আলোকিত সম্মানিত মহিলা ছাহাবী :
হযরত ফুরাইআহ বিনতে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা
, ০৫ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যারা বাইয়াতে রিদ্বওয়ানে অংশ নিয়েছেন উনারা জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
হযরত ফুরাইআহ বিনতে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি পবিত্র বাইয়াতে রিদ্বওয়ানে অংশ গ্রহনের গৌরব হাছিল করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ছাহাবী হযরত মালিক বিন সিনান বিন উবাইদ আনছারী খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কন্যা। হযরত মালিক বিন সিনান বিন উবাইদ আনছারী খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছিলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো জীবন্ত জান্নাতী দেখতে চায় তিনি যেন উনাকে দেখে। ’
হযরত ফুরাইআহ বিনতে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ভাই ছিলেন বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি পবিত্র ইসলামী জ্ঞান ও পবিত্র হাদীছ শরীফ শাস্ত্রে বিশেষভাবে বিজ্ঞ ছিলেন।
হযরত ফুরাইআহ বিনতে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার আরেক ভাই ছিলেন হযরত কাতাদা বিন নু'মান আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনিও সম্মানিত মুসলিম বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। তিনি পবিত্র বদর এবং পবিত্র উহুদ জিহাদে যুদ্ধ করেছিলেন। শত্রুদের আঘাতে উনার চক্ষু মুবারক বেরিয়ে গেলে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় নূরুদ দারাজাত মুবারকে (হাত মুবারকে) চক্ষুটি যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করে দেন। তখন উনার চক্ষু মুবারক আগের থেকে আরও বেশি তীক্ষè দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন ও সুন্দর হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র উহুদ জিহাদ থেকে বিজিত সম্মানিত মুসলিম বাহিনী যখন ফিরে আসেন তখন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আবু সাঈদ বিন খুদরি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখে সান্তনা দান করেন, ধৈর্যধারণ এবং সাহস রাখতে বলেন। কারণ উনার সম্মানিত পিতার পবিত্র শাহাদাত উনাদের জন্য বরকতের কারণ হবে। তিনি বাড়ীতে গিয়ে বোন হযরত ফুরাইআহ বিনতু মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে সম্মানিত পিতার পবিত্র শাহাদাতের সংবাদ এবং মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুস্থ ইতমিনান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করলেন। তিনি সম্মানিত পিতার পবিত্র শাহাদাতের সংবাদ শুনে উত্তমরূপে ধৈর্যধারণ করলেন এবং মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিরাপদে ফিরে এসেছেন জেনে আনন্দিত হলেন।
হযরত সাহ্ল বিন রাফি’ বিন বাশির খাযরাযি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে হযরত ফুরাইআহ বিনতু মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার শাদী মুবারক হয়। পবিত্র মদিনা মুনাওওয়ারা শরীফ উনার নিকটেই উনার আহাল নিজের গোলামদের হাতে শহীদ হন। উনার আহালের শাহাদাতের পরে তিনি একাকী হয়ে পড়েন। তিনি উনার পিতার বাড়িতে ফের আসতে নিয়ত করেন। এ ব্যাপারে তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র খিদমতে সম্মানিত পিতার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার হুকুম সর্র্ম্পকে জানতে চাইলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে সেখানে চার মাস দশ দিন অবস্থান করতে বলেন। হযরত ফুরাইআহ বিনতে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আদেশ অনুযায়ী তিনি সেখানে অবস্থানের পর যথাসময়ে সম্মানিত পিতার বাড়িতে ফিরে আসেন এবং বাকি জীবন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রচারে কাটিয়ে দেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র খিলাফতকালে এক মহিলার আহাল ইন্তিকাল করেন। উনার ইদ্দতের সময়কাল কত হবে এ বিষয়ে জানার জন্য তখন হযরত ফুরাইআহ বিনতে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে পবিত্র বিচারালয়ে বিচারক দাওয়াত দেন। মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে যেরূপ বলেছিলেন, তিনি সেখানে তদ্রুপ বর্ণনা করেন। তিনি প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারিণী ছিলেন। মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে কোনো কথা মুবারক একবার শোনার পর তিনি তা যথাযথভাবে উনার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করতেন। তাই সম্মানিত হাদীছ শরীফ বিশারদগণ বিশেষ করে ইদ্দতের আহকামের ক্ষেত্রে উনার বর্ণিত পবিত্র হাদিছ শরীফকেই সর্বাধিক গ্রহণ করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা দয়া দান ইহসান মুবারক করে সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেককে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বতে পবিত্র হাদিছ শরীফ শিক্ষা করার এবং প্রচার প্রসার করার তাওফিক দান করেন। আমীন।
-আনজুম রেহনুমা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম চর্চায় কতবেশি মনোযোগ!
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
শিশু সন্তান জন্ম গ্রহণের ৭ম দিনে সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দেনমোহর নিয়ে কিছু কথা.... (১)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (১)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইতিহাস কথা বলে: নারী নির্যাতনের সাথে বিধর্মীদের সম্পৃক্ততার অনুসন্ধানে
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাত-পা, চেহারা খোলার মাধ্যমে অবশ্যই সৌন্দর্য প্রকাশ পায়
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইতিহাস কথা বলে- ‘বোরকা’ বাঙালি মুসলমানদের আদি সংস্কৃতি
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আপনি চান, আপনার সন্তান সুশ্রী এবং সুন্দর হয়ে জন্মগ্রহণ করুক?
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে ব্যক্তিত্ব বা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘শরয়ী পর্দা’ মেয়েদের অন্তরের পবিত্রতার সাথে সাথে বাহ্যিক সৌন্দর্য্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি মুবারক
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)