‘ঈদে কিশোর গ্যাং আতঙ্ক’ নীরব সময়ে তৎপর হয়ে ওঠে তারা
প্রচলিত শিশু আইনের বাধ্যবাধকতায় তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারের উচিত, কিশোর অপরাধ নির্মূলে শিশু আইন সংশোধন করে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ১২ বছর নির্ধারণ ও দ্বীন ইসলামের অনুশাসন রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করা।
, ২৭ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৯ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ৬ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
সারা বছরের মতো রমজান মাসেও রাজধানীজুড়েই চলছে ‘কিশোরগ্যাংয়ের এমন অনেক অপতৎপরতা। এরা বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় অপরাধ করছে স্থানীয় বিভিন্ন দলের নেতাদের প্রশ্রয়ে- বলছেন ভুক্তভোগী এবং সচেতন সমাজ। জানা গেছে, বিশেষ উৎসব এলে এসব কিশোরগ্যাংয়ের বেপরোয়া ছিনতাই বেড়ে যায়। পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুব চাতুরতার সাথে নীরব সময়গুলোতে এসব আক্রমণ করে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেয়া তথ্য মতে, রাজধানীতে বেপরোয়া হয়ে উঠা কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। বর্তমানে নগরবাসীর জন্য অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ এই কিশোরগ্যাং।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসূত্র বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গড়ে উঠছে এ সব কিশোরগ্যাং। তারা বিভিন্ন অপরাধ সংগঠনের পাশাপাশি নিজেদের একটা জগত তৈরি করেছে। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় তৈরি হওয়া কিশোরগ্যাং নিজেদের তৈরি করা সাংকেতিক ভাষায় তথ্য আদান-প্রদান করে। বিগবস, নাইন এমএম, নাইন স্টার, ডিসকো বয়েজ ইত্যাদি নামে পরিচিত ‘কিশোরগ্যাং’ আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চুরি পাড়া বা মহল্লার রাস্তায় মোটরসাইকেলের ভয়ংকর মহড়া, মাদক এবং ইয়াবা সেবন ও বিক্রি, চাঁদাবাজি, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার মতো বড় বড় অপরাধের সাথে জড়িত। পুলিশের তালিকা অনুযায়ী রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি কিশোরগ্যাং রয়েছে মিরপুর এলাকায়। এ ছাড়া তেজগাঁও, উত্তরা, গুলশান, ওয়ারী, সায়দাবাদ, মতিঝিল, রমনা, লালবাগ, গাবতলী, মহাখালী, বাড্ডা, রামপুরা, আজিমপুর, হাতিরঝিল পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা খুবই তৎপর।
আসলে প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীরা সাহস দিয়ে কিশোরদের ব্যবহার করে অপরাধ করায়। এসব কিশোররাও উঠতি বয়সের কারণে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে প্রতিযোগিতা করে অপরাধ করে। মূলত, তারা মারামারি, জমি দখল, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল এবং এদের কেউ কেউ আবার মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে এসব কিশোরগ্যাং তৈরি করেছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, আসলে প্রচলিত শিশু আইনে কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া অনেকটাই জটিল ছিল। এর জন্য বয়স্ক অপরাধীরা চাতুরতার সঙ্গে আইনের আওতা থেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে এসব কিশোরগ্যাংয়ের সৃষ্টি করে। কিন্তু বর্তমান আইন অনুযায়ী কিশোর অপরাধীদের সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে তারা সংশোধিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছে এমন রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, বিদ্যমান আইনই বাধা হয়ে দাঁড়ায় কিশোর গ্যাং এর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে। ১৯২২ সালের বেঙ্গল চিলড্রেন অ্যাক্ট থেকে ১৯৭৪ সালের শিশু আইন এবং সর্বশেষ প্রণীত শিশুআইন ২০১৩ করা হয়েছে শিশুদের জন্য। কিন্তু এই আইনের ফাঁকফোকরে কিশোররা ‘শিশু’তে সংজ্ঞায়িত হওয়ায় কিশোর গ্যাং দমনে এটি একটি প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যার সুযোগই নিচ্ছে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
