নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বুলন্দী শান মুবারক প্রকাশ:
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (১৭)
, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
উম্মী অর্থ নিরক্ষর করে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারতেছেন। এ বিষয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা-
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফে এমন অনেক শব্দ আছে যা আপনি চাইলেও ডিকশনারী দেখে অর্থ করতে পারবেন না। যদি করেন ঈমান আমল সব শূণ্য হয়ে যাবে। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ অতি উচ্চাঙ্গের বর্ণনা ও শব্দশৈলী দ্বারা বিন্যাসকৃত একটি গ্রন্থ। ধর্মব্যবসায়ী বাঙালী অবিধান লব্ধ জ্ঞান থেকে চিন্তা করে অনেক সময় হিসাব মেলাতে পারে না। তরজমা করার আগে সবসময় যে বিষয়টা লক্ষ্য রাখতে হয় সেটা হচ্ছে- যে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে সে বিষয়ে পবিত্র ইসলামে আমাদের আক্বীদা কি?
আক্বীদার মানদ-ের যদি তরজমা ও তাফসীর করতে না পারা যায় তবে পদে পদে ভুল হবে এতে কোন সন্দেহ নাই।
যেমন- মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
ووجدك ضالا فهدي
এর সরাসরি শাব্দিক অর্থ: মহান আল্লাহ পাক আপনাকে (হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোমরাহ/পথভ্রষ্ট/বিভ্রান্ত/পেয়েছেন অতঃপর হিদায়েত দিয়েছেন। ” (সূরা দ্বোহা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ০৭) নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!
পৃথিবীর যত লুগাতের কিতাব আছে খুলে দেখুন উক্ত আয়াতে বর্ণিত ضال শব্দের অর্থ কি আছে?
আরবী বিখ্যাত লুগাত “তাজুল আরুস” এর ৭ম খন্ড ৪১০ পৃষ্ঠায় আছে-
والضلل محركة قد الهدي
অর্থ: ضال বলা হয় হিদায়েতের বিপরীত বিষয়কে অর্থাৎ গোমরাহী, পথভ্রষ্টতা ও বিভ্রান্তিকে। ”
আল্লামা রাগেব ইস্পাহানী বলেন, ضلل হচ্ছে- সরলপথ হতে বিচ্যুত হওয়া এবং হিদায়েতের বিপরীত বিষয়। ”
উপরোক্ত লুগাতী আলোচনার পর এটাই বোঝা যায়, “সূরা দ্বোহায়” বর্ণিত ضالا শব্দের লুগাতী অর্থ হলো- গোমরাহ্, পথভ্রষ্ট, বিভ্রান্ত ইত্যাদি।
এখন প্রশ্ন হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে ضالا শব্দের লুগাতী বা সরাসরি অর্থ গ্রহণ করা জায়িয হবে কি?
আমার বিশ্বাস ইহুদীদের দালাল ছাড়া আর কেউ এই অর্থ নিবে না। অর্থ যে তেমন করা যাবে না সেটা মহান আল্লাহ পাক স্পষ্ট করে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
ليس بي ضلالة ولكني رسول من رب العالمين
অর্থ: “হে আমার ক্বওম! আমার নিকট গোমরাহী বলতে কিছু নেই বরং আমি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার প্রেরিত রসূল। ” (পবিত্র সূরা আরাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
এই আয়াত শরীফ থেকে দেখা যাচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বদা হিদায়েতের উপর ছিলেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে সূরা দ্বোহার ৭নং আয়াত শরীফের শাব্দিক অর্থ করলে সূরা আরাফ শরীফ উনার ৬১নং আয়াত শরীফ অস্বীকার করা হচ্ছে।
আবার মহান আল্লাহ পাক ‘সূরা বাক্বারাহ’ শরীফ উনার ৫৪নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَكَرُوْا وَمَكَرَ اللهُ وَاللهُ خَيْرُ الْمَكِرِيْنٌ
এ আয়াত শরীফের লুগাতী বা সরাসরি অর্থ হলো- আর কাফিরেরা ধোঁকাবাজী করলো, মহান আল্লাহ পাকও ধোঁকাবাজী করলেন, আর আল্লাহ পাক হচ্ছেন উত্তম ধোঁকাবাজ। ” নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!
বিখ্যাত লুগাত ‘তাজুল আরুস মিন জাওয়াহিরিল কামুস”-এর ৩/৫৪৮ উল্লেখ আছে-
)المكر) الخديعة والاحتيال وقال الليث احتيال فى خقية
অর্থ: مكر “মকর” শব্দের অর্থ হচ্ছে- ধোঁকাবাজী, প্রতারণা, ঠগবাজী। হযরত আবু লাইছ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘গোপন প্রতারণা। ’
ইমাম হযরত ফখরুদ্দীন রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন-
المكر عبارة عن الاحتيال فى ايصال الشر والاحتيال على الله تعالى محال- فصار لفظ المكر، فى حق من المتشبهات وذكروا فى تأويله
"مكر" “মকর” শব্দটির প্রকৃত অর্থ হচ্ছে- প্রতারণা করা। আর “প্রতারণা” মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারকের সম্পূর্ণ খেলাফ। সুতরাং "مكر" “মকর” শব্দটি মহান আল্লাহ পাক উনার শানে মুতাশাবেহাত”-এর অন্তর্ভুক্ত। তাই মুফাসসিরীনে কিরামগণ "مكر" শব্দের অনেক ব্যাখ্যা করেছেন। (তাফসীরে কবীর ৮ম খন্ড ৬৯ পৃষ্ঠা)
মকর শব্দের শাব্দিক অর্থ মহান আল্লাহ পাক উনার শানের খেলাফ হওয়ার কারণে যদি ব্যাখ্যা করা লাগে তাহলে বুঝতে হবে; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানের খেলাফ হলেও সেটার শাব্দিক অর্থ করা যাবে না।
-খাজা মুহম্মদ নুরুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খলীফা মনোনীত হওয়ার ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা সম্পূর্ণরূপে হারাম-নাজায়িয এবং বিদ্রোহীকে কতল করা বৈধ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার অনুসরণ-অনুকরণ করা ফরয
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার নিকট আনুগত্যতার বাইআত গ্রহণ করা ফরয
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই দায়িমীভাবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ পালন করতেই থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (১৬)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার শর্তাবলী
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)