আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৯)
, ২৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
দ্বয়ীফ হলেই কি হাদীছ শরীফ
গ্রহণ করা যাবে না?
দ্বয়ীফ হলেই কি হাদীছ শরীফ গ্রহণ করা হবে না? যারা এমন কথা বলে তাদের জেনে রাখা দরকার, ইমাম হযরত বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত কিতাব “আদাবুল মুফাররাদ” কিতাবে এমন অনেক হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন যার সনদ দ্বয়ীফ। বিখ্যাত হাদীছ শরীফ বিশারদ হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “তাকরীবুত তাহযীব” কিতাবে প্রায় ৫২ জন রাবীকে দুর্বল সাব্যস্ত করেছেন যারা সকলেই “আদাবুল মুফাররাদ” কিতাবের রাবী। ইমাম হযরত বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যদি দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ নাই মানতেন বা গ্রহণ করতেন তাহলে কি “আদাবুল মুফাররাদ” কিতাবে ওই সকল রাবীদের রেওয়ায়েত গ্রহণ করতেন?
এছাড়া মূল বুখারী শরীফ উনার মধ্যেই একধিক হাদীছ শরীফ আছে যার রাবী সম্পর্কে দ্বয়ীফ বলা হয়েছে। যেমন, মুহম্মদ বিন আব্দুর রহমান তুফাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনাকে হাফিজ আবু যুরআ রহমতুল্লাহি আলাইহি মুনকারুল হাদীছ বলেছেন। (ফতহুল বারী ৬১৫ পৃষ্ঠা)
আরেকজন রাবী হচ্ছেন “হযরত উবাই বিন আব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি”। তিনি ছহীহ বুখারী শরীফ উনার রাবী। উনার উপস্থিতি সহ বুখারী শরীফ উনার ‘কিতাবুজ জিহাদ’ অধ্যায়ের ২৮৫৫ নং হাদীছ শরীফ উনার সনদ হচ্ছে-
حدثنا على بن عبد الله بن جعفر حدثنا معين بن عيسى حدثنا ابـى بن عباس ابن سهل عن ابيه عن جده قال
উক্ত রাবী ‘হযরত উবাই বিন আব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি’ সম্পর্কে হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি দ্বয়ীফ। হযরত আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি মুনকারুল হাদীছ। ইমাম হযরত নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি শক্তিশালী নন। (মিযানুল ই’তিদাল ১ম খ- ৭৮ পৃষ্ঠা)
আরেকজন রাবী হচ্ছেন, হযরত মুহম্মদ বিন তালহা মুসাররিফ কূফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। বুখারী শরীফ উনার ২৮৯৬ নং হাদীছ শরীফ উনার সনদ-
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا مُـحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ عَنْ طَلْحَةَ عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ سَعْدٌ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ
হযরত মুহম্মদ বিন তালহা মুসাররিফ কূফী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম হযরত সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম হযরত নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা দ্বয়ীফ বলেছেন। (মিযানুল ই’তিদাল)
আবার এমন অনেক হাদীছ শরীফ রয়েছে, যেগুলো ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা ছহীহ বলে গ্রহণ করেন, কিন্তু ছিহাহ সিত্তার অন্যান্য ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সেগুলো ছহীহ নয় বলে পরিত্যাগ করেন। (সায়িকাতুল মুসলিমীন)
আর তাই বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইমাম সাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি “আলফিয়া” কিতাবের হাশিয়ায় উল্লেখ করেনে যে, “ছহীহ বুখারী শরীফ উনার ৮০ জন ও ছহীহ মুসলিম শরীফ উনার ১৬০ জন রাবীর বর্ণনাকৃত হাদীছ শরীফ দ্বয়ীফ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ” (নুয্হাতুন্ নাযার ফী তাওযীহি নুখবাতিল ফিকর ১০৭ পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “হযরত ইমাম দারে কুতনী, আবূ আলী ও আবূ দাউদ দামেস্কী রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ছহীহ বুখারী ও মুসলিম উনাদের ২০০ হাদীছ শরীফকে দ্বয়ীফ বলে উল্লেখ করেন। ” (মুকাদ্দিমায়ে শরহে মুসলিম ১/২৭, ফতহুল বারী ১/৩৪৬)
হযরত ইমাম কুস্তলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ছহীহ বুখারী শরীফ উনার মধ্যে তো এরূপ হাদীছ শরীফও রয়েছে, যা কারো মতে ছহীহ, আর কারো মতে দ্বয়ীফ। (শরহে বুখারী)
কাশফুয যুনুন, মুকাদ্দিমায়ে ফতহুল বারী ইত্যাদি কিতাবে ছহীহ বুখারী শরীফ উনার কিছু কিছু হাদীছ শরীফকে দ্বয়ীফ বলে প্রমাণ করা হয়েছে।
এবার উছুলে হাদীছ শরীফ উনার সম্পর্কে কিছু তথ্য সবার জানা থাকা জরুরী। যেগুলো জানা থাকলে ওহাবী সালাফীরা সহজেই ধোঁকা দিতে পারবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)