“বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- গবেষণায় প্রাপ্ত এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
, ০৮ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়া দিয়ে নানাবিধ রোগ হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়াগুলোকে যেসব ওষুধ ধ্বংস করতে পারে, সেগুলো অ্যান্টিবায়োটিক।
তবে ওষুধগুলো সাধারণত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীর বা ভেতরের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যাকটেরিয়াগুলোকে নিস্ক্রিয় করে বা ভেঙে ফেলে। তবে দীর্ঘদিন এক জাতীয় ওষুধ নিয়ম না মেনে প্রয়োজন ছাড়া যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে, টিকে থাকার তাগিদে ব্যাকটেরিয়াগুলো নিজেদের গঠনগত পরিবর্তন করে নির্দিষ্ট সেই ওষুধকে অকার্যকর করে ফেলতে পারে।
গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মানবদেহে সংক্রমণ ঘটানো প্রধান জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ব্যবহৃত প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের অ্যান্টিবায়োটিক প্রায় ৯০ ভাগ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর প্রথম ও প্রধান কারণ হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিকের অযাচিত ব্যবহার। গত বছরের জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আসা ৭২ হাজার ৬৭০ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এ ফলাফল জানা গেছে।
দুটি আলাদা গবেষণায় দেখা গেছে, শতকরা ৯ ভাগ শিশুর মধ্যে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। ৭০ শতাংশ নিউমোনিয়া রোগীর শরীরে কার্যকারিতা হারিয়েছে চার ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক। কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না, এমন রোগীর সংখ্যা ৭ শতাংশ। বাংলাদেশের অ্যান্টিবায়োটিক পরিস্থিতি নিয়ে পরিচালিত এসব গবেষণা সম্প্রতি ‘প্লাস ওয়ান’ নামে একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত অপ্রয়োজনীয় ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সেবনের কারণে কার্যকারিতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে অন্তত ৭৫ ভাগ ইনফেকশন হয় টাইফয়েড, ই-কোলাই, স্ট্যাফাউরিয়াস, ক্লিবশিয়েলা ও সিউডোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে। এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাকসেস ও ওয়াচ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক অকেজো হয়ে গেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এছাড়া, আইসিইউয়ের রোগীদের যে অ্যান্টিবায়োটিকে চিকিৎসা চলতো, তা এখন ওয়ার্ডের রোগীদেরও দিতে হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, পরিস্থিতি কত খারাপের দিকে যাচ্ছে।
একইসঙ্গে যেসব জীবাণু আগে শুধু আইসিইউতে মিলতো তা এখন কমিউনিটিতেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
‘কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে, যেগুলোকে একেবারে শেষ ধাপ হিসেবে রিজার্ভ করে রাখা হয়েছে। সে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একান্ত বিপদে না পড়লে এই রিজার্ভ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিকগুলো একেবারেই ব্যবহার করা উচিত নয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখছি, অহরহ এসব রিজার্ভ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। যেগুলো সাধারণত সর্বোচ্চ মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হওয়া উচিত- সেগুলো এখন হাসপাতালে সাধারণ ওয়ার্ডেই ব্যবহার করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ‘আমাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, আমরা রিজার্ভের যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো এখনই ব্যবহার করে ফেলছি, এর পরে কিন্তু আমাদের আর যাওয়ার কোনও জায়গা নেই। সেই সময়ে কিন্তু আমাদের অনেক বড় বিপদে পড়তে হবে। তখন দেখা যাবে, অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণ সর্দি-জ্বরে কাজ করবে না। তখন সামান্য অসুখ-বিসুখেই প্রাণ হারাতে হবে। নাউযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য, দেশে প্রায় আড়াই লাখের মতো ওষুধের দোকান আছে। এর মধ্যে এক লাখ বা তারও বেশি অননুমোদিত। প্রতিদিন জ্বর, সর্দি, কাশি, শরীর ব্যথা, আমাশয় আক্রান্ত কয়েক লাখ মানুষ ওষুধের দোকানদার, অপ্রশিক্ষিত ব্যক্তির পরামর্শে অথবা নিজের ইচ্ছায় অ্যান্টিবায়োটিক কিনে সেবন করেন। বেশির ভাগই ব্যবহারে কোনো নীতিমালা মানেন না। এভাবে অনিরাপদ ব্যবহার অ্যান্টিবায়োটিককে অকার্যকর করে তুলছে। এতে করে ভবিষ্যতে কেউই নিরাপদ থাকবে না। অর্থাৎ রোগী, দোকানদার এবং চিকিৎসক সবাই অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারানোর ক্ষেত্রে সবিশেষ ভূমিকা রাখছে।
লক্ষণীয়, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের উন্নত অনেক দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতা হারাচ্ছে। অবশ্য অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়ার বা জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, গণমাধ্যমে খবর বের হচ্ছে। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান ও কার্যকর কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ে না। এর মূল্য দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অ্যান্টিবায়োটিক ঠিকমতো কাজ না করায় রোগীকে একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে, রোগীকে হাসপাতালে বেশি দিন থাকতে হচ্ছে।
সংগত কারণে এন্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। আর সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে। এই সচেতনতা দরকার নীতিনির্ধারকদের, স্বাস্থ্য ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের, হাসপাতাল ব্যবস্থাপকদের, ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের, ব্যবস্থাপত্র যারা লেখেন, সেই চিকিৎসকদের, ওষুধের দোকানদারদের, সর্বোপরি সাধারণ মানুষের।
যদি অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে মানুষকে সজাগ না করা যায়, তবে এর ফলে যে মহামারির সৃষ্টি হবে, তা ভেঙে ফেলতে পারে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)