের বদৌলতেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলে ইলম মুবারকসহ সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক হাছিল করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
-মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)