স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা:
সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা ও সময়ানুবর্তিতা
, ০৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
মূলত এই সম্মানিত মাদ্রাসার শাস্তি প্রদানের পদ্ধতি ও উদ্দেশ্য অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে সম্পূর্ণই আলাদা। এ মাদ্রাসায় প্রথমে এরকম নিয়ম ছিল যে, কেউ কোনো অন্যায় বা অনিয়ম করলে শাস্তিস্বরূপ তাকে ‘নফল নামাজ পড়তে হতো। অনিয়মের মাত্রা বেশি হলে সে হারে নামাজের রাকায়াতের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হতো। এরপর এ নিয়মের পরিবর্তে আরেকটি শাস্তি প্রদানের পদ্ধতি জারী হয় তা হলো ‘যিকির করা’। এরূপ ব্যতিক্রমধর্মী শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, “কোনো অনিয়মের শাস্তি হিসেবে বেত্রাঘাত করলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয়। যা প্রকৃতপক্ষে তাদেরকে সংশোধন করার ক্ষেত্রে কোনো কার্যকরী সমাধান হতে পারে না। সাধারণত মানুষ শয়তানের প্ররােচনার কারণেই যাবতীয় অনিয়ম বা গুনাহর কাজ করে থাকে তাই যখন সে তার গুনাহ বা অনিয়মের শাস্তিস্বরূপ বেশি বেশি নামাজ পড়ে আরও অধিক নেকী হাসিল করা শুরু করবে তখন সেটা শয়তানের গাত্রদাহের কারণ হবে, সে দমে যাবে”। পরবর্তীতে তিনি আরও সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করে দেখেন যে, “মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরই হলো একমাত্র মাধ্যম যা করলে শয়তান অন্তর থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, অন্তরে বসে থেকে ওয়াসওয়াসা দিতে পারে না। তাই যে কোনো অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ যিকির করলে সেটাই হবে সবচেয়ে কার্যকরী শাস্তি পদ্ধতি”। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি চান না যে আমরা কষ্ট পেয়ে সংশোধিত হই বরং তিনি চান যে আমরা আমলের দ্বারা সংশোধিত হই। আর এজন্যই তিনি আমাদের জন্য এমন শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন, যে শাস্তির মাধ্যমে সব সমস্যা একদম গোড়া থেকে মূলোৎপাটিত হবে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি আমাদেরকে পা হতে মাথা পর্যন্ত সুন্নত মুবারক উনার রঙ্গে রঙ্গিন করছেন এবং দায়েমী সুন্নত পালনের জন্য তাগিদ দিচ্ছেন। তিনি আমাদেরকে আল্লাহওয়ালী হিসেবে গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর কায়িনাতের বুকে এটাই হচ্ছে একমাত্র মাদরাসা যেখানে ইলমে তাছাউফ শিক্ষা দেয়া হয়।
এই সম্মানিত মাদ্রাসায় আরো কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে, যেমন এখানে প্রতিদিন ক্লাস শুরুর পূর্বে ছাত্রীগণ সমবেত কণ্ঠে একটি বিশেষ আরবী নাত শরীফ পাঠ করেন। যে নাত শরীফ নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি স্বয়ং রচনা করেছেন। যা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নাত শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
এই মাদ্রাসায় ছোট-বড়, ছাত্রী-শিক্ষিকা প্রত্যেকেই পরস্পরকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করেন। মাদ্রাসার সর্বত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিদ্যমান। এমনকি এখানকার ওয়াশরুমগুলো যেন সবসময় পরিচ্ছন্ন থাকে সেজন্য চব্বিশঘণ্টা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যায় বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার্থীরা ওয়াশরুম ব্যবহার করতে চায় না। যা তাদের স্বাস্থের জন্য খুবই ক্ষতিকর হয়ে থাকে। মাদ্রাসার সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম যেমন ভর্তিগ্রহণ, সিলেবাস প্রনয়ন, পরীক্ষার সময়সূচি, ফলাফল বিতরণ, ছুটি প্রদান ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট সব কিছু হিজরী সাল, মাস, তারিখ অনুযায়ী হয়ে থাকে। আমরা এই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনে নিজেদেরকে মশগুল রাখতে পারছি। এখানে অবস্থানের কারণে চলতে ফিরতে সর্বাবস্থায় নেককাজ করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
এরকম আরো কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই সম্মানিত মাদরাসা উনার, যেসব বৈশিষ্ট্য অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি আমাদেরকে এমনভাবে গড়ে তুলছেন যাতে আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ মাদ্রাসার সর্বশ্রেষ্ঠ ছাত্রী হয়ে পুরো কায়িনাতের কাছে হাক্বীক্বী দ্বীন ইসলাম পৌছিয়ে দিতে পারি। আমরা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে পেয়ে সত্যিই অনেক গর্বিত কেননা তিনি আমাদেরকে যেভাবে যোগ্য করে তুলছেন সেটা অন্য মাদ্রাসায় হলে পেতাম না। তিনি হচ্ছেন কায়িনাতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মুয়াল্লিমা। আর সেজন্যই উনার সম্মানিত মাদ্রাসাও কায়িনাতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।
প্রিয় পাঠক! এতক্ষণে আপনি অবশ্যই কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠা ব্যক্তিত্বা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সর্বশ্রেষ্ঠ মাদরাসা সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে কিছুটা হলেও অবগত হয়েছেন। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত আমাদের মা-বোনদেরকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কদম মুবারক উনার ছায়াতলে রেখে, নিজেদের পাশাপাশি তাদেরকেও আল্লাহওয়ালী হিসেবে পরিণত করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাকে এই সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারকের শোকরগুজারীতে আজীবন মশগুল থাকার তাওফীক দান করেন। আমীন।
-আহমাদ জান্নাত (সাভার)।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত ‘মাহে রজব’ উনার মর্যাদা মর্তবার অন্যতম কারণ ‘পবিত্র লাইলাতুর রগায়িব শরীফ’
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত গায়িবী নিদা মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘শীতকাল মু’মিনদের জন্য বসন্ত’
০১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র রজবুল হারাম মাসে রোযা রাখার ফযীলত
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নফসের অনুসরণকারী ধর্মব্যবসায়ীদের অনুসরণ করা জায়েজ নেই
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নারীদের জন্য পুরুষদের বেশ বা পুরুষদের নারীবেশ -এটা কাফিরদের রীতিনীতি
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হাত-পা, চেহারা খোলার মাধ্যমে অবশ্যই সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, যা বেপর্দার অন্তর্ভুক্ত
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৯)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া ইহসান মুবারক
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)