বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান:
আবু আবদুল্লাহ মুহম্মদ আল ইদরিসী আল কুরতুবী আল হাসানী আস সাবতী
, ২৭ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) বিজ্ঞান মুসলমান উনাদেরই অবদান
আবু আব্দুল্লাহ মুহম্মদ আল ইদরিসী আল কুরতুবী আল হাসানী আস সাবতী (হিজরী ৪৯৩-৫৬০; খ্রি: ১১০০-১১৬৫) ছিলেন মরোক্কান বংশদ্ভূত আরবীয় মুসলিম ভূগোলবিদ, মানচিত্র অঙ্কনে দক্ষ ব্যক্তিত্ব।
আবু আব্দুল্লাহ মুহম্মদ আল ইদরিসী জিব্রালটার প্রণালীর নিকটবর্তী সাবতা (বর্তমানে সুয়েটা)-তে হিজরী ৪৯৩ (খ্রি: ১১০০) সালে জন্মগ্রহণ করেন। যখন মালাগা হামুদি শাসকদের হস্তচ্যুত হয়, তখন উনার পর-দাদা এখানে বসতি গড়তে বাধ্য হন। তিনি মরোক্কোর আমির ইদ্রিস ইবনে আব্দুল্লাহ উনার বংশধর, যিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশধর। তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেন কর্ডোভাতে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ভ্রমণে বের হন। তিনি আনাতোলিয়া, এশিয়া মাইনর, ইউরোপের কিছু অংশ ও সাইবেরীয় উপদ্বীপ সব ঘুরে দেখেন। আল আন্দালুসিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা চলাকালীন সময়ে তিনি সিসিলির খ্রিস্টান শাসক রজার ২ এর আমন্ত্রণে সিসিলিতে যান। হিজরী ৫৪৮ (খ্রি: ১১৫৪) সাল পর্যন্ত তিনি সিসিলির পালেরমোতে বসবাস করতেন। খ্রিস্টান শাসক দ্বিতীয় রজার মারা যাওয়ার পর তিনি সম্ভবত হিজরী ৫৫৬ (খ্রি: ১১৬১) সালে মুসলিম-খ্রিস্টান রায়ট চলাকালীন সময় সাবত (বর্তমান সুয়েটা) তে প্রত্যাবর্তন করেন। সেখানে তিনি হিজরী ৫৬০ (খ্রি: ১১৬৫) সালে ইন্তেকাল করেন।
সিসিলিতে অবস্থানকালীন তিনি উনার আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ ভ্রমণে আহরিত তথ্যে ও বিভিন্ন দিকে বিভিন্ন অঞ্চলে জরিপকারী পাঠিয়ে আহরিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে ভূগোলবিদ্যার অনবদ্য কিতাব نزهة المشتاق في اختراق الآفاق ‘নুজহাতুল মুশতাক ফী ইখতিরাক্বিল আফাক্ব’ হিজরী ৫৪৮ (খ্রি: ১১৫৪) সালে প্রণয়ন করেন। এই কিতাব প্রণয়ন করতে উনার প্রায় ১৭-১৮ বছর লেগেছিল। এ ছাড়া আশি ইঞ্চি ব্যাসের একটি রুপার পাতের উপর তিনি একটি সংক্ষিপ্ত মানচিত্র তৈরি করেছিলেন। এটা তিনি আরবী চিহ্ন দিয়ে তৈরি করেছিলেন। এখানে তিনি আফ্রিকার উত্তরাংশ, ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশ এখানে তুলে ধরেছেন। তবে আফ্রিকার দক্ষিণাংশ ও দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্কিত ধারণাটা অতটা স্পষ্ট ছিল না। তিনি পরে পৃথিবীর একটি বিস্তারিত মানচিত্র তৈরি করেছিলেন যা মূলত: উত্তর গোলার্ধের জন্য। এটি দ্রাঘিমা রেখা বরাবর সমান ৭টি অংশে বিভক্ত আর প্রতিটি অংশ ১০ টি উপ-অংশে বিভক্ত।
এই প্রতিটি উপঅংশের বিস্তারিত মানচিত্র প্রণীত হয়েছিল। এরপর তিনি গোলকীয় পৃথিবীর মানচিত্র তৈরি করেছিলেন যার ওজন ৪০০ কেজির সমান। এতে সাত মহাদেশ, তাদের প্রধান শহর, নদী-হ্রদ এবং বাণিজ্যিক পথ গুলো চিহ্নিত করেছিলেন। এতে তিনি পাচঁটি আবহাওয়া অঞ্চলও চিহ্নিত করেছিলেন- একটি উষ্ণ, দুইটি নাতিশীতোষ্ণ এবং দুইটি ঠান্ডা অঞ্চল। তিনি ‘রউদুন নাস ওয়া নুজহাতুন নাফস’ নামে আরেকটি ভূগোল বিষয়ক বই প্রণয়ণ করেন যা শুধু উত্তর আাফ্রিকার উপর।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যক্তিগত পাঠাগার বা প্রাইভেট লাইব্রেরি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মসজিদ গ্রন্থাগার
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলিম সোনালী যুগের পাঠাগার
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নুরুদ্দীন ইবনে ইসহাক আল-বিতরূজী
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আবুল ওয়ালিদ মুহম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে রুশদ
২৬ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আবুল ওয়ালিদ মুহম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে রুশদ
২৫ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আবু বকর মুহম্মদ ইবনে আবদুল বাকী আল বাগদাদী
১৮ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির-মুশরিকদের চক্রান্ত (৫)
০৩ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আবু মুহম্মদ জাবির ইবনে আফলাহ আল ইশবিলি
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিখ্যাত মহাকাশ ও জ্যোতিষ বিজ্ঞানী আবু ইসহাক ইবরাহীম ইবনে ইয়াহইয়া আন নাক্কাশ আয যারকালী
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি আদর্শ সৌর ক্যালেন্ডার অত্যন্ত জরুরী। উম্মাহর এই ঘাটতি পুরণের উদ্দেশ্যেই আত-তাক্বউইমুশ শামসী তৈরি করা হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের উচিত- বিধর্মীদের অনুসরন বাদ দিয়ে আত-তাক্বউইমুশ শামসী অনুসরন-অনুকরন করা।
২৭ আগস্ট, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসলামী মাস নির্ধারণে সউদী ওহাবী ইহুদী চক্রান্তের মুখোশ উন্মোচন (পর্ব-৫)
১৯ মার্চ, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)