নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বুলন্দী শান মুবারক প্রকাশ:
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (২)
, ১২ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার সূরা জুমুয়ার ২নং আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন-
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মীদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন উনার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
বাতিল ফিরকারা উপরোক্ত আয়াত শরীফ থেকে তাদের পক্ষে দলীল দেয়ার চেষ্ট করে, তারা অর্থ করে উম্মী মানে হচ্ছে নিরক্ষর। উপরোক্ত আয়াত শরীফে যে উম্মীদের কথা বলা হয়েছে, এই উম্মী মানে কি নিরক্ষর?
বিখ্যাত ইমাম হযরত কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তাফসীরে বর্ণনা করেন-
قَوْلُهُ تَعَالَى: (هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِنْهُمْ) قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: الْأُمِّيُّونَ الْعَرَبُ كُلُّهُمْ، مَنْ كَتَبَ مِنْهُمْ وَمَنْ لَمْ يَكْتُبْ، لِأَنَّهُمْ لم يكونوا أهل كتاب
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন, (তিনিই উম্মীদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন)। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উম্মী শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন, সমগ্র আরববাসী। তাদের মধ্যে যারা লিখতে জানতো এবং যারা লিখতে জানতো না সবাই। কারণ তারা আহলে কিতাব ছিলো না। (তাফসীরে ছা’লাবী ২৬/৩৭৩, তাফসীরে কুরতুবী ১৮/৯১)
রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উম্মী শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন- উম্মী হচ্ছে এমন সম্প্রদায় যাদের কাছে ইতিপূর্বে কিতাব আসেনি বা যারা আহলে কিতাব ছিলেন না, যেমন আরববাসী উনারা তেমন সম্প্রদায় ছিলেন, যদিও আরববাসী লিখতে এবং পড়তে পারতেন তারপরও আহলে কিতাব না হওয়ার কারণে তারা উম্মী।
(هو الذي بعث) أرسل (في الأميين) أي إليهم والمراد بهم العرب من كان يحسن الكتابة منهم، ومن لا يحسنها لأنهم لم يكونوا أهل ك تاب
(উম্মীয়্যিন তাদের প্রতি) এর অর্থ হচ্ছে তারা ছিলো আরব জাতি যাদের অনেকে অনেক সুন্দরভাবে লিখতে পারতো এবং অনেকে ভালো লিখতে পারতো না, আর তারা আহলে কিতাব ছিলো না। (ফাতহুল বয়ান ১৪/১২৯)
এই তাফসীর থেকে বোঝা গেলো উম্মী মূলত আরবদের বলা হতো। এই উম্মী আরবগণ লিখতে ও পড়তে পারতেন। উনাদেরকে উম্মী লিখতে বা পড়তে না পারার কারণে বলা হয়নি বরং উনাদের উম্মী বলা হয়েছে আহলে কিতাব না হওয়ার কারণে। সূতরাং এটা পরিষ্কার যে উম্মী হওয়ার সাথে লেখা পড়ার কোন সম্পর্ক নেই।
হযরত আবুল হাফস সিরাজুদ্দীন দামেস্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
وعن ابن عباس رَضِيَ اللَّهُ عَنْهما الأميون الذين ليس لهم كتاب ولا نبي بعث فيهم
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, উম্মী হচ্ছে তারা, যাদের প্রতি কিতাব আসেনি, যাদের প্রতি কোন হযরত নবী আলাইহিমুস সালামও আসেননি। (আল লুবাব ফি উলুমিল কিতাব ১৯/৭০)
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার এই তাফসীর থেকে প্রমাণিত হলো- যাদের প্রতি হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনারা আসেননি ও কোন আসমানী কিতাব আসেনি সেই জাতিকে উম্মী বলা হয়। এর সাথে লিখতে বা পড়তে পারা না পারার কোন বিষয় নেই।
-খাজা মুহম্মদ নুরুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক (২)
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (২)
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৪)
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৪)
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক (১)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খ-নমূলক জবাব (১)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৩)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য বহু ইমাম-মুজতাহিদ এবং আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কর্তৃক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারক উনাকে ‘ঈদ, ঈদে আকবর ও ঈদে আ’যম’ হিসেবে গ্রহণ করার দলীল
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আহলু বাইতে রসুলল্লিাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়মি মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্ললি আলামীন মামদূহ র্মুশদি ক্ববিলা সাইয়্যদিুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহসি সালাম উনাকে মহাসম্মানতি ও মহাপবত্রি সাইয়্যদিু সাইয়্যদিলি আ’ইয়াদ শরীফ উনার মহাসম্মানতি মাক্বাম মুবারক হাদয়িা
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১২)
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একমাত্র হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণে ‘খিলাফত’ ব্যবস্থা জারী করার মাধ্যমেই এদেশবাসী প্রকৃত সুখ-শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে (২)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)