হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-৩৮)
, ০৫ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৫ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১০ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
هن لباس لكم وانتم لباس لهن
“তারা (মহিলারা) হচ্ছে তোমাদের আবরণ, তোমরাও তাদের আবরণ। তারা তোমাদের হিফাযতকারী, তোমরাও তাদের হিফাযতকারী। একজন আহাল বা স্বামীর হিফাযতকারিণী হচ্ছে তার আহলিয়া বা স্ত্রী। আর আহলিয়া বা স্ত্রীর হিফাযতকারী হচ্ছে আহাল বা স্বামী। মহান আল্লাহ্ পাক তিনি সেটা উল্লেখ করে দিয়েছেন, যাদের সামর্থ রয়েছে তারা বিবাহ-শাদী করে নাও। আর যাদের সামর্থ নেই, তারা রোযা রেখে নিজেদেরকে হিফাযত করো, নিজেদেরকে কন্ট্রোল করো। কিন্তু কখনোই মহান আল্লাহ্ পাক উনার যে হুকুম রয়েছে-
ويحفظوا فروجهم – ويحفظن فروجهن
“মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বলেন, ‘পুরুষ ও মহিলা তারা উভয়ে যেন তাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে। ” এর খিলাফ তোমরা কখনো করো না। মহান আল্লাহ্ পাক তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, এর থেকে প্রত্যেককেই সর্তক থাকতে হবে। এরপর মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ঘোষণা করেন, ذلك ازكى لهم এটা হচ্ছে তাদের পবিত্রতার কারণ। এটার কারণে তোমাদের পবিত্রতা হাছিল হবে। তোমাদের অন্তরের সাফাই বা ইছলাহ্ যেটা রয়েছে সেটা হাছিল হবে। কাজেই তোমরা সেটা গ্রহণ করো।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابن عمر رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال ان المرأة عورة فاذا خرجت من بيتها استشرفها الشيطان وانها لا تكون اقرب الى الله منها فى قعر بيتها
আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে দেখ, নিশ্চয়ই মেয়েরা পর্দার অধীন থাকবে। একজন মহিলা অথবা একজন মেয়ে যখন ঘর থেকে বের হয়ে যায় তখন শয়তান তার দিকে উঁকি-ঝুঁকি মারতে থাকে তার দ্বারা কোন পাপ কাজ করানোর জন্য। তবে একজন মহিলা ঘরে থেকে মহান আল্লাহ্ পাক উনার যতটুকু নৈকট্য লাভ করতে পারবে, ঘর থেকে বের হয়ে ততটুকু লাভ করতে পারবে না। কাজেই খুব সাবধান থাকতে হবে।
যে বের হবে তার জন্য জায়িয রয়েছে কতটুকু? এবং কতটুকু জায়িয নেই? সে প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, মহান আল্লাহ্ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যেহেতু প্রত্যেক পুরুষ এবং মহিলার জন্য তার পবিত্রতা বজায় রাখতে হবে। এটা মহান আল্লাহ্ পাক উনার তরফ থেকে তাদেরকে সে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর খিলাফ যে করবে সেজন্য তাকে জবাবদিহী করতে হবে।
كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ
“প্রত্যেকেই রক্ষক সে তার রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জবাবদিহী করবে। ” কাজেই সাবধান থাকতে হবে পর্দার ব্যাপারে। মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আমাদেরকে যেন পর্দা পরিপূর্ণ করার তাওফিক দান করেন। যেহেতু পর্দা মহান আল্লাহ্ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে ফরয করে দেয়া হয়েছে। কাজেই তার ইলিম অর্জন করাও ফরয। যতটুকু ইলিম অর্জন না করলে পর্দার ফরয রক্ষা করা সম্ভব নয় ঠিক ততটুকু ইলিম অর্জন করা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই মহান আল্লাহ্ পাক উনার হুকুম (নির্দেশ) মুবারক আর আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক প্রত্যেক বান্দা এবং উম্মতের জন্য যথাযাথ পালন করা, আমল করা দায়িত্ব এবং কর্তব্য। মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বিশেষ করে মু’মিন নর এবং নারীর জন্য নির্দেশ করেছেন, প্রথমে তোমরা- يغضوا من ابصارهم তোমাদের দৃষ্টি অবনত করো, অবনত রাখ।
ويحفظوا فروجهم এবং লজ্জাস্থানকে হিফাযত করো। ” ঠিক মু’মিন নারী যারা তাদেরকেও বলেছেন-
يغضضن من ابصارهن
মু’মিন নারীদেরকে বলেছেন যে, “তোমরা তোমাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখ ويحفظن فروجهن. এবং নিজেদেরকে হিফাযত করো। মহান আল্লাহ্ পাক তিনি এরপর বলেছেন মু’মিন পুরুষদের সম্পর্কে, ذلك ازكى لهم “এটা তাদের জন্য পবিত্রতার কারণ। ” মূলতঃ হুকুম নর-নারী উভয়ের জন্যই। নুযূল খাছ হুকুম আম। এটা প্রত্যেকের জন্যই পবিত্রতার কারণ। অর্থাৎ মহান আল্লাহ্ পাক উনার রেযামন্দি আর আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের কারণ।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)