৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে অথচ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে পারে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
, ২১ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
দেশে ৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে বলে গত পরশু দাবি করেছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি।
এর ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্ম হারিয়েছে। ফলে যারা উদ্যোক্তা ছিলেন, তারা অনেকে এখন কাজ খুঁজছেন।
অথচ বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে যে বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে সেটি হল ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প। এটি শুধুমাত্র বাঙালির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রয়োগই নয়; বরং একসময় মানুষের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস ছিল এই শিল্প।
গ্রামের ঘরে ঘরে চরকি ঘোরার শব্দ, কিংবা পাট ও পাটজাত দ্রব্য দিয়ে হরেক রকম মনোমুগ্ধকর জিনিস আজও মনে করিয়ে দেয় যে জাতি হিসেবে বাঙ্গালি ঠিক কতটা শৌখিন। অথচ কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্যটিই এখন হারাতে বসেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ৪ কোটি বেকার রয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হতে পারে তাদের জন্য জীবিকার একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। সরকারী হিসেব মতে ইতোমধ্যে এই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ৩৩.৩৭ লাখেরও বেশি লোক নিয়োজিত। এই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দরিদ্র পেশাজীবীদের জন্য হতে পারে একটি সহায়ক পেশা। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হতে পারে বেকার মহিলাদের জন্য একটি অন্যতম সহায়ক পেশা। এর মাধ্যমে তারা পারিবারিক আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে। এই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের কাঁচামাল সাধারণ আসে স্থানীয়ভাবে। সুতরাং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয় সম্পদের যথাযথ সদ্ব্যবহার করা সম্ভব । অন্যদিকে স্বল্প পুঁজি ও দক্ষতা নিয়ে এই শিল্প গড়ে তোলা হয় বলে এই শিল্পের মাধ্যমে দ্রুত শিল্পায়ন সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপন বিষয়ে শিল্পনীতি ২০১০-এ বলা হয়েছে, কুটির শিল্প স্থাপনে তেমন কোন অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না।
কিন্তু ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের জন্য কিছু নিয়মকানুন পালন করতে হয়। যেমন মূলধনের পরিমাণ ১০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে, জনস্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিতে হবে। বিসিক কর্তৃক রেজিস্ট্রি হলে ক্ষুদ্র শিল্পগুলো ব্যাংক ঋণের সুযোগ পেয়ে থাকে।
শিল্পনীতি ২০১০-এ বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে তাঁতশিল্প রক্ষা, বেনারসি ও জামদানি পল্লীর মতো রেশম পল্লী গড়ে তোলাসহ তাঁতি, কামার, কুমার, মৃৎশিল্প, বাঁশ, বেত, তামা, কাঁসা ও পাটি শিল্পের উন্নয়নে। যদি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে পুঁজি, প্রশিক্ষণ, কাঁচামালের সহজলভ্যতা, যন্ত্রপাতি পাওয়ার সহজলভ্যতা, বিদ্যুৎ, পরিবহনসহ বিদ্যমান অন্যান্য সমস্যা সমাধান করা যায় তবে অদূর ভবিষ্যতে এই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দেশের জিডিপিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হবে দেশের বেকার সমস্যা সমাধান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। সরকার যদি শিল্পনীতির সঠিক বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয় তবে, মসলিন, জামদানি, নকশিকাঁথার মতো ঐতিহ্যবাহী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পগুলো ফিরে পাবে তাদের হারানো গৌরব এবং বাংলাদেশ ফিরে পাবে তাদের হারানো ঐতিহ্য, গৌরব ও সংস্কৃতি। বাংলাদেশের জিডিপিতে গড়ে প্রায় ২০ ভাগ অবদান রাখছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বা এসএমই খাত। দেশের প্রায় ১ কোটি উদ্যোক্তার মধ্যে ৯৫ ভাগই এসএমই খাতের। কর্মসংস্থানের সিংহভাগই হচ্ছে এ খাতে।
প্রসঙ্গত, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারকে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই শিল্পখাত দুইটি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে এই শিল্পখাতগুলো যাতে সঠিকভাবে চলতে পারে তার জন্য এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা অতি জরুরি।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করা উচিত। বিশেষ করে কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক রিফাইন্যান্স পলিসি হাতে নেয়া, যাতে উদ্যোক্তা কিংবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কম সুদে ঋণ পেতে পারে। এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা অনেকটা স্বাচ্ছ্বন্দ্যে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
এছাড়াও কাজের মাঝে হয়রানি রোধ বিষয়ে সে বলে, “বর্তমানে ব্যাংক অথবা বিভিন্ন নন-ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান কিংবা এনজিও থেকে ঋণ নেওয়ার সময় বিভিন্ন ঝামেলা পোহাতে হয়। অনেক সময়ই দেখা যায় জামিনদার ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেয় না। অন্যদিকে সময়মতো জামিনদার না পেলে ব্যবসায় কার্যক্রমও সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তাই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশে অবশ্যই এইসব হয়রানি বন্ধ করতে হবে।”
ব্যবসায়ে একটি কথা আছে- প্রচারেই প্রসার। অর্থাৎ কোনো পণ্য মানুষ তখনই গ্রহণ করে যখন সেই পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি পণ্যটি সম্পর্কে ভোক্তাদের মাঝে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে। আর এক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন কিংবা বিভিন্ন ধরণের প্রচার কার্যক্রম গ্রহণ জরুরি। সরকারি বা বেসরকারি প্রচারমাধ্যমগুলো যদি এসব শিল্পের কথা প্রচার করে, তাহলে মানুষের মধ্যে এসব পণ্যগুলো কেনার জন্য আগ্রহ তৈরি হবে। পাশাপাশি সরকারি বা স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন বাজারের আয়োজন করা গেলে সেটিও এসব শিল্পের বিকাশে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দেশীয় শিল্প বিকাশের জন্য বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগী দেশগুলো উদ্যোক্তাদের যে ধরনের আর্থিক সুবিধা দিচ্ছে, দেশীয় উদ্যোক্তাদেরও একই ধরনের সহায়তা দিতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিনাসুদে ঋণ দিলে দেশের অর্থনীতির সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
তবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকার বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি জনসাধারণকেও কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর সেটি হল নিজ দেশের পণ্য কেনার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করা। প্রত্যেকে যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় এবং প্রতিদিনের জীবনে পণ্যগুলোকে ব্যবহার করে, তাহলে একদিকে যেমন এসব শিল্পের বিকাশ ঘটবে; অন্যদিকে তেমনি বিশ্বদরবারে বাঙ্গালি ঐতিহ্য ও রুচিবোধেরও পরিচিতি বাড়বে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্যাংক গ্রাহকদের খালি হাতে বা নাম মাত্র অর্থে ফেরানো যাবে না কথিত অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিশ্চয়তার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিশ্বে জ্বালানীর দাম এমনেই কমছে পাশাপাশি শুধুমাত্র কাঠামো সংস্কারই ১৫ টাকা কমানো সম্ভব হলেও সেদিকে নজর দিচ্ছে না কেন অন্তর্বর্তী সরকার? জ্বালানী তেলের দাম কমালে দ্রব্যমূল্যের দাম সহজেই কমবে
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশে মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে সম্মানিত ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ আরাকান আর্মিকে এক্ষুনি প্রতিহত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশে সাড়ে ৩ কোটি শুধু শিশুই সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং সব প্রাপ্ত বয়স্করাও ক্ষতিগ্রস্থ সিসার ক্ষতি থেকে বাঁচতে সুন্নতী তৈজসপত্র ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্রের জিনিস ক্রয়ে নিবেদিত হতে হবে ইনশাআল্লাহ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মহাব্যার্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আরো ক্ষমতা দিয়ে প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জ্বালানী তেলের দাম এক্ষুনি কমাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনেক কিছু করার প্রচারনা চালালেও জিডিপি এবং দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি অর্থনীতির লাইফ লাইন এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার কিছুই করছে না
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সিঙ্গাপুর, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ বাংলাদেশেও বিভিন্ন মহলে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী জোরদার হচ্ছে, সংস্কারের দাবীদার সরকার কী করে নির্বিকার থাকতে পারে?
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হয়রানী জান-মাল এবং সম্মান হিফাজতে সরকারকে এক্ষুনি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পাচারকৃত ১৭ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে শামুকের মত ধীর গতি বরদাশতের বাইরে
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)