আত তাক্বউইমুশ শামসী সনের ইতিবৃত্ত (১৩)
আত তাক্বউইমুশ শামসী সন শুরুর প্রেক্ষাপট
, ১৬ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৩ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ০১ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় থেকে শুরু করার কারণ
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার সময় চন্দ্র মাস গণনা হলেও সেসময় আরবগণ মাস আগ পিছ করতো (যাকে ইসলামী পরিভাষায় নাসী বলে)। আবার হিজরী সন গনণা শুরু হয় উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর। হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার প্রস্তাবে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক হিজরত শরীফ বছর থেকে হিজরী সাল গণনা শুরু করেন। যদিও হিজরত শরীফ সংঘটিত হয়েছিল পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ মাস উনার মধ্যে কিন্তু হিজরী সাল গণনা শুরু হয় মুহররমুল হারাম শরীফ মাস থেকে। যাই হোক মুবারক বিছাল শরীফ বছর নির্দিষ্টভাবে জানা আছে বলে সেখান থেকে শামসী সন শুরু করা হয়েছে।
আমরা জেনেছি হিজরী ১১ সন থেকে শামসী ০ (শূণ্য) সন শুরু। তাহলে পার্থক্য হচ্ছে ১১ বছরের। কিন্তু বর্তমানে হিজরী সন চলছে ১৪৩৮ আর শামসী সন চলছে ১৩৮৪। পার্থক্য হচ্ছে ৫৪ বছর। তা কেন?
আমরা ইতোপূর্বে বলেছি হিজরী সন গণনা হয় চাঁদের আবর্তনের সাথে আর সৌর সন গণনা হয় সূর্যের আবর্তনের সাথে। আর হিজরী সনের সঙ্গে সৌর সনের পার্থক্য প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ দিন। সুতরাং শুরু থেকে এই পর্যন্ত এই ৫৪ বছরের পার্থক্য এসে দাঁড়িয়েছে।
আত তাক্বউইমুশ শামসী বিশ্বব্যাপী প্রচার-প্রসারের উপায়
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِذَا اَحَبَّ اللهُ الْعَبْدَ نَادَى جِبْرِيْلَ اِنَّ اللهَ يُـحِبُّ فُلاَنًا فَأَحْبِبْهُ. فَيُحِبُّهٗ جِبْرِيلُ، فَيُنَادِيْ جِبْرِيلُ فِيْ أَهْلِ السَّمَاءِ اِنَّ اللهَ يُـحِبُّ فُلاَنًا فَأَحِبُّوْهُ. فَيُحِبُّهٗ أَهْلُ السَّمَاءِ، ثُـمَّ يُوْضَعُ لَهُ الْقَبُوْلُ فِي الاَرْضِ.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন যে কেউ মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্যশীল বান্দা হন তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে মুহব্বত করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে ডেকে বলেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আমি অমুক বান্দাকে মুহব্বত করি, ফলে আপনিও উনাকে মুহব্বত করুন। তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি ঐ ব্যক্তিকে মুহব্বত করতে থাকেন এবং সেই ব্যক্তির নাম আসমানে ঘোষণা করে দেয়া হয়, তখন আসমানবাসীও সেই ব্যক্তিকে মুহব্বত করতে শুরু করেন। একইভাবে ঐ ব্যক্তির নাম যমীনে ঘোষণা করে দেয়া হয় তখন যমীনবাসীও উনাকে মুহব্বত করতে থাকেন। এভাবে সেই ব্যক্তি উনার নাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।” (বুখারী শরীফ)
যখন ১৮৮৪ সালে প্রথম প্রাইম মেরিডিয়ান (পৃথিবীর মূল মধ্য রেখা) সম্মেলন হয় তখন ফ্রান্স ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে এবং দীর্ঘ সময় সে তার মেরিডিয়ানকেই প্রাইম মেরিডিয়ান বলে বিবেচনা করে। তাতে কিন্তু ফ্রান্সের সমস্যা হয়নি। আন্তর্জাতিকভাবে এখন স্বীকৃত না হলেও একদিন হবে। আর কাফিররা কি মানলো আর কি মানলো না তাতে কিছু আসে যায় না। একদিন অবশ্যই মানতে বাধ্য থাকবে।
দ্বিতীয়ত ইসলাম উনার বিষয়টি এমন যে, প্রথমে নিজে আমল করতে হয় পরে তা মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে হয়। সুতরাং আমরা যদি সবাই নিজে শামসী সন ব্যবহার শুরু করি তবে তা একদিন ছড়িয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর যত মানুষকে জানানো হবে ততই এর ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
পৃথিবীর সকল কম্পিউটার, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, নেটওয়ার্কে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার দেয়া আছে। এই নতুন পদ্ধতি কিভাবে পুরনো পদ্ধতিকে অপসারণ করবে? এই বিষয়টি নির্ভর করবে মুসলিম বিশ্বের মধ্যে একতা এবং খিলাফত ব্যবস্থার উপর। এক সময় মুসলমানগণ বিশ্ব শাসন করেছে তখন উনাদের আইন প্রতিষ্ঠিত ছিল। পরে কাফির বেনিয়া বৃটিশরা তাদের সময়কালে তাদের আইন চাপিয়েছে। এখন সা¤্রাজ্যবাদীদের আইন চাপানো আছে মুসলিম বিশ্বসহ সকল দেশে। কিন্তু এদের এখন ভগ্ন দশা। আবারো ইসলাম জেগে উঠবে আর সম্মানিত ইসলাম অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হবে এই বিশ্ব। ইনশাআল্লাহ। তখন সহজেই বিশ্বের সর্বত্র আত তাক্বউইমুশ শামসী সনই প্রচলিত হবে। ইনশাআল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকারী, কটাক্ষকারী, অবমাননাকারীদেরকে শরঈ শাস্তি প্রদান করা ওয়াজিব
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৭)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দ্বীন ইসলাম উনার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর ৩ শ্রেণী
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মালিকুত তামাম, ক্বাসিমুন নিআম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার বরকত ও ফযীলত (৩)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৭)
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৬)
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মী-কাফেরদের সাথে সাদৃশ্যতা রাখা জায়েজ নেই
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)