সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনে বিশেষ সুসংবাদ প্রাপ্তি
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার নিয়ত করার কারণে মৃত্যুদ- থেকে মুক্তিলাভ
, ১৪ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে- “কথিত উমাইয়া খলীফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান (ইবনে হাকাম ইবনে আবুল আছ আমর ইবনে উমাইয়্যাহ্) এর শাসনামলে শামদেশে একজন সুদর্শন যুবক ছিলেন। তিনি অশ্বারোহন খুব পছন্দ করতেন। একদিনের কথা- যখন তিনি উনার একটি উন্নত জাতের ঘোড়ার পিঠে আরোহন করেন, তখন হঠাৎ ঘোড়াটি ভয় পেয়ে উনাকে নিয়ে শামদেশের রাস্তাসমূহে চলতে থাকে। কিন্তু ঘোড়াটিকে নিয়ন্ত্রণ করার উনার কোনো ক্ষমতা ছিলো না। ফলে ঘোড়াটি কথিত খলীফা আব্দুল মালিকের (রাজপ্রাসাদের) দরজায় গিয়ে উপনীত হয়। তখন কথিত খলীফা আব্দুল মালিকের এক ছেলে আকস্মিকভাবে ঘোড়ার সামনে এসে পড়ে, আর সেও ঘোড়াটিকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হলো না। তখন ঘোড়াটি কথিত খলীফার ছেলেকে আঘাত করে হত্যা করে ফেলে। এই সংবাদ কথিত খলীফার নিকট পৌঁছলে সে যুবক ছেলেকে তার সামনে উপস্থিত করার জন্য আদেশ করে। অতঃপর যখন খলীফা (রাজপ্রাসাদের) উপর থেকে উনার দিকে দৃষ্টি দেয়, তখন উনার অন্তরে এই কথার উদয় হয় যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আমি একটি বড় ওলীমা বা খাবারের মজলিসের ব্যবস্থা করে সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত মু’জিযা শরীফসমূহ, ঘটনা মুবারকসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করবো, বিশ্লেষণ করবো। অতঃপর যখন সেই যুবক খলীফার সামনে উপস্থিত হন, তখন খলীফা সেই যুবক উনাকে গলা টিপে হত্যা করার মত গোস্বা থাকা সত্ত্বেও উনাকে দেখে হেসে দিয়ে বললো- ‘হে যুবক! আপনি কি নিখুঁত জাদু করেন?’ জবাবে যুবক বললেন- ‘হে আমীরুল মু’মিনীন! মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমি জাদু করি না।’ অতঃপর খলীফা বললো, ‘আমি আপনার অপরাধ ক্ষমা করে দিলাম; কিন্তