বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান:
আবু মুহম্মদ জাবির ইবনে আফলাহ আল ইশবিলি
, ২০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৯ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) বিজ্ঞান মুসলমান উনাদেরই অবদান
আবু মুহম্মদ জাবির ইবনে আফলাহ (হিজরী ৪৯৩-৫৪৪; খ্রি: ১১০০-১১৫০) ছিলেন মুসলিম স্পেন আল আন্দালুসিয়ার সেভিলের আরব মুসলিম মহাকাশ বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ। উনার অনবদ্য কৃর্তী ‘ইসলাহুল মাজিস্ত্বী’। এই কিতাব ৯টি খন্ডে বিভক্ত ছিল। এছাড়াও গণিতের উপর তিনি ‘ফীশ শাকলিল ক্বত্ত্বা’ লিখেছিলেন। উনার জন্মস্থান সম্পর্কে তেমন জানা যায় না। তবে উনার নাম আল ইশবিলি নির্দেশ করে যে তিনি সেভিলের বাসিন্দা ছিলেন।
জাবির ইবনে আফলাহ তিনি উনার কিতাব ‘ইসলাহুল মাজিস্ত্বী’তে টলেমির আলমাজেস্টের সমালোচনামূলক বক্তব্য পেশ করেন।
মূলত: তিনি আল মাজেস্টের গাণিতিক ভিত্তির উপর সমালোচনা করেছিলেন। যেমন: তিনি টলেমীর মেনিলাসের থিওরীর ব্যবহারকে তিনি পরিবর্তন করেছিলেন গোলকীয় ত্রিকোণমিতির সূত্র দ্বারা, যা গাণিতিক হিসাবে নির্ভূলতা সূচক বাড়িয়েছিল। গোলকীয় ত্রিকোণমিতির এই সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন আবুল ওয়াফা আল বুজ্জানী এবং পরে এটির উপর বিস্তৃত কাজ করেছিলেন আন্দালুসিয়ার আরেক গণিত বিশেষজ্ঞ আবু আবদুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে মুয়াদ আয যায়্য়ানী। টলেমির আরেকটি ভুল তিনি শুদ্ধ করেছিলেন, তা হচ্ছে বুধ ও শুক্র গ্রহের কক্ষপথ। তিনি মহাকাশ গবেষণার জন্য যন্ত্র টর্কেটাম তৈরি করেছিলেন যাতে গোলকীয় স্থানাঙ্ক ব্যবস্থাগুলো মান পাওয়া যেত।
উনার পরে বেশকিছু মুসলিম মনিষী উনার কাজের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন, যেমন- আবু রুশদ, নুরুদ্দীন আল বিতরুজী। এছাড়া উনার কাজ পরে মিশর ও মধ্যপ্রাচ্যেও ছড়িয়েছিল। হিজরী সপ্তদশ (খ্রি: ত্রয়োদশ) শতকের পর উনার কিতাব প্রাচ্যে ছড়িয়ে পরে। যেমন উনার পান্ডুলিপির একটি কপি যা ৬২৬ হিজরী (১২২৯ খ্রি:) সালে দামেস্কে তৈরি করা হয়েছিল তা এখন জার্মানীর বার্লিনে সংরক্ষিত রয়েছে।
জাবির ইবনে আফলাহ উনার ‘ইসলাহুল মাজিস্ত্বী’ লিখিত হয়েছিল আরবী ভাষায়। পরে উনার কিতাব হিব্রু ভাষায় অনুদিত হয়েছিল এবং হিব্রু ভাষী মহাকাশবিদ্যায় অনেক প্রভাব ফেলেছিল। ৬৭২ হিজরী (১২৭৪ খ্রি:) সালে মসেহ বিন তিব্বন ও পরে জ্যাকব বেন মাখির এবং ৭৩৫ হিজরী (১৩৩৫ খ্রি:) সালে মার্সেইর সামুয়েল বেন ইয়াহুদা কর্তৃক হিব্রু ভাষায় অনুদিত হয়েছিল। এ ছাড়া ক্রেমোর জেরার্ডও উনার এই কিতাব ল্যাটিনে অনুবাদ করেছিল। জেরার্ডের ল্যাটিন অনুবাদ ইউরোপে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল এবং ইউরোপীয় গণিত ও মহাকাশবিদ্যায় শিক্ষার্থীরা ত্রিকোণমিতিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছিল। জেরালমো কারদানো যেমন উল্লেখ করেছিল, রেজিওমন্টানাস তার উব ঞৎরধহমঁষরং গ্রন্থে (৮৬৪ হিজরী, খ্রি: ১৪৬০ সালে লিখিত, প্রিন্টেড কপি হিজরী ৯৩৯, খ্রি: ১৫৩৩ সালে) গোলকীয় ত্রিকোণমিতির অনেক কিছু জাবির ইবনে আফলাহের কিতাব থেকে নিয়েছিল, কিন্তু কোথাও উনার নাম উল্লেখ করে নাই। এছাড়া হিজরী দশম (খ্রি: ষোড়শ) ও হিজরী একাদশ (খ্রি: সপ্তদশ) শতকের হেনরি সাভিল, পেড্রো নুনেজ ইত্যাদির লেখায় উনার র্কীতির উল্লেখ রয়েছে।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ প্রভূত ক্ষেত্রে সৌন্দর্য্য বর্ধন ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করণ (২)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ প্রভূত ক্ষেত্রে সৌন্দর্য্য বর্ধন ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করণ (১)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত মুকুটস্বরূপ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কায়রোর ‘দারুল হিকমাহ’
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত মুকুটস্বরূপ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
একাডেমিক লাইব্রেরি
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
একাডেমিক লাইব্রেরি
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্যক্তিগত পাঠাগার বা প্রাইভেট লাইব্রেরি
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্যক্তিগত পাঠাগার বা প্রাইভেট লাইব্রেরি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মসজিদ গ্রন্থাগার
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলিম সোনালী যুগের পাঠাগার
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নুরুদ্দীন ইবনে ইসহাক আল-বিতরূজী
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)