হাসপাতালের বেশিরভাগ যন্ত্রপাতি বিকল -চিকিৎসাবঞ্চিত রোগীরা
, ২৪শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৮ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০২ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) দেশের খবর
চিকিৎসাসেবায় কুড়িগ্রামবাসীর একমাত্র ভরসাস্থল ২৫০ শয্যার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু হাসপাতালটি নিজেই যেন ‘রোগাক্রান্ত’। জনগণের টাকায় কেনা বেশিরভাগ চিকিৎসা যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে পড়ে আছে। একদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকট অন্যদিকে যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালে ল্যাপারোস্কপি, ইকো, ইটিটি, আর্থোস্কপি, অ্যান্ডোস্কপি, ইসিজি, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনসহ অতিপ্রয়োজনীয় কয়েকটি চিকিৎসা যন্ত্রপাতি রয়েছে। তবে এসবের বেশিরভাগ যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে আছে। ইটিটি মেশিন সচল থাকলেও সরঞ্জামের অভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। অ্যান্ডোস্কপি মেশিন সচল থাকলেও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অনাগ্রহে এর চিকিৎসা পান না রোগীরা।
হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, হাসপাতালের চিকিৎসকরা কয়েকটি যন্ত্রের ব্যবহার জানলেও অতিরিক্ত দায়িত্ব ভেবে এসব ব্যবহারে অনীহা তাদের। অথচ ব্যক্তিগত চেম্বার কিংবা ক্লিনিকে একই যন্ত্রে তারা রোগ নির্ণয়ের কাজ করছেন।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, লোকবলের অভাব এবং ত্রুটির কারণে এসব যন্ত্রের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রায় এক দশক আগে ল্যাপারোস্কপি (পেট কাটা ছাড়াই পিত্তথলি ও পাকস্থলীর পাথর অপসারণ) মেশিন দেয় সরকার। ২০১৩ সালের পর এই যন্ত্রের কোনও সুবিধা পাননি রোগীরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে যন্ত্রটি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের এক কোণে অযতেœ পড়ে আছে। কুড়িগ্রামের অন্য কোনও হাসপাতালে এই যন্ত্র নেই। ফলে পাকস্থলীর অপারেশনের জন্য জেলার রোগীকে রংপুরে যেতে হয়।
হাসপাতালে ইকো মেশিন থাকলেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে এর সুবিধা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে হৃদরোগে আক্রান্তদের ইকোকার্ডিওগ্রামের প্রয়োজন হলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হচ্ছে রোগীদের। এ সুযোগে গরিব রোগীদের পকেট কাটছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা শহরের চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ইকোকার্ডিওগ্রামের সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে দুটিতে নিয়মিত ইকোকার্ডিওগ্রাম করেন জেনারেল হাসপাতালের দুই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালট্যান্ট ডা. মুহম্মদ সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালের ইকো মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এটি মেরামতের জন্য বলা হলেও করা হয়নি। ফলে রোগীরা সেবা নিতে পারছেন না। কুড়িগ্রামের মতো দরিদ্র এলাকায় হাসপাতালে আসা রোগীদের অনেকে বাইরে পরীক্ষার সামর্থ্য রাখেন না। ফলে মেশিনটি মেরামত করা জরুরি।’
পাকস্থলী ও খাদ্যনালী পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত অ্যান্ডোস্কপি মেশিনটি ব্যবহারের জন্য হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। মেডিসিন বিভাগে কর্মরত ডা. মঈনুদ্দিন আহমেদ এই যন্ত্র ব্যবহারে পারদর্শী হলেও এই কাজে আগ্রহ নেই তার। তবে তিনি বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একই যন্ত্রে নিয়মিত পরীক্ষা করান বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ডা. মঈনুদ্দিন বলেন, ‘ওয়ার্ডে রোগী দেখার পর অ্যান্ডোস্কপি করার সুযোগ থাকে না। আমি ওই যন্ত্রের জন্য নিযুক্ত চিকিৎসকও নই। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সপ্তাহে একদিন অ্যান্ডোস্কপি করি।’
শুধু চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নয়, জেলার এই চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রায় আড়াই মাস ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, পাঁচ সিসি সিরিঞ্জ ও ডিজিটাল এক্স-রে ফ্লিম সরবরাহ নেই। ফলে প্রতিদিন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। জীবন বাঁচাতে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বাইরে থেকে এসব সরঞ্জাম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন হতদরিদ্র রোগীরা।
এসব যন্ত্রপাতিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ কেমন?
২০১৩ সালে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ার হোসেন। বর্তমানে রংপুরে কর্মরত। তিনি থাকাকালীন ২০১৩ সালে ল্যাপারোস্কপি মেশিন ব্যবহার করে অপারেশন হলেও গত ৯ বছরেও এই মেশিনের কোনও ব্যবহার হয়নি।
মুঠোফোনে ডা. আনোয়ারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে এই মেশিন দিয়ে শল্যচিকিৎসায় ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। অথচ কুড়িগ্রাম হাসপাতালে এই মেশিন থাকা সত্ত্বেও রোগীদের রংপুরে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে এই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
জেলা শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছাড়া কোথাও অ্যান্ডোস্কপি ও ইটিটি সুবিধা নেই। সেখানে অ্যান্ডোস্কপি করেন জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মঈনুদ্দিন আহমেদ এবং ইকোকার্ডিওগ্রাম ও ইটিটি করান ডা. মুহম্মদ সাজ্জাদুর রহমান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে অ্যান্ডোস্কপি করাতে একজন রোগীকে দেড় হাজার টাকা এবং ইটিটি করাতে আড়াই হাজার টাকা খরচ করতে হয়। আর ইকোকার্ডিওগ্রাম করাতে ১৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। হাসপাতাল ছাড়া জেলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে আর্থোস্কপি ও ল্যাপারোস্কপি মেশিন নেই।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন বলেন, ‘ল্যাপারোস্কপি মেশিনটির বিষয় আমার জানা ছিল না। অন্য সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয়। যে কয়েকটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে, সেগুলো মেরামতের জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।’
সিরিঞ্জ ও এক্স-রে ফিল্ম সংকটের কথা স্বীকার করে শহিদুল্লাহ লিংকন বলেন, ‘সরকারিভাবে এগুলোর সরবরাহ নেই। খুব শিগগিরই পাবো বলে আশা করছি।’
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আরও ৫ ব্যাংকের এমডি বাধ্যতামূলক ছুটিতে
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ভারত থেকে বাংলাদেশি নারীর বিনিময়ে আসে গরু
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সূর্য উঠলেও আবারও শৈত্যপ্রবাহের সময় জানালো আবহাওয়া অফিস
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
এস আলমকে লেলিয়ে দিয়ে ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করেছে
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রতিদিন গড়ে ২৫০ বিদেশির আবেদন
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৮০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন:
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তিন পার্বত্য জেলার ইটভাটার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পঁচিশে ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ভুল হলে নিউজ না করে আমাদের জানান, ঠিক করে নেব -সিইসি
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শক্তিশালী ‘পুলিশ কমিশন’ গঠনের প্রস্তাব আইজিপির
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তারেক রহমানের ৪ মামলা বাতিলের রায় বহাল
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারিনি -সালাহউদ্দিন
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)