মহিলাদের প্রকাশিত কিতাব থেকে:
সূক্ষ্মদর্শী আহলু বাইতি ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সূক্ষ্মতা, তাক্বওয়া ও ইলিম
, ১০ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৪ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বারোজন ইমামের মাঝে হযরত ইমাম মুহম্মদ তাক্বী আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন নবম, তাই উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লক্বব মুবারকে সম্বোধন করা হয়। সকলের মাঝে তিনি হযরত ইমাম মুহম্মদ জাওয়াদ আলাইহিস সালাম হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তবে আসল নাম মুবারক সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ আলাইহিস সালাম।
একদিন, তিনি বাগদাদ শরীফের এক গলিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন কিছু বালক বাগদাদের গলিতে খেলাধুলা করছিলো। হঠাৎ তৎকালীন কথিত খলীফা মামূনুর রশীদ সেখান দিয়ে গমন করলো, তখন সকল বালকরা মামূনুর রশীদকে দেখে ভয়ে পথ ছেড়ে পালিয়ে গেল। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বস্থানেই দাঁড়িয়ে রইলেন। কিছু কিছু বর্ণনায় এসেছে তখন উনার বয়স মুবারক ছিলো ৯ বছর, তবে সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতে তখন উনার বয়স মুবারক ছিলো ১৪ বছর। যা হোক, ছোট্ট এক সম্মানিত বালক উনার এভাবে অবিচল ও নির্ভিক চিত্তে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে মামূনুর রশীদ সম্মানিত বালক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আসলো। খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মামূনুর রশীদের অন্তরে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত মুবারক ঢেলে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মামূনুর রশীদ বললো, হে সম্মানিত বালক! কোন জিনিস আপনাকে চলে যেতে নিষেধ করলো? অর্থাৎ আমাকে দেখার সাথে সাথে অন্য সকল বালকরা দৌঁড়ে পালালো, অথচ আপনি স্বস্থানে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তার কারণ কি? মামূনুর রশীদের প্রশ্ন শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাথে সাথে অতি দ্রুত জাওয়াব দিলেন, “হে আমীরুল মু’মিনীন! পথ সংকীর্ণ নয় যে, আমি সরে গিয়ে আপনার পথ প্রশস্ত করে দিবো। আর আমি কোনো অপরাধও করিনি যে আপনাকে ভয় পাবো। আপনার প্রতি আমার সুধারণা রয়েছে যে, আপনি বিনা অপরাধে কাউকে শাস্তি দেন না।” উনার কথা-বার্তা মুবারক এবং উনার নূরুর রহমত মুবারক (চেহারা মুবারক) মামূনুর রশীদকে বিস্মিত করে তুললো। তখন মামূনুর রশীদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলো, আপনার নাম মুবারক কি? আপনার পিতার নাম মুবারক কি?
তিনি বললেন, “আমি হচ্ছি মুহম্মদ ইবনে আলী রিযা আলাইহিস সালাম”। অর্থাৎ হযরত ইমাম আলী রিযা আলাইহিস সালাম উনার ছেলে মুহম্মদ তাক্বী আলাইহিস সালাম। খলীফা উনার নাম মুবারক শুনে বুঝে ফেললো যে উনার পিতা হচ্ছেন, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অষ্টম ইমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত আলী রিযা আলাইহিস সালাম; যিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লক্বব মুবারক হিসেবে সকলের নিকট সুপরিচিত। সুবহানাল্লাহ! তখন মামূনুর রশীদ উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে সহানুভূতি প্রকাশ করলো এবং উনার বদান্যতার বিষয় বর্ণনা করলো।
