‘বাল্যবিবাহ যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ঠিক থাকলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ঠিক হবে না কেন?’ -সজিব ওয়াজেদ জয়
‘পশ্চিমা অনেক দেশে ১৪ ও ১৬ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ের অনুমতি রয়েছে’ -প্রধানমন্ত্রী
, ২৬ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৯ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে বিবাহের কোন বয়স নির্দিষ্ট করা হয়নি। সর্বোপরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার আক্বদ মুবারক এবং নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ অনুষ্ঠিত হয় ৬ বছর বয়স মুবারকে এবং হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন ৯ বছর বয়স মুবারকে। সেজন্য সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে বাল্যবিবাহ অন্যতম খাছ সুন্নত মুবারক উনার অর্šÍভুক্ত। মূল বিষয় হলো, বাল্যবিবাহ করতেই হবে তা নয় কিন্তু কেউ বাল্যবিবাহ করাতে চাইলে বা দিতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া যাবেনা। এটাই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিধান। শত শত বছর ধরে মুসলমানদের মধ্যে সেই বিধান পালিত হয়ে আসছে। সেই আলোকেই অসংখ্য মুসলমানের বিয়ে বাল্যকালেই সংগঠিত হয়েছে। ইতিহাসে তার অসংখ্য অগণিত প্রমাণ রয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায়, বঙ্গবন্ধুর বয়স যখন ১৩ বছর এবং তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসা রেনুর বয়স ৩ বছর তখন পারিবারিকভাবে তাদের বিবাহ রেজিষ্ট্রি হয় এবং ১৯৩৮ সালে বিয়ে হওয়ার সময় বেগম ফজিলাতুন্নেসার বয়স তখন ছিল ৮ বছর ও বঙ্গবন্ধুর বয়স তখন ১৮ বছর। (তথ্যসূত্র: অসমাপ্ত আত্মজীবনী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রকাশনা, দৈনিক আনন্দবাজার)
উল্লেখ্য, বর্তমান প্রচলিত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন সম্মানিত শরীয়তসম্মতভাবে করা হয়নি। তারপরও ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগে যখন বিশেষ ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নীচে বাল্য বিবাহের বিধান করতে উদ্যোগ নেয়া হলো, তখন বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত কিছু এনজিও এবং কিছু নারীবাদীরা এর কঠোর বিরোধিতা শুরু করে। নারীবাদীদের পিতৃভূমি খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বাল্যবিবাহ আইনগতভাবে বৈধ থাকলেও বাংলাদেশে তারা প্রচ- অপতৎপরতা চালালো। সেই সময় তাদের অপতৎপরতার জবাব দেয়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তনয় সজিব ওয়াজেদ জয়সহ খোদ প্রধানমন্ত্রীর তরফে।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে লেখেন, “আমাদের আইনের সংশোধনী শুধুমাত্র ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে অভিভাবক এবং আদালতের সম্মতিতে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের অনুমতি দেয়। এটা সেই একই রকম আইন যা সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। যদি এই ব্যতিক্রমগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ঠিক থেকে থাকে, তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ঠিক হবে না কেন?
যুক্তরাষ্ট্রে বিবাহ আইনের উদাহরণ উল্লেখ করে জয় বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রের পুরো ৫০টি রাজ্যের বিবাহ আইন সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ শেয়ার করতে চাই, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ ল’ ইউনিভার্সিটির অন্যতম কর্নেল ল’ স্কুল হতে প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় সব রাজ্যেই ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে কোর্ট বা তাদের অভিভাবকদের সম্মতিতে হতে পারে। বিয়ের সর্বনিম্ন বয়সের বিষয়ে তারতম্য রয়েছে। কোনো কোনো রাজ্যে এটি সর্বনিম্ন ১২ বছর এবং একটি রাজ্য রয়েছে তাদের কোনো সর্বনিম্ন বয়সসীমা নেই। গর্ভধারণের বা এ ধরনের বিষয়ও প্রায়ই আদালতের সম্মতিসাপেক্ষে হয়ে থাকে। তিনি বলেন, যারা আমাদের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনের সমালোচনা করছে এটা তাদের যুক্তির বিপক্ষে যায়।”
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত সরকারের নতুন আইনের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সংসদে প্রশ্নোত্তরকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সমাজের বাস্তবতাকে বিবেচনা করে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কিছু এনজিও এবং কিছু ব্যক্তি, বিশেষ করে পল্লী এলাকার সমাজের বাস্তবতা সম্পর্কে যাদের কম ধারণা রয়েছে, তারাই বিশেষ ক্ষেত্রে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিবাহের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছে। তিনি বলেন, বাস্তবতা থেকে তারা অনেক দূরে। তিনি আরো বলেন, পশ্চিমা অনেক দেশে ১৪ ও ১৬ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ের অনুমতি রয়েছে।” (৯ ডিসেম্বর ২০১৬, দৈনিক ইনকিলাব)
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন কান্ট্রির (পশ্চিমা বিশ্বে) অনেক দেশে ১৪ বছর বিয়ের বয়স। কোথাও আছে ৯ বছর বিয়ের বয়স। সেই সব জায়গায় বিশেষ করে ইউরোপ-ইংল্যান্ড-আমেরিকায় টিনএজ মাদার এর সংখ্যা অসংখ্য। এটা একটা সামাজিক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে গেছে। কারণ এই সমস্ত বাচ্চা মেয়েরা ১২/১৩/১৪ বছরে মা হয়ে যায়। কারণ তারা কিন্তু এ্যাবরসন করাতে চায় না। বাচ্চাটাকে যদি লেখাপড়া করাতে হয় তাহলে ঐ দেশে কিন্তু প্রশ্ন করে না বৈধ সন্তান না অবৈধ সন্তান। বাবা-মায়ের নাম কী এটা কিন্তু জিজ্ঞেস করবে না। কিন্তু আমাদের দেশে আগে জিজ্ঞেস করবে বাপের নাম কি, মায়ের নাম কি? বাচ্চাকে বিয়ে দিতে গেলে ছেলে হোক মেয়ে হোক, অবৈধ সন্তান বিয়ে হবে না। চাকুরী দেবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব কিছু বিবেচনা করে এই বাল্যবিবাহ আইনটা করেছি। বাস্তবতাকে সামনে রেখেই করা হয়েছে। কিছু কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এটা নিয়ে অনেক কথা বলছে। যারা কথা বলছেন, তারা কিন্তু একটানা দুই-চার বছর গ্রামে বসবাস করেননি। তাই এ সম্পর্কে তাদের কোন ধারণাই নেই। তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু বিষয় আছে, সে বিষয়গুলো নিয়ে তারা কখনও ভাবে না। যেহেতু বাস্তবতা থেকে তারা অনেক উর্ধ্বে। রাজধানীতে বসবাস করে, রাজধানীর পরিবেশ তারা দেখেন। বাস্তব অর্থে গ্রামীণ অবস্থা সম্পর্কে তারা জানে না।
ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা দুইটা এনজিও করে পয়সা কামায়। আমি যতক্ষণ সরকারের আছি আমি মনে করি এটা আমার দায়িত্ব যে, সমাজে সে সন্তানটাকে জায়গা করে দেয়া। এ কারণেই বাল্যবিবাহ আইনে এই বিশেষ বিধানটা আমি রেখেছি। এটা অত্যন্ত একটা বাস্তবসম্মত চিন্তা, যেটা সম্পর্কে এনাদের (বিরোধিতাকারী) কোন ধারনা নেই। আমরা এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করছি।” (৭ ডিসেম্বর ২০১৬, দৈনিক জনকণ্ঠ)
সুতরাং পশ্চিমা আনুগত্যশীল এনজিও-নারীবাদীদের উচিত আনুগত্যশীলতা প্রমাণে সেই দেশগুলোর অনুসরণে বাল্যবিবাহের বিরোধিতা বাদ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রমাণ দেখানো ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী মেয়েদের অবাধ বিবাহের অনুমতির জন্য কাজ করা।
আর সরকারের উচিত, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিধানের সম্মানার্থে “মুসলমানদের ক্ষেত্রে বিবাহের বয়সের সময়সীমা উঠিয়ে নেওয়া।”
-আহমদ মারদ্বিয়া।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (২)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
“মানুষের পেট কবরের মাটি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা পূর্ণ হবে না”
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পুরুষদের ন্যায় মহিলাদেরও দ্বীনী তা’লীম গ্রহণ করা ফরযে আইন
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের তৃতীয় মাসে যে বিষয়গুলো লক্ষণীয়
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জমিনে ফিতনা-ফাসাদের বড় একটা কারণ বেপর্দা-বেহায়া নারী
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)