আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
, ১৯ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০১ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
برد بن سنان وثقه ابن معين ، والنساءي ، وضعفه ابن المديني قال ابو حاتم : ليس بالمتين. وقال مرة: كان صدوقا قدريا وقال ابو زرعة : لا بأس به وقال ابو داود، يرمي بلقدر
অর্থ: হযরত বুরাদ ইবনে সিনান রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনার র্সম্পকে ইমাম ইবনে মুঈন ও হযরত নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন, তিনি ছিক্বাহ। হযরত ইবনে মাদীনী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি দুর্বল। হযরত আবু হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মজবুত নন । হযরত মুররা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি সত্যবাদী এবং শক্তিশালী। ইমাম আবু যুরআ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উনার কোন সমস্যা নাই। ইমাম আবু দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, দূরে নিক্ষেপ করতে হবে। (মিযানুল ইতিদাল ২/১১: রাবী নং ১১৪৭)
হযরত বুরাদ ইবনে সিনান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ব্যাপারে হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা দুজন উনাকে ছিক্বাহ বলেছেন। অপরদিকে হযরত ইবনে মাদীনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, দুর্বল। অর্থাৎ কেউ জারাহ করেছেন, আবার কেই তা’দীল করেছেন। এখানে মতপার্থক্য দেখা গেলো।
بشير بن ثابت وثقه ابن حبان وقال ابو حاتم مجهول
অর্থ: হযরত বশির ইবনে সাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি। হযরত ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে ছিক্বাহ বলেছেন। হযরত ইমাম আবু হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন ‘মাজহুল’ বা অপরিচিত। (মিযানুল ইতিদাল ২/২৪: রাবী নং ১১৮৯)
এখানেও আমারা দুজন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার রিজাল বিশারদের মধ্যে ইখতেলাফ দেখতে পেলাম। একজনের কাছে হযরত বশির ইবনে ছাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ বা বিশ্বস্ত আবার অন্য একজন ইমামের কাছে সেই রাবীই মজহুল বা অপরিচিত।
بشير بن المهاجر وثقه ابن معين وغيره وقال النسائى ليس به باس وقال احمد: منكر الحديث يجيء بالعجب وقال ابو حاتم: لا يحتج به وقال ابن عدي فيه بعض الضعف
অর্থ: হযরত বশির ইবনে মুহাজির রহমতুল্লাহি আলাইহি। হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ও অন্য ইমামগন উনারা ছিক্বাহ বলেছেন। হযরত ইমাম নাসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উনার মধ্যে কোন সমস্যা নেই। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আশ্চর্যজনক ভাবে মুনকার বর্ণনা করেন। আবু হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, উনার সম্পর্কে আপত্তি নেই। হযরত ইবনে আদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উনার সামান্য দুর্বলতা আছে। (মিযানুল ইতিদাল ২/৪৩: ১২৪৫)
এখানে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ও হযরত আদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা দুজন এই রাবী র্সম্পকে জারাহ করেছেন। অন্যরা তা’দীল বা প্রশংসা করেছেন।
بكر بن بكار قال النسائى ليس بثقة وقال ابو معين ليس بشىء وقال ابو عاصم النبيل ثقة وقال ابن حبان ثقة، ربما يخطىء. وقال ابو حاتم ليس بالقوى
অর্থ: হযরত বকর ইবনে বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি। ইমাম হযরত নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি ছিক্বাহ নন। হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি, তার ব্যাপারে কোন আপত্তি নাই। হযরত আবু আছিম আন নাবিল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, বিশ্বস্ত। হযরত ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি তিনি বলেন, ছিক্বাহ, সম্ভবত তিনি তা নন। ইমাম আবু হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি শক্তিশালী নন। (মিযানুল ইতিদাল ২/৫৮-৫৯: ১২৭৭)
এখানেও ইমাম উনাদের জারাহ ও তা’দীল নিয়ে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। কেউ ছিক্বাহ বলেছেন, কেউ শক্তিশালী নন বলেছেন।
حريث بن السائب البصرى وثقه ابن معين وقال ابو حاتم: ما به باس وقال زكريا الساجي : ضعيف
অর্থ: হযরত হারিছ বিন সায়িব আল বাছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। হযরত ইবনে মুঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে ছিক্বাহ বলেছেন। হযরত আবু হাতিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সমস্যাযুক্ত। হযরত যাকারিয়া আস সাজী তিনি বলেন, তিনি দ্বয়ীফ বা দুর্বল। (মিযানুল ইতিদাল ২/২১৭: ১৭৯০)
উক্ত রাবী র্সম্পকেও ইমামগণ উনাদের পক্ষে বিপক্ষে মত রয়েছে। এরকম ভাবে তাহযিবুল কামাল, তাহযীবুত তাহযীব, তাকরীবুত তাহযীব সহ অনেক আসমাউর রিজাল উনার কিতাবে মতপার্থক্য বর্ণিত আছে। এখানে দেখানোর যে বিষয় সেটা হলো, কোন একজন রাবী র্সম্পকে একেক ইমাম উনার একেক মতামত থাকে কেউ জারাহ করেন, কেউ তা’দীল। ওহাবী সালাফীরা কোন হাদীছ শরীফ উনাকে মওজু অথবা দ্বয়ীফ প্রমাণ করতে শুধুমাত্র যে রাবী র্সম্পকে জারাহ বা আপত্তি করা হয়েছে তার বর্ণনাটা পেশ করে। তারা বলে অমুক ইমাম এই রাবীকে জারাহ করেছে তাই এটা গ্রহনযোগ্য নয়, কিন্তু কেউ যে প্রশংসাও করেছেন সে কথা ভুলেও উল্লেখ করে না। আর সাধারন মানুষও যেহেতু উছুল জানে না সেই সাথে রিজালের কিতাব জীবনে চোখেও দেখেনি তাই তারাও সেটা মেনে নিয়ে গোমরাহ হয়। নাউযুবিল্লাহ!
-মুহম্মদ নূরুদ্দীন (পলাশ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)