হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-৩৬)
, ২০ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
তদ্রুপ শয়তানের ওয়াস্ওয়াসা তো একবারে ক্রিয়া করবেনা। সে বেপর্দা হয়ে মনে করে যে, অন্তর তো আমার ঠিক রয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। কস্মিনকালেও এটা শুদ্ধ নয়। প্রাথমিক অবস্থায় সে নিজেকে কন্ট্রোল করবে। এরপর সে আর পারবেনা। পর্যায়ক্রমে ওয়াস্ওয়াসায় পড়ে যাবে।
কাজেই খুব সাবধান থাকতে হবে, চোখের দৃষ্টি থেকে। সেটাই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বলে দিয়েছেন, যা পুরুষ এবং মহিলাদেরকে বলে দিয়েছেন-
قل للمؤمنين يغضوا من ابصارهم ويحفظوا فروجهم وقل للمؤمنت يغضضن من ابصارهن ويحفظن فروجهن.
বলে দিন, ‘পুরুষ এবং মহিলাদেরকে তারা যেন দৃষ্টি অবনত রাখে। এবং তারা যেন তাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে।’ কি করে হিফাযত করবে? এর তাফসীরে বা ব্যাখ্যায় অনেক কিছু বলা হয়েছে। মূল বিষয় যেটা সেটা হচ্ছে, পবিত্র হাদীছ শরীফে এসেছে-
قال النبى صلى الله عليه وسلم من نظر الى محاسن امراة اجنبية عن شهوة صب فى عينيه الانك يوم القيامة
আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কেউ যদি কোন অপরিচিত মহিলার সৌন্দর্যের প্রতি দৃষ্টি করে, খাহেশাতে নফসানিয়ত বা খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে যদি কেউ দৃষ্টি করে; যে দৃষ্টি করবে, মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ক্বিয়ামতের দিন তার উভয় চোখের মধ্যে সীসা ঢেলে দিবেন। নাউযুবিল্লাহ্! সীসা ঢেলে দিবেন, সে কেন দৃষ্টি করেছে। এখানে মহান আল্লাহ্ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে, কোন বেগানা মহিলার প্রতি অর্থাৎ তার সৌন্দর্যের প্রতি যদি কেউ দৃষ্টি করে, দৃষ্টি করার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বিয়ামতের দিন তার চোখের মধ্যে সীসা ঢেলে দিবেন। কাজেই খুব সাবধানের বিষয়। সেজন্য অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابى سعيدن الخدرى رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لاينظر الرجل الى عورة الرجل ولاتنظر المرأة الى عورة المرأة ولايفضى الرجل الى الرجل فى ثوب واحد ولاتفضى المرأة الى المرأة فى ثوب واحد
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন যে দেখ, কোন পুরুষ যেন আরেক পুরুষের যে সতর রয়েছে, সে দিকে দৃষ্টি না করে। কতটুকু তার সতরের হুকুম দেয়া হয়েছে? আমাদের হানাফী মাযহাবে ‘নাভীর নীচ থেকে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত’ এটা সতরের অন্তর্ভুক্ত। এ সতরের প্রতি যেন কেউ দৃষ্টি না করে। অনুরূপ একজন মহিলা যেন আরেকজন মহিলার সতরের দিকে দৃষ্টি না করে। এক মহিলার জন্য আরেক মহিলার সতর হচ্ছে, ‘নাভীর নীচ থেকে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত’ আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক। পুরুষের কাছে পুরুষের যতটুকু সতর, ঠিক মহিলার কাছে মহিলার জন্য ততটুকু সতর। এরপর বলা হয়েছে, দু’জন পুরুষ যেন এক চাদরের নীচে অবস্থান না করে। তদ্রুপ দু’জন মহিলাও যেন এক চাদরের নীচে না শোয়। প্রত্যেকেই যেন আলাদা হয়ে শোয়, কেউ যেন কারো সতরের প্রতি দৃষ্টি না করে এবং এমন কোন কাজ না করে যাতে সতরের প্রতি দৃষ্টি পড়ে যেতে পারে। সেটা যাতে না হয়। একই চাদরের নীচে কেউ যদি অবস্থান করে, সেটা উভয়েরই সতরের অর্থাৎ পর্দার খিলাফ হতে পারে। আরো অনেক কিছু সেখান থেকে অঘটন ঘটে যেতে পারে। সেটা নিষেধ করে দেয়া হয়েছে যে, প্রত্যেকেই তার সতরকে হিফাযত করবে, যার যার সতরের জন্য সে জবাবদিহী করবে, একজনের জন্য আরেকজন জবাবদিহী করবেনা।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সন্তানদের ও পরিবারের সকলকে সালাম দেয়া শিক্ষা দান করুন
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৪)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)