‘শীতকাল মু’মিনদের জন্য বসন্ত’
, ১রা রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ০২ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
মহান আল্লাহ পাক উনার অসংখ্য নিয়ামত মুবারক উনাদের মধ্যে বিশেষ এক নিয়ামত হচ্ছে যামানা, কাল বা সময়। আর এই সময়ের মধ্যে একটা হচ্ছে শীতকাল। যাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন উনাদের বসন্তকাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
যেমন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
الشِّتَاءُ رَبِيعُ الْمُؤْمِنِ
‘শীতকাল মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল। ’ সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৩/৭৫, মুসনাদে আবী ইয়া’লা)
অন্য বর্ণনায় রয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلشِّتَاءُ رَبِيْعُ الْمُؤْمِنِ قَصُرَ نَهَارُهُ فَصَامَ وَطَالَ لَيْلُهُ فَقَامَ
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, শীতকাল মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল। শীতকালের দিন ছোট হয় তাতে মু’মিনগণ রোযা রাখেন। আর রাত দীর্ঘ হওয়ায় মু’মিনগণ রাতে (বেশি বেশি) নামায আদায় করেন। ” সুবহানাল্লাহ! (শু‘আবুল ঈমান ৫/৪২৩, আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪/২৯৭)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
عَنْ حَضْرَتْ عَامِرِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَلْغَنِيْمَةُ الْبَارِدَةُ الصَّوْمُ فِي الشِّتَاءِ
অর্থ: “হযরত আমের ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন, ‘শীতল গনীমত হচ্ছে শীতকালে রোযা রাখা। ” (তিরমিযী শরীফ, হাদীছ শরীফ নম্বর ৭৯৫)
দ্বিতীয় খলীফা সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
اَلشِّتَاءُ غَنِيْمَةُ الْعَابِدِيْنَ
অর্থ: ‘শীতকাল হচ্ছে আবেদীন অর্থাৎ ইবাদতকারী উনাদের জন্য গণীমত। ’ সুবহানাল্লাহ! (হিলইয়াতুল আউলিয়া ১/৫১)
যখন শীতকাল আসতো তখন হযরত ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলতেন,
مَرْحَبًا بِالشِّتَاءِ تَتَنَزَّلُ فِيْهِ الْبَرَكَةُ وَيَطُوْلُ فِيْهِ اللَّيْلُ لِلْقِيَامِ وَيَقْصُرُ فِيْهِ النَّهَارُ لِلصِّيَامِ
অর্থ: “স্বাগতম শীতকাল! এ সময় বরকত নাযিল হয় এবং নামায পড়ার জন্য রাত দীর্ঘ্য হয়। আর রোযা রাখার জন্য দিন ছোট হয়। ” সুবহানাল্লাহ! (লাত্বায়িফুল মা‘আরিফ পৃ: নং ৩২৭)
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
نِعْمَ زَمَانُ الْمُؤْمِنِ اَلشِّتَاءُ؛ لَيْلُهُ طَوِيلٌ يَقُوْمُهُ وَنَهَارُهُ قَصِيْرٌ يَصُوْمُهُ
অর্থ: “মু’মিনদের উত্তম সময় হচ্ছে শীতকাল। কেননা এ সময় রাত হয় দীর্ঘ্য যাতে (অধিক পরিমানে) নামায আদায় করা যায়। আর দিন হয় ছোট যাতে বেশি বেশি রোযা রাখা যায়। ” সুবহানাল্লাহ! (লাত্বায়িফুল মা‘আরিফ পৃ: নং ৩২৭)
মূল কথা হচ্ছে শীতকাল মু’মিন উনাদের আমলের জন্য বিশেষ সহায়ক। কেননা এ সময় রাত বড় হওয়ায় মু’মিনগণ রাত জেগে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির করতে পারেন, নামায আদায় করতে পারেন। শেষ রাতে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পবিত্র তাহাজ্জুদ নামায পড়ে নিজের আরজুগুলো পেশ করতে পারে। সুবহানাল্লাহ!
আর দিন ছোট হওয়ায় রোযা রাখার জন্য অধিক উপযুক্ত হয় শীতকাল। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, প্রত্যেক মু’মিন-মুসলমানদের জন্য দায়িত্ব হচ্ছে, শীতকালকে গণীমত, নিয়ামত হিসেবে গ্রহণ করে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেযামন্দী-সন্তুষ্টি মুবারক, নৈকট্য মুবারক হাছিল করার লক্ষ্যে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগী করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-আহমদ আবূ ইয়ানাহ তাসকীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত ‘মাহে রজব’ উনার মর্যাদা মর্তবার অন্যতম কারণ ‘পবিত্র লাইলাতুর রগায়িব শরীফ’
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত গায়িবী নিদা মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র রজবুল হারাম মাসে রোযা রাখার ফযীলত
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নফসের অনুসরণকারী ধর্মব্যবসায়ীদের অনুসরণ করা জায়েজ নেই
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নারীদের জন্য পুরুষদের বেশ বা পুরুষদের নারীবেশ -এটা কাফিরদের রীতিনীতি
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হাত-পা, চেহারা খোলার মাধ্যমে অবশ্যই সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, যা বেপর্দার অন্তর্ভুক্ত
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৯)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া ইহসান মুবারক
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঝগড়া-বিবাদের কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)