৮২ ভাগ এলাকা কংক্রিটে ঢাকা- তপ্তনগরী ‘ঢাকার’ উত্তাপ কমাতে হলে ঢাকার সুযোগ-সুবিধা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। যথাযথ বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে ইনশাআল্লাহ
, ২৮ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৯ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮, মে, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
বিশ্বের শীর্ষ যেসব জনবহুল শহর রয়েছে, তার মধ্যে ঢাকা শীর্ষে। মানুষের বাড়তি চাপের চাহিদা মেটাতে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন ও অবকাঠামোর চাপ স্বাভাবিকভাবে গরমের অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়। এই বাড়তি চাপ সামলাতে নূন্যতম গাছপালা নেই।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল-পরিকল্পনা বিভাগের ‘ঢাকা নগরীর সবুজ এলাকা এবং এর রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শিরোনামে এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ঢাকা মহানগরে ২০ ভাগ সবুজ এলাকা থাকা প্রয়োজন, সেখানে আছে সাড়ে ৮ শতাংশের কম।
উন্নয়ন, অবকাঠামো নির্মাণসহ নানা উন্নয়নের নামে ঢাকা শহরের বহু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
পান্থকুঞ্জ পার্কের গাছ কাটার পর এই এলাকায় তাপ বেড়ে গেছে। আগে গরমে পার্কে ঢুকে গাছের ছায়ায় আরাম করা যেত, এখন ঢোকাও যায় না।
রাজধানীর শাহবাগ এলাকার শিশুপার্কে গাছ কেটে কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
আর ঢাকার ফার্মগেটের আনোয়ারা উদ্যান নামে থাকলেও বাস্তবে এখন সেটি নেই। সেখানে মেট্রোরেলের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানেও বেশ কিছু গাছ ছিল, যা কেটে ফেলা হয়েছে। বছরের ব্যবধানে বসতি সম্প্রসারণের প্রয়োজনে, অবকাঠামো নির্মাণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের সবুজ গাছগাছালি প্রায় হারিয়ে গেছে।
ঢাকা শহরের কেন্দ্রীয় নগর এলাকায় বর্তমানে কংক্রিট আচ্ছাদিত এলাকা মোট এলাকার প্রায় ৮২ ভাগ এবং নীরাভূমির পরিমাণ মোট এলাকার প্রায় ৪.৩৮ ভাগ।
অপরদিকে প্রতিদিন যেন মানুষের ঢল আসছে রাজধানী ঢাকাতে। কিছু একটা পাওয়ার আশায়। তাই অন্য শহরের চেয়ে ঢাকায় জনসংখ্যা বাড়ছে খুব বেশি, কিছু জন্মসূত্রে আর কিছু অন্য শহর থেকে আসছে। গ্রাম থেকেও দলে দলে মানুষ আছে ঢাকায়। প্রতিদিন ঢাকার বাসিন্দা হিসেবে যোগ হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন।
তা ছাড়া সরকারি অফিস-আদালত, সেরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংকের হেড অফিস, ভারী ও মাঝারি শিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা কেন্দ্রীভূত হওয়ায় ঢাকায় আসা ছাড়া কিছু মানুষের সামনে কোনো বিকল্প পথ নেই। এ ছাড়া অনেক শিল্প-কলকারখানা রাজধানী এবং এর আশপাশে হওয়ায় বিশাল জনগোষ্ঠীর বাস রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায়, যার বিশাল প্রভাব পড়ছে বৃহত্তর ঢাকায়।
আমরা জানি, দেশের সব ধরনের সেবা রাজধানীকেন্দ্রিক, তাই মানুষও ভিড় জমাচ্ছে ঢাকায়। শিক্ষার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাইকোর্ট, আবহাওয়া অধিদফতর, বন ভবন, খাদ্য ভবন, পানি ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ঢাকায়।
এর ফলে যত দিন যাচ্ছে, শহরের পরিবেশ ততই খারাপ হচ্ছে। যদি ১৫-২০ বছর আগের সঙ্গে তুলনা করা হয়, তা এখনকার চেয়ে পরিবেশ ভালো ছিল। এর কারণ ভাগ করা এবং ভালো থাকার যত আয়োজন। কিন্তু সেভাবে কি ভালো থাকা হচ্ছে?
ঢাকাকে নেওয়া হয়েছে জিডিপির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে। এখানে নতুন নতুন আবাসিক প্রকল্প, শিল্প ও ব্যবসাকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু তা করতে গিয়ে যে পরিবেশকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে, নীরাভূমিগুলো ভরাট করে উন্নয়ন করা হচ্ছে, সবুজ গাছপালা উজাড় করে উন্নয়ন করা হচ্ছে, এমনকি শহর সম্প্রসারণ করতে গিয়েও পরিবেশকে ধ্বংস কর হচ্ছে, তা কারও খেয়ালে নেই। ঢাকায় নতুন নতুন যেসব আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে, সেখানে ন্যূনতম পরিবেশের মানদ- রক্ষা করা হয় না।
ঢাকা শহরে মানুষ আসে কর্মসংস্থানের আশায়। যদি ঢাকার বাইরে কর্মসংস্থান হতো, তা হলে ঢাকার বাইরের মানুষ ঢাকায় আসত না, এমনিতেই জনস্রোত থেমে যেত। পদ্মা সেতু হয়েছে, যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু হয়েছে। কিন্তু এই দুই সেতুর ওপারে শিল্পায়নের কথা ভাবা হয়নি। সেখানে শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে মানুষ কাজের সন্ধানে সেখানেই যেত। ঢাকায় ভিড় করত না। পদ্মা সেতু হওয়ার পর ঢাকা-মাওয়ার মধ্যবর্তী স্থানেও বড় বড় আবাসিক প্রকল্প গড়ে উঠেছে। যার লক্ষ্য এই ঢাকা শহর। দেশের উত্তরাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে হবে। ঢাকায় একটা মেট্রোরেল হয়েছে, এরপর হয়তো আরও পাঁচটা হবে। কিন্তু এসব মেগা প্রকল্প করে ঢাকাকে বাঁচানো যাবে না। মেগা প্রকল্পের জন্য এ শহর দেশের জন্য বোঝা হয়ে যাবে। যেভাবেই হোক ঢাকামুখী কর্মসংস্থান বাইরে নিয়ে যেতে হবে। তুরাগ ও কেরানীগঞ্জ প্রকল্প করলে হবে না।
উন্নয়ন বিকেন্দ্রীকরণের প্রথম শর্ত হলো প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ। আমাদের অনেক মন্ত্রণালয় আছে, যেগুলোর প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকার প্রয়োজন নেই। যেমন-
কৃষি, প্রাণিসম্পদ, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। হাওর উন্নয়ন বোর্ড বা পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকায় না থাকলেও চলে। এসব মন্ত্রণালয় ঢাকার বাইরে নেওয়া দরকার, তাই এখন দরকার প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ। এখনই যদি কাজগুলো না হয় তা হলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ হবে না। যানজট এবং পরিবেশ দূষণের কারণে অনেকেই এখন ঢাকায় থাকতে চায় না। যদি বিভাগ ও অন্য জেলাগুলোতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হয় মানুষ সানন্দে ঢাকা থেকে স্থানান্তরিত হবে। এতে এ নগরীতে ধীরে ধীরে যানজট কমবে, পরিবেশ দূষণের কারণগুলো দূর হবে, এ শহর বাসযোগ্যতা ফিরে পাবে।
মাত্র ৫০ বছর আগেও ঢাকা নগরী ছিল একটি সবুজ জনপদ, অন্য শহর থেকে এসে মানুষ মুগ্ধ হয়ে দেখত। অথচ কিছু দিনের ব্যবধানে এ শহর কংক্রিটের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
ঢাকা বলা হচ্ছে বসবাসের অযোগ্য নগরী, ইট-কংক্রিটের বস্তি। এ ধরনের নানা অনাকাক্সিক্ষত অভিধা সত্ত্বেও ঢাকার জনসংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না ঢাকামুখী জনস্রোতকে। বসবাসের অযোগ্য নগরী হওয়া সত্ত্বেও পেটের দায়ে মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে।
কর্মসংস্থানের সিংহভাগ সুযোগ ঢাকায় হওয়ায় বাধ্য হয়ে আসছে তারা। এ প্রবণতা ঠেকাতে হবে। রাজধানীর বাইরে কর্মসংস্থানের সব ধরনের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। শিল্প কারখানা স্থাপন করতে হবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। ছোট শহরগুলোতেও নাগরিক সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। রাজধানীর জনযট ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশে। এবং এ কাজটি করার সময় এখনই।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজ সুমহান বরকতময় মহাপবিত্র ২১শে জুমাদাল উলা শরীফ। সুবহানাল্লাহ! আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছহিবাতুল ইয্যাহ্- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)