‘বাগদাদ নগরী’ সম্পর্কে কিছু সংক্ষিপ্ত তথ্য
, ০৭ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ৩০ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) ইতিহাস
বিখ্যাত বাগদাদ নগরীর প্রতিষ্ঠাতা দ্বিতীয় আব্বাসী শাসক আবু জাফর আল মানসুর। বাগদাদ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটিই ছিল সব আব্বাসী শাসকদের রাজধানী। হালাকু কর্তৃক বাগদাদ ধ্বংসের পূর্ব পর্যন্ত বাগদাদ ছিল মুসলিম বিশ্ব ও পৃথিবীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
আব্বাসীয় শাসক আল মনসুর যখন মুসলিম শাসনের রাজধানী হিসেবে বাগদাদকে নির্বাচন করেন তখন বাগদাদ ছোট একটি উপ-শহরের মতো ছিল। দজলা ও ফুরাত (টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস) নদীর সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় বাগদাদ ছিল আরবের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অধিক সুজলা-সুফলা। আবহাওয়া ছিল নির্মল ও অনাবিল। সব অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্য উপযোগী। চারপাশে ছিল গুরুত্বপূর্ণ চারটি প্রদেশ। যথা- খোরাসান, শাম, বসরা ও কুফা। ফলে বাগদাদ ছিল আরব-অনারব, প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের মিলনস্থল।
এই শহর তৈরীর সময় শাম, মসুল, কুফা ও কোহিস্থান প্রভৃতি অঞ্চল থেকে বড় বড় স্থপতি ও কারিগরদের ডেকে আনা হয়। প্রথম শহরের নকশা ঠিক করা হয়। মাটির নিচে ভিত্তির প্রশস্থতা ৫০ হাত আর মাটির উপরে ২০ হাত প্রশস্থ প্রাচীর তৈরি করা হয়।
পৃথিবীর মধ্যে বাগদাদই একমাত্র গোলাকার শহর। শহরবেষ্টিত প্রাচীরে চার প্রদেশের নামে চারটি বাব (দরজা) রাখা হয়। বাবুল খোরাসান, বাবুশ শাম, বাবুল কুফা এবং বাবুল বসরা। এক দরজা থেকে অন্য দরজার দূরত্ব রাখা হয় এক মাইল। শহরের মধ্যে শাহী প্রাসাদ, জামে মসজিদ, কসরুজ জাহাব, কসরুল খুলদ প্রভৃতি দৃষ্টিনন্দন, শাঁনদার স্থাপত্য নির্মাণ করা হয়। ‘কুব্বাতুল খাজরা’ নামে ৮০ গজ উচ্চতার গম্বুজটি ছিল মনোমুগ্ধকর ও চিত্তাকর্ষক স্থাপনা। শহর নির্মাণ শেষ হলে এর নামকরণ করা হয় ‘মদীনাতুস সালাম’।
আল মনসুরের পরবর্তী শাসক আল মাহদি এসে বাগদাদের সম্প্রসারণ করেন। দজলা নদীর পূর্ব তীরে নতুন করে শহরকে ঢেলে সাজানো হয়। দজলা নদী বাগদাদ শহরের মধ্যে চলে আসে। ফলে শহরটি আরও চিত্তাকর্ষক ও নয়নাভিরাম হয়ে উঠে। সময়ের সাথে সাথে বাগদাদ বিস্ময়কর উন্নতি করতে থাকে। শাসক, আমির-উমরা এবং মুসলিম ব্যবসায়ীদের নিত্যনতুন রুচির সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন রূপ ফুটে উঠে।
উল্লেখ্য, তৎকালীন সময়ে বাগদাদে ত্রিশ হাজার মসজিদ আর দশ হাজার হাম্মামখানা ছিল। এবং বাগদাদে ৮৬০ জন চিকিৎসক তাদের চিকিৎসাবিদ্যার চর্চা করতেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজকের নগরসভ্যতার জনক মুসলমানগণই
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আফগানিস্তানেও উগ্রতাবাদী ওহাবী-সালাফীদের অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঐতিহাসিক হেজাজ রেলওয়ে” যে রেলপথকে বলা হয় ‘বিশ্বের সব মুসলমানের সম্পত্তি’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানগণই আধুনিক কাগজ শিল্পের প্রতিষ্ঠাতা
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাস চর্চা ও সংরক্ষণে মুসলমানদের অবদান
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলিম সোনালী যুগের পাঠাগার
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আগলাবী সালতানাতের মুসলিম নৌবহর (১)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বর্ণালী যুগে মুসলমানদের বিজয় রহস্য এবং বিধর্মীদের স্বীকারোক্তি (১)
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারস্যের এক গভর্নরের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের ঘটনা
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র আযানের জন্য ২২ জন মুসলমানের শহীদ হওয়ার ঈমানদীপ্ত ঘটনা
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)