আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
, ২৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১২ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সুমহান ক্বওল শরীফ
نَـحْمَدُهٗ وَنُصَلِّىْ وَنُسَلِّمُ عَلٰى رَسُوْلِهِ الْكَرِيْـمِ وَاٰلِهٖ وَاَصْحَابِهٖ اَجْـمَعِيْنَ.
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আ’লামীন উনার জন্য এবং অসংখ্য পবিত্র দুরূদ শরীফ ও পবিত্র সালাম মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি।
يُرِيْدُوْنَ لِيُطْفِئُوْا نُوْرَ اللهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللهُ مُتِمُّ نُوْرِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ
অর্থ : “তারা (কাফিররা) মুখের ফুঁঁৎকারে মহান আল্লাহ পাক উনার নূর মুবারক নিভিয়ে দিতে চায়। মহান আল্লাহ পাক উনার ন্রূ মুবারক উনাকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেনই করবেন যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে। ” (পবিত্র সূরা ছফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে “তাফসীরে মাওয়ারাদী” ৫ম জিঃ ৫৩০ পৃষ্ঠায় ‘নূর‘ শব্দের ব্যাখ্যায় আছে,
اِنَّهٗ (سَيِّدُنَا نَبِيِّنَا مَوْلَانَا) مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُرِيْدُوْنَ هَلَاكَهٗ بِالْاَرَاجِيْفِ.
অর্থ : “নূর হলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। অর্থাৎ কাফিররা চায় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মিথ্যার মাধ্যমে হালাক বা নিশ্চিহ্ন করে দিতে। ” নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক!
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান সময়ে ধর্মব্যবসায়ী, উলামায়ে সূ’রা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মান খাটো করার জন্য মিথ্যা রটনা করে। সেই সাথে ছহীহ বিষয়সমূহ গায়েব করে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অর্থাৎ ছহীহ বিষয়সমূহ চুপিয়ে বা লুকিয়ে রাখতে চায়। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শান মান মুবারক সমৃদ্ধ একখানা কিতাব হচ্ছে “আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী সাইয়্যিদি উইলদি আদম”। বাতিল ফিরক্বার লোকেরা এই নির্ভরযোগ্য কিতাব নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে সাধারণ মানুষদের এই কিতাব ও এর দলীলসমূহের বিষয়ে ভুল বোঝাচ্ছে।
এদের প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ زِيَادِ بْنِ حُدَيْرٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ قَالَ لِىْ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ هَلْ تَعْرِفُ مَا يَهْدِمُ الْاِسْلَامَ؟ قُلْتُ لَا قَالَ يَهْدِمُهٗ زَلَّةُ الْعَالِـمِ وَجِدَالُ الْمُنَافِقِ بِالْكِتَابِ وَحُكْمُ الْاَئِمَّةِ الْمُضِلِّيْنَ.
অর্থ : “হযরত যিয়াদ ইবনে হুদাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি বলতে পারেন, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষতি করবে কোন্ জিনিসে? আমি বললাম, আমার তাহক্বীক্ব নেই। তখন তিনি বললেন, আলিমদের পদস্খলন, আর কিতাব নিয়ে মুনাফিক্বদের ঝগড়া-বিবাদ বা তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হওয়া এবং পথভ্রষ্ট শাসকদের গোমরাহী মূলক আদেশ-নির্দেশই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষতি করবে। ” (দারিমী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২২০; মিশকাতুল মাছাবীহ : কিতাবুল ইলম্)
অর্থাৎ এই পথভ্রষ্ট ধর্মব্যবসায়ীরা কিতাব নিয়ে মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি ছড়াবে, মিথ্যা তর্ক-বির্তকের সৃষ্টি করবে। কারণ হচ্ছে এদের অন্তরে রয়েছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিদ্বেষ। নাঊযুবিল্লাহ! এরাই ফুঁৎকার দিয়ে নূর মুবারক নিভিয়ে দিতে চায়। নাঊযুবিল্লাহ! কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি কখনোই তাদের ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত বাস্তবায়ন হতে দিবেন না। তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে হক্ব প্রকাশ করবেনই করবেন এটাই সত্য।
মুসলিম দুনিয়ার গ্রহণযোগ্য আলিমগণ যে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপর আমল করে আসছেন, আমল করতে বলেছেন হঠাৎ করে কিছু দিন যাবত আর্বিভূত বাতিল ফিরক্বা সে সমস্ত আমলসমূহ জাল বলে, মুনকার বলে বিরোধিতা করছে। সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে সে আমল থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
আর এ কারণে বাতিল ফিরক্বা কোন হাদীছ শরীফ বা আমল উনাকে জাল বললে তা অনুসরণ না করে একজন আহলে যিকির উনার কাছে জেনে নিতে হবে।
এ সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَاسْاَلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ
অর্থ : “অতএব তোমরা যদি না জান তবে যারা আহলে যিকির উনাদেরকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও। ” (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
কাজেই, ধর্মব্যবসায়ীদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে হক্কানী রব্বানী ওলীআল্লাহ উনারা যেভাবে বলেন সেভাবে আমল করতে হবে। ইল্মে পূর্ণতা পেতে হলে উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে। পাশাপাশি সার্বিকভাবে প্রতিটি বিষয়ের দলীল-আদীল্লাহ জানতে হবে। দলীল-আদীল্লাহ জেনে বাতিলপন্থীদের যথাযথ জাওয়াব দিতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাক্বীকী মুহব্বত করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)