মামূনুর রশীদের নিকট অনেক শিকারী বাজপাখি ছিলো। যখন সে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে চলে গেলো তখন তার একটি বাজ পাখিকে শিকারের জন্য ছেড়ে দিলো। বাজ পাখিটি অদৃশ্য হয়ে গেলো। অতঃপর বাজ পাখিটি তার চঞ্চুতে করে (থাবায় করে) ভূমন্ডল থেকে একটি অর্ধ জীবিত ছোট মাছ নিয়ে ফিরে আসলো। মামূনুর রশীদ এটা দেখে অত্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করলো এবং (পূর্বের জায়গায়) প্রত্যাবর্তন করলো। সে এসে দেখলো, বালকগুলো আগের অবস্থায় আছে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এখনও তাদের কাছেই অবস্থান করছেন। মামূনুর রশীদকে দেখে বালকগুলো আবার ভয়ে পালিয়ে গেলো। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একইভাবে স্বস্থানে দাঁড়িয়ে রইলেন। তখন মামূনুর রশীদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটবর্তী হলো এবং উনাকে উদ্দেশ্য করে বললো, (বলুন তো) আমার হাতে কি? জবাবে তিনি বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কুদরত মুবারকে সমুদ্রে এক প্রকার ছোট মাছ সৃষ্টি করেছেন। যেই মাছগুলো রাজা-বাদশাহ ও খলীফাদের বাজপাখীরা শিকার করে থাকে আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সদস্যগণ উনারা সে বিষয়ে সংবাদ দিয়ে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মামূনুর রশীদ বললো যে, আপনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যোগ্যতম আওলাদ।
তারপর মামূনুর রশীদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে নিয়ে গেলো, উনার সাথে অনেক উত্তম ব্যবহার করলো এবং উনাকে অনেক তা’যীম-তাকরীম করলো। কখনও উনার প্রতি তার উত্তম ব্যবহারে ত্রুটি ঘটেনি। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বয়স মুবারক অল্প হওয়া সত্ত্বেও যখন উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান, সম্মানিত ইলিম মুবারকের পরিপূর্ণ আযমত বা শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণসমূহ ব্যাপকভাবে প্রকাশ পেলো, তখন মামূনুর রশীদ তার আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে শাদী বা সম্মানিত নিসবতে আযীমাহ শরীফ দেয়ার জন্য সংকল্প করলো এবং এ বিষয়ে দৃঢ় অভিপ্রায় ব্যক্ত করলো।
তখন আব্বাসীয়রা মামূনুর রশীদকে বাধা দিলো। মামূনুর রশীদ যখন তাদের সাথে আলোচনা করলো যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সে এজন্য পছন্দ করেছে যে, উনার সম্মানিত বয়স মুবারক অল্প হওয়া সত্ত্বেও তিনি সম্মানিত ইলিম মুবারক, সম্মানিত মা’রিফাত মুবারক, বিচক্ষণতা ও ধৈর্য্যশীলতার দিক থেকে পরিপূর্ণ মর্যাদার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! (ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে এই সকল সম্মানিত ছিফত মুবারক বা বৈশিষ্ট্য মুবারক উনাদের অধিকারী এ বিষয়ে তারা বিরোধিতা করলো। তখন তারা পরস্পর ওয়াদা করলো যে, তারা এমন এক ব্যক্তিকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট প্রেরণ করবে, যে উনাকে পরীক্ষা করবে। তাই তারা হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে প্রেরণ করলো। আর তারা উনাকে অনেক বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দিলো এইজন্য যে, যেন তিনি তাদের জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বাধা দিতে পারেন। তারপর তারা হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে এবং খিলাফতের বিশেষ ব্যক্তিদেরসহ মামূনুর রশীদের নিকট উপস্থিত হলো।
তখন মামূনুর রশীদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য একখানা বিছানা বা আসনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিলো। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিলেন। তারপর হযরত ইয়াহইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনেক মাসয়ালা-মাসায়িল জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি অতি উত্তমভাবে সে সকল মাসয়ালা-মাসায়িলের জবাব দিলেন এবং সেগুলো ব্যাখ্যা করে হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বুঝিয়ে দিলেন।
হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সম্মানিত ও পবিত্র হজ্জ মুবারক উনার সময় পশু শিকার নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সেই ইহরামকারীর ব্যাপারে আপনার বক্তব্য মুবারক কি যে কোনো শিকার হত্যা করেছে তথা পশু শিকার করেছে?
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, শিকারটিকে হেরেমের বাইরে হত্যা করেছে নাকি হেরেমের (কাবার চারপাশের নিষিদ্ধ সীমার, মধ্যে? সে মাসয়ালা জানতো, নাকি অজ্ঞ ছিলো? ইচ্ছাকৃত হত্যা করেছে, নাকি ভুলবশতঃ সেই ইহরামকারী গোলাম ছিলো, নাকি আযাদ (মুক্ত) ছিলো? ছোট (নাবালেগ) ছিলো, নাকি বড় (বালেগ) ছিলো? এটা তার প্রথম শিকার ছিলো, নাকি ইতিপূর্বেও সে শিকার করেছিল? শিকারটি কি পাখী ছিলো, নাকি অন্য কিছু? ছোট পাখী ছিলো, নাকি বড় পাখী? ইহরামকারী কি পুনরায় শিকার করার জেদ পোষণ করছে, নাকি অনুতপ্ত? এ শিকার রাতের বেলায় পাখীদের বাসা থেকে ছিলো, নাকি দিনের আলোয় প্রকাশ্যে? ইহরাম হজ্জের জন্যে বেঁধে ছিল, নাকি উমরার জন্যে?
উনার এসব প্রশ্ন শুনে হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এমনভাবে হতভম্ব হয়ে গেলেন যে, উনার চেহারার মধ্যে অপারগতা ও অক্ষমতার ভাব পরিপূর্ণরূপে ফুটে উঠলো ফলে মজলিসের উপস্থিত সবাই ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পরাজয়ের বিষয়টি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারলো। সুবহানাল্লাহ!
তখন মামূনুর রশীদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললো, আপনি অতি উত্তম জবাব মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আপনি যদি ইচ্ছা মুবারক করেন, তাহলে ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে কিছু জিজ্ঞাসা করুন। উনাকে অন্ততঃ একটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করুন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, আপনি এমন ব্যক্তির ব্যাপারে কি বলেন, যে ব্যক্তি দিবসের প্রথমভাগে এক মহিলার দিকে অবৈধ দৃষ্টি দিলো। তারপর দ্বিপ্রহরের সময় উক্ত মহিলা তার জন্য হালাল হয়ে গেলো।
অতঃপর যুহরের সময় উক্ত মহিলা তার জন্য হারাম হয়ে গেলো। তারপর আছরের সময় তার জন্য সে মহিলা হালাল হয়ে গেলো। অতঃপর মাগরিবের সময় তার জন্য হারাম হয়ে গেলো। তারপর ঈশার সময় তার জন্য হালাল হয়ে গেলো। অতঃপর মধ্যরাতে তার জন্য হারাম হয়ে গেলো। তারপর ফজরের সময় তার জন্য হালাল হয়ে গেলো। জবাবে হযরত ইয়াহইয়া ইবনে আকছাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আমি জানি না। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইয়াহইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, সেই মহিলা হচ্ছে একজন দাসী বা বাঁদী।
একজন অপরিচিত ব্যক্তি শাহাওয়াতের সাথে তার দিকে দৃষ্টি দিয়েছিলো, এটা তার জন্য হারাম। তারপর এ ব্যক্তি উক্ত বাঁদীকে দ্বিপ্রহরের সময় ক্রয় করলো, (তখন তার জন্য হালাল হয়ে গেল) যুহরের সময় আযাদ করে দিলো, (তখন তার জন্য হারাম হয়ে গেল) আছরের সময় তাকে বিবাহ করলো, তখন তার জন্য হালাল হয়ে গেল) আর মাগরিবের সময় তার সাথে জিহার করলো, (তখন তার জন্য হারাম হয়ে গেল) ঈশার সময় কাফফারা আদায় করলো, (তখন তার জন্য হালাল হয়ে গেল) আর মধ্যরাতে তাকে রেজয়ী তালাক দিলো (তখন তার জন্য হারাম হয়ে গেল) এবং ফজরের সময় রজা’য়াত করলো তথা ফিরিয়ে নিলো। (তখন আবার হালাল হয়ে গেল) সুবহানাল্লাহ! সেই মুহূর্তে মামূনুর রশীদ আব্বাসীয়দেরকে বললো, তোমরা যে বিষয়ে অবজ্ঞা করেছিলে, তোমরা কি তা বুঝতে পেরেছো? তারপর মামূনুর রশীদ ঐ মজলিসেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলে, আমি আমার মহাসম্মানিতা বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল আলাইহাস সালাম উনাকে আপনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দিতে চাই, আপনি দয়া করে কবুল করুন! সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সম্মতি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর ঐ মজলিসেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ প্রতিষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কিভাবে প্রথম মাসে আপনার শিশুর বিকাশে সাহায্য করবেন?
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘ই’জায শরীফে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)