স্থাপত্য-নিদর্শন
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (৩)
, ২৬ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৪ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রাথমিক যুগ থেকে গ্রন্থবাঁধাইয়ের ক্ষেত্রে সুমসৃন পশু-চামড়ার ব্যবহারের ওপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। মুসলিম শাসনের পরবর্তী সময়পর্বে বার্ণিশপেপার জাতীয় উপাদান ক্ষেত্র বিশেষে মলাট ও আচ্ছাদন তৈরিতে ব্যবহৃত হলেও সুমসৃণ চামড়া গ্রন্থবাঁধাই থেকে অপসারিত হয়নি। শিল্পীগণ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সুমসৃণ চামড়ায় স্বর্ণের ব্যবহার করে অলঙ্কৃত আবরণ-পৃষ্ঠাকে শৈল্পিক করে তুলেছেন যাতে করে ক্রেতাগণ গ্রন্থ ক্রয়ে প্রলুব্ধ হন।
গ্রন্থবাধাই শিল্পের দৃষ্টি আকর্ষিত দিক হলো গ্রন্থের মলাট বা কভার-আবরণ। এটির আলঙ্কারিক মটিফ ও সুসম রঙের ঔজ্জ্বল্যে নান্দনিক সৌন্দর্যের মাধুর্য ফুটে ওঠে। সেজন্য গ্রন্থের কভার বা আবরণ-অলঙ্করণের ওপর বেশি গুরুত্ব আরোপিত হবে এই আলোচনায়। খৃ: অষ্টম থেকে একাদশ শতাব্দীর মধ্যে মিশর হতে প্রাপ্ত মুসলমানদের গ্রন্থবাঁধাই শিল্পের যে উদাহরণ দৃষ্টিগোচর হয় তার কভার অলঙ্করণ শৈল্পিক ও চিত্রাকর্ষক। এসব গ্রন্থের কভারের জ্যামিতিক অলঙ্করণ নবম ও দশম শতাব্দীর স্থানীয় মিশরীয় (কপ্টিক) গ্রন্থবাঁধাইয়ের অলঙ্করণ শৈলীকে অনুসরণ করেছে বলে প্রতীয়মান হয়। ত্রয়োদশ হতে পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত মিশরে মামলুক সালতানাতের শাসনপর্বে মিসর-আরবীয় গ্রন্থবাঁধাই শিল্প এক বিশেষ টাইপ ও ধরনে বিকাশ লাভ করে। এই ধরনের বৈশিষ্ট্যে গ্রন্থকভারের অচ্ছিদ্র উপকরণে জ্যামিতিক রেখাশৈলীকে একটি অপরটির মধ্যে প্রবিষ্ট করিয়ে দেয়া হয় এবং উপকরণ অবয়বটির সর্বত্র স্বর্ণের বিন্দু দ্বারা পরিসর সৃষ্টি করে অলঙ্করণের সৌন্দর্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। নিউইয়র্ক মেট্রোপলিটান মিউজিয়ামে আলঙ্কারিক এই গ্রন্থকভার সংরক্ষিত আছে। উক্ত মিউজিয়ামের সংগ্রহশালায় আরো দু’টি মামলুক বাঁধাই গ্রন্থ পরিলক্ষিত হয়। এই দু’টি গ্রন্থের বাঁধাইয়ের মধ্যবর্তী খালি স্থান ক্ষুদ্র গোলাপ আকৃতি ফুলচিত্র দ্বারা সুশোভিত করা হয়েছে। অন্যান্য মামলুক বাঁধাইগ্রন্থ শিল্পে রঙিন পটভূমিতে কেন্দ্রীয় মেডেলসদৃশ অনুকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সুসম কর্তিত উত্তম মসৃন চামড়ায় এরোবেস্ক অলঙ্করণ রীতি পরিলক্ষিত হয়। চতুর্দশ শতাব্দীর প্রারম্ভ হতে মামলুক গ্রন্থবাঁধাই শিল্পে গ্রন্থের কভারের উভয় দিকে এরাবেস্ক অলঙ্করণের সাথে গুল্মপুষ্প অনুকৃতি মটিফ যুক্ত হয়েছে। উল্লেখিত এই সময়পর্বে মুসলমান অধ্যুষিত উত্তর আফ্রিকায় গ্রন্থবাঁধাই জ্যামিতিক রেখাশৈলীর পারস্পরিক আবেষ্টন ও স্বর্ণ-বিন্দুর সৌকর্যে দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠেছে। চলবে....
সম্পাদনায় -মুহম্মদ নাইম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৭)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাজীগঞ্জ দুর্গ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৬)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুনামগঞ্জে কালের সাক্ষী শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পাগলা বড় মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৩)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৪০০ বছরের আলোচিত প্রাচীন স্থাপত্য তেবাড়িয়া জামে মসজিদ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)