নছীহতে কায়িম মাকামে উম্মাহাতুল মু’মীনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
৫টি বিষয়কে গণিমত মনে করতে হবে-১
২৫শে সফর, ১৪৪২ হিজরী (ইয়াওমুল ইসনাইন শরীফ)
, ০৫ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২০ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ عَمْرِو بْنِ مَـيْمُوْنَ الْاَوْدِىِّ رَضِىَ اللهُ تَــعَالٰى عَنْهُ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ وَ هُوَ يَعِظُهٗ اِغْتَـنِمْ خَـمْسًا قَـبْلَ خَـمْسٍ شَبَابَكَ قَـبْلَ هَرَامِكَ صِحَّتَكَ قَـبْلَ سُقْمِكَ غِنَائَكَ قَـبْلَ فَـقْرِكَ فَـرَاغَكَ قَـبْلَ شُغْلِكَ حَيَاتَكَ قَـبْلَ مَوْتِكَ. (رواه ترمذی و مشکوة)
হযরত আমর ইবনে মাইমুনা আওদিয়্যি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক ব্যক্তিকে নছীহত মুবারক করার সময় ইরশাদ মুবারক করলেন, পাঁচটি বিষয়কে পাঁচটি বিষয়ের পূর্বে গণিমত মনে করুন। ১. বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বে যৌবনকালকে ২. দারিদ্রতার পূর্বে সচ্ছলতাকে ৩. ব্যস্ততার পূর্বে অবসর সময়কে ৪. অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতাকে ৫. মৃত্যুর পূর্বে হায়াতকে।
[তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ]
মানুষ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে না। নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে হয় হক্ব আদায়ের মাধ্যমে। আর হক্ব আদায় হবে নিয়ামতের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে। মহান আল্লাহ পাক তিনি এই পাঁচটি বিষয়কে নিয়ামত হিসেবে দান করেছেন তাই এগুলোকে গণিমত মনে করে হক্ব আদায় করতে হবে। যেমন- যৌবনকালে শক্তি-সামর্থ্য থাকে তাই এসময় ইবাদত-বন্দেগী, রিয়াজত-মাশাক্কাত, যিকির-ফিকির ভালোভাবে করা যায়, কামাই-রোজগার করে দান-সদকার মাধ্যমে পরকালের পাথেয় সঞ্চয় করা যায়। কিন্তু বয়স হয়ে গেলে এ সমস্ত কাজ করা যায় না। রিয়াজত-মাশাক্কাত, যিকির-ফিকির না করলে ইখলাছ অর্জন করা যায় না। আর ইখলাছ অর্জন না হলে কোনো ইবাদত-বন্দেগী কবুল হয় না। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَا أُمِرُوْا إِلَّا لِـيَـعْـبُدُوا اللّٰـهَ مُـخْلِصِيْـنَ لَهُ الدِّيْنَ ﴿৫﴾ سورة البینات
তাদেরকে (বান্দা-বান্দী) আদেশ করা হয়েছে, তারা যেন মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান অনুযায়ী (সন্তুষ্টি মুবারকের উদ্দেশ্যে) ইখলাছের সাথে খালিছভাবে উনারই ইবাদত করে। [সূরা বাইয়্যিনাত শরীফ: ৫]
ইখলাছ অর্জনের উত্তম সময় হলো যৌবনকাল, সুস্থাবস্থা, সচ্ছলতা, অবসর সময় এবং হায়াত। এই নিয়ামতগুলোকে যিকির-ফিকির, রিয়াজত-মাশাক্কাত এবং ইবাদত-বন্দেগী ইত্যাদির মাধ্যমে কাজে লাগাতে হবে। তাহলে নিয়ামতের কদর বা হক্ব আদায় করা সম্ভব হবে। আর নিয়ামতের কদর করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিয়ামত বৃদ্ধি করে দিবেন। অপরদিকে যে ব্যক্তি নিয়ামতের কদর করবে না বা শোকরগুজারী করবে না, তার নিয়ামত বৃদ্ধি হবে না।
নিয়ামতের কদর করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাকে কি প্রতিদান দান করেন সে সম্পর্কে কিতাবে একটি ঘটনা বর্ণিত আছে- একদা মহান আল্লাহ পাক তিনি একজন নবী আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে বণী ইসরাইলের এক দম্পতিকে জানালেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সচ্ছলতা দান করতে চান, উনারা সেটা হায়াতের কোন সময়ে নিতে চান? যৌবন কালে নাকি বৃদ্ধ কালে। লোকটি তখন বললেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে; যেহেতু সে সময় শক্তি-সামর্থ্য থাকবে না, তখন সচ্ছলতা থাকলে ভালো হবে। কামাই রোজগার নিয়ে পেরেশান হতে হবে না শুধু ইবাদত বন্দেগী করে কাটানো যাবে।’ কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি জানালেন যে ওই ব্যক্তি যেন উনার আহলিয়ার সাথে পরামর্শ করে জানান। তখন ওই ব্যক্তি আহলিয়াকে বিষয়টি বিস্তারিত বললেন। তখন আহলিয়া বললেন যে, যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সচ্ছলতা দান করতে চান তাহলে যেন এখনই দান করেন। যেহেতু এখন আমাদের শক্তি-সামর্থ্য আছে, তাই আমরা আমাদের পূর্ণ শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে ইবাদত করে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সম্পূর্ন সময় ব্যয় করতে পারবো। যা বৃদ্ধ বয়সে করা সম্ভব হবে না। এখন আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকলে কামাই-রোজগার নিয়ে আমাদের সময় ব্যয় করতে হবে না। উভয়ে মিলে এই পরামর্শ করে জানিয়ে দিলেন যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাদেরকে সচ্ছলতা দান করতে চান তাহলে যেন এখনই দান করেন’। মূলত সেই দম্পতি উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে সন্তুষ্ট করার বিষয়কেই প্রাধান্য দিলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের এই উত্তর শুনে উনাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে উনাদের সম্পূর্ণ যিন্দেগীতেই সচ্ছলতা দান করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ মুবারক বাস্তবায়নে হযরত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের বেনযীর দৃষ্টান্ত
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যারা অনুসরণ করবেন উনারাও হাছিল করবেন সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি মুবারক
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইলমে তাসাউফ অর্জন করা ব্যতীত ইবাদত মূল্যহীন
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্মরণে এই উপমহাদেশের সরকারগুলোর উদ্যোগ কোথায়?
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উসীলায় এক কোটিরও বেশি বিধর্মী পবিত্র ঈমান লাভ করেন
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র সুন্নত যিন্দাকারী অর্থাৎ মুহ্ইউস সুন্নাহ
০৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আফসুস! পাঠ্যবইয়ে ‘স্বাস্থ্য শিক্ষার’ নামে শিশুদের লজ্জাহীনতার শিক্ষা দেয়া হচ্ছে!
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত ‘মাহে রজব’ উনার মর্যাদা মর্তবার অন্যতম কারণ ‘পবিত্র লাইলাতুর রগায়িব শরীফ’
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত গায়িবী নিদা মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘শীতকাল মু’মিনদের জন্য বসন্ত’
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র রজবুল হারাম মাসে রোযা রাখার ফযীলত
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নফসের অনুসরণকারী ধর্মব্যবসায়ীদের অনুসরণ করা জায়েজ নেই
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)