কিশোর গ্যাং তৈরির পেছনে অভিভাবকদেরও দায় কম নয়। দেখা যাচ্ছে, আধুনিক সমাজব্যবস্থায় সন্তান কি করছে, কার সাথে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে ইত্যাদি সম্পর্কে পিতামাতা একেবারেই বেখেয়াল পিতামাতা। অথচ নৈতিকতা ও সামাজিক অনুশাসন শিক্ষার প্রথম স্তর বলা হয়ে থাকে পরিবারকে।
প্রসঙ্গত, কিশোরকাল মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে বিবেচিত। পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২১ ভাগ কিশোর। শুধু সংখ্যাগত বিচারে নয়, সামগ্রিক মাপকাঠিতে এ জনগোষ্ঠীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার হিসেবে তাদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠা খুবই জরুরি। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি দেশ ও জাতির অগ্রগতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি। তাই ঘৃণ্য এই পশ্চিমা অপসংস্কৃতির মূল্যোৎপাটন জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে।
তবে প্রচলিত আইন-কানুন এবং প্রশাসনিক উদ্যোগে সাময়িক সময়ের জন্য কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রন করা গেলেও তা দীর্ঘস্থায়ী নয়। এর জন্য প্রয়োজন সমাজে কঠোর নৈতিক অনুশাসন এবং তার প্রতিপালন। আর এই অনুশাসন বাস্তবায়ন সম্ভব সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ-অনুভূতি রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচার-প্রসারের মাধ্যমে। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার এই বাংলাদেশে কিশোর সমাজের মধ্যে থাকার কথা ছিলো দ্বীন ইসলাম উনার অনুশাসন, আদর্শ ও অনভূতি। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে তোমাদের সন্তানের বয়স ৭ বছরে পদার্পণ করলে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিবে। ১০ বছর বয়সের পর সালাত আদায় না করলে তাদেরকে প্রহার করবে এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দিবে।’ এই পবিত্র হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু নামাজ আদায়েরই নির্দেশ দেননি বরং শিশু-কিশোরদের দ্বীনি অনুশাসনে আনার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সঙ্গতকারণেই সরকারের উচিত, দেশের কিশোর গ্যাং কালচার নির্মূলে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে উদ্যোগ গ্রহণ করা। কিশোরদের মাঝে ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবন ঘটানো এবং তাদের শিক্ষা সিলেবাসে ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন ঘটানো। এছাড়া, দেশব্যাপী যেসব কথিত রাজনীতিক ব্যক্তি এবং সমাজের প্রভাবশালীরা ও মাদক কারবারীরা তাদের স্বার্থ হাছিলে কিশোর গ্যাংগুলোকে শেল্টার দিচ্ছে এদেরকে যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করা। কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডাস্থলে পুলিশের নিয়মিত টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করা। কিশোরদের রাজনৈতিক মিটিং-মিছিলে ব্যবহার বন্ধ করা। অপরাধ চক্রে জড়িয়ে যাওয়া কিশোরদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা। অর্থাভাবে যারা কিশোর গ্যাংয়ে সম্পৃক্ত হয়েছে তাদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের সহযোগীতার অভাব সমালোচনার ঝড় তুলছে প্রবল বৃষ্টি, খড়া, ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিদের পুনর্বাসনে সত্ত্বর মনোযোগী হউন
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির প্রচারণা দেশের উন্নয়নের চিত্র নয়। বর্তমানে আয়বৈষম্য স্বাধীনতার চেতনার মূলে কুঠারাঘাত।
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নিত্য নৈমত্তিক সড়ক দুর্ঘটনা রাষ্ট্রের জন্য নাগরিক হত্যার অপরাধ ইসলামী অনুভূতির উজ্জীবনই সরকারকে হত্যার দায় থেকে রক্ষা করতে পারে
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শিশু কিশোরদের মাঝে ডায়াবেটিসের প্রকোপ ভয়াবহ এবং মারাত্মক ঝুকিপূর্ণভাবে বাড়ছে শিশু-কিশোরদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ও প্রতিরোধে জরুরীভাবে নজর দেয়া উচিত ইনশাআল্লাহ
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)