আক্বীদা বিশুদ্ধ রাখার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
, ২৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭, মে, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) ইলমে তাছাউফ
‘সম্মানিত দ্বীন ইসলাম’ উনার মধ্যে প্রবেশ করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছেন ‘সম্মানিত ঈমান’। সুবহানাল্লাহ! যখন কেউ সম্মানিত ঈমান আনেন, তখন তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করেন। আর সম্মানিত ঈমান সুসংঘঠিত হয়ে থাকেন সম্মানিত আক্বীদা মুবারক উনার মাধ্যমে। সুবহানাল্লাহ!
এ কারণে যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ اٰمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণরূপে দাখিল হও। তোমরা কখনও শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২০৮)
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি ঈমানদারদেরকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশ করার জন্য বলেছেন। অর্থাৎ তিনি ঈমানদারদেরকে তাদের আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করার জন্য বলেছেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দুইটি দিক রয়েছে। এক. সম্মানিত আক্বীদাগত দিক এবং দুই. সম্মানিত আমলগত দিক। আর এ উভয়ের মধ্যে আক্বীদার গুরুত্ব অনেক অনেক গুণ বেশি। কেননা, কারো যদি আক্বীদা শুদ্ধ থাকে কিন্তু তার আমলে ত্রুটি থাকে, তারপরও সে ঈমানদার থাকবে। অর্থাৎ সে মু’মীনে ফাসিক্ব থাকবে। সে যদি এ অবস্থায় ইন্তেকাল করে, তাহলে সে কোনো এক সময় চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করবে। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু কারো যদি আক্বীদা অশুদ্ধ হয়, তাহলে তার সম্মানিত ঈমান বিনষ্ট হয়ে যায়, সে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার থেকে খারিজ হয়ে যায়। তার কোনো আমলই মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল হয় না। তার সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে, সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী। নাঊযুবিল্লাহ!
ইবলীস ছয় লক্ষ বছর ইবাদত করার পরও তার আক্বীদায় ত্রুটি থাকার কারণে সে কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হয়ে গেছে। বাল‘আম ইবনে বা‘ঊরা ৩০০ বছর ইবাদত-বন্দেগী করার পরও তার আক্বীদায় ত্রুটি থাকার কারনে সে কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হয়ে গেছে। অনুরূপভাবে আবুল হারিছাহ মালানা সেও দীর্ঘ বছর ইবাদত-বন্দেগী, দরস-তাদরীস করেছিলো, তথাপি তার আক্বীদা অশুদ্ধ থাকার কারণে সেও কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হয়ে গেছে। একই কারণে বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকেরা যদিও পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করে থাকে এবং নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাতসহ আরো অন্যান্য ইবাদত বন্দেগীও করে থাকে, তারপরও তারা কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী। কেননা তাদের আক্বীদায় ত্রুটি রয়েছে। অন্যদিকে বণী ইসরাঈলের এক ব্যক্তি দুই শত বছর মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করার পরও তার আক্বীদা বিশুদ্ধ থাকার কারণে সে সর্বোচ্চ জান্নাতী হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে আক্বীদার গুরুত্ব কতো বেশি তা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
এ জন্য যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الْاِنْسَانَ لَفِىْ خُسْرٍ.اِلَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَتَوَاصَوْا بِالْـحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
অর্থ: “নিশ্চয়ই সমস্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে রয়েছে, একমাত্র যারা ঈমান এনেছেন এবং আমলে ছলেহ করেছেন উনারা ব্যতীত। ” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২-৩)
তাই, প্রত্যেক মুসলমান, পুরুষ-মহিলা, জিন-ইনসান সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে- তাদের সম্মানিত ঈমান, আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করা, হাক্বীক্বী হুসনে যন হাছিল করা। এ জন্য আবশ্যক সম্মানিত ইলমে তাছাউফ অর্জন করা। কেননা, সম্মানিত ইলমে তাছাউফ অর্জন করা ব্যতীত কেউ কস্মিনকালেও তার সম্মানিত ঈমান, আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করতে পারবে না, হাক্বীক্বী হুসনে যন হাছিল করতে পারবে না। তাই সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে, একজন হক্কানী-রব্বানী শায়েখ উনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে ক্বলবী যিকির ও ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার মাধ্যমে ইলমে তাছাউফ অর্জন করা, ফায়েজ-তাওয়াজ্জুহ হাছিল করা এবং নিজের সম্মানিত ঈমান, আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করা, হাক্বীক্বী হুসনে যন হাছিল করা। তবেই কামিয়াবী হাছিল করা সম্ভব।
-মুহম্মদ ছালেহ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাযকিয়াহ বা ইছলাহ অর্জন করা ব্যতীত কোনো বান্দার পক্ষে কামিয়াবী হাছিল করা সম্ভব নয়
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মুর্শিদ বা শায়েখ হক্ব বা নাহক্ব তা যাচাই-বাছাই করার পর বাইয়াত হতে হবে
০৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (২)
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়ার ক্ষেত্রে সন্তানের জন্য পিতা-মাতা উনাদের এবং স্ত্রীর জন্য স্বামীর বাধা গ্রহণযোগ্য নয়
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (১)
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩১)
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)