স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত যিকির মুবারক, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছেন
, ২২ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২৬ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১০ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ.
অর্থ: “আর (আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি আপনার সম্মানিত যিকির মুবারক, সম্মানিত আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলাম নাশ্রহ্ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত যিকির মুবারক, আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতটুকু বুলন্দ করেছেন, এটা তিনিই সবচেয়ে ভালো জানেন। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কে যৎসামান্য আলোচনা করা হলো-
স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই উনার যিকির বা আলোচনা মুবারক উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত যিকির বা আলোচনা মুবারক করা সমস্ত সৃষ্টি জগতের উপর ফরয করে দিয়েছেন:
‘পবিত্র সূরা আলাম নাশ্রহ্ শরীফ উনার ৪নং আয়াত শরীফ’ উনার ব্যাখ্যায় বিভিন্ন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাব মুবারক, তাফসীরগ্রন্থ, সীরাতগ্রন্থ ও অন্যান্য কিতাবে ছহীহ সনদে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَتَانِي جِبْرِيلُ فَقَالَ إِنَّ رَبِّي وَرَبَّكَ يَقُولُ لَكَ كَيْفَ رَفَعْتُ ذِكْرَكَ قَالَ اللَّهُ أَعْلَمُ قَالَ إِذَا ذُكِرْتُ ذُكِرْتَ معي.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বলেন, নিশ্চয়ই আমার রব তা‘য়ালা এবং আপনার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, আমি কিভাবে আপনার সম্মানিত যিকির বা আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছি? তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি অধিক ভালো জানেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِذَا ذُكِرْتُ ذُكِرْتَ معي.
যখন আমার সম্মানিত যিকির মুবারক বা আলোচনা মুবারক করা হয়, তখন আমার সাথে আপনারও সম্মানিত যিকির বা আলোচনা মুবারক করা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ ইবনে হিব্বান, মুসনাদে আবী ইয়া’লা, ত্ববারনী, ইবনে আবী হাতিম, ত্ববারী, ইবনে মারদাওয়াইহ, আবূ না‘ঈম, আব্দুর রাজ্জাক্ব, সাঈদ ইবনে মানছূর, খছায়িছুল কুবরা, দুররে মানছূর, শিফা’ শরীফ, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ, ইবনে কাছীর, বাগবী, ফাতুহল ক্বদীর, তাফসীরে মাওয়ারদী, তাফসীরে মাযহারী, লাওয়ামি‘উল আনওয়ার, রূহুল মা‘য়ানীসহ আরো বহু কিতাব। সুবহানাল্লাহ!)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বিভিন্ন কিতাবে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত রয়েছে। ‘ছহীহ ইবনে হিব্বান শরীফ’-এ যেই সনদে বর্ণিত রয়েছে সেই সনদের সমস্ত রাবীগণ ছিক্বাহ। যদিও একজন রাবী হযরত র্দারাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ব্যাপারে কাট্টা ওহাবী গোমরাহ গ-মূর্খ আলবানী ও তার অনুসারীরা যঈফ বলেছে। তবে সমস্ত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাকে ছিক্বাহ বলেছেন। এ সম্পর্কে হযরত ইমাম ইবনে মুলক্বিন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
وَثَّقَهُ يَحْيَى بن معِين وَابْن حبَان وَحسن لَهُ التِّرْمِذِيّ وَصحح أَيْضا وَادَّعَى الْحَاكِم فِي مُسْتَدْركه الِاتِّفَاق عَلَى صدقه.
অর্থ: “হযরত র্দারাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে হাকিমে হাদীছ হযরত ইয়াহ্ইয়া ইবনে মু‘ঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা ‘ছিক্বাহ’ বলেছেন। হযরত ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদেরকে ‘হাসান’ বলেছেন, আবার ছহীহও বলেছেন। হযরত ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ হাকিম নীশাপূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, হযরত র্দারাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছিদক্ব তথা সত্যবাদিতার ব্যাপারে ইজমা’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (তুহ্ফাতুল মুহ্তাজ ইলা আদিল্লাতিল মিনহাজ ১/৩০৬-৩০৭)
হযরত ইবনে হাজার আসক্বালানী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
وَهَذَا أَخْرَجَهُ الشَّافِعِيُّ
অর্থ: “এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও বর্ণনা করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল বারী ৮/৭১২)
আল্লামা কুস্ত্বলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
وصححه ابن حبان.
অর্থ: “হযরত ইমাম ইবনে হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনাকে ছহীহ বলেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ)
‘লাওয়ামি‘উল আনওয়ার শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
أخرج الطبراني وصححه
অর্থ: “ইমাম ত্ববারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করেছেন এবং ছহীহ বলেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ২/২৯৬)
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন-
لَا يُذْكَرُ اللَّهُ إِلَّا ذُكِرَ مَعَهُ.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত যিকির (আলোচনা) মুবারক করা হয় না, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত যিকির (আলোচনা) মুবারক করা ব্যতীত।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল ক্বাদীর ৫/৫৬৫)
সে জন্যই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফসহ আযান-ইক্বামাত, নামায, মুনাজাত, খুতবা, রোযা, হজ্জ, যাকাত এক কথায় সমস্ত ইবাদত-বন্দিগীতে আবশ্যিকভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত যিকির মুবারক উনার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত যিকির মুবারক করতে হয়। সুবহানাল্লাহ! এছাড়া কোন ইবাদত-বন্দেগীই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কবুল হয় না। সুবহানাল্লাহ! এটা স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলের উপর ফরয করে দিয়েছেন। যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ!
-মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীক্ব
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৭)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৪)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৬)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক (৩)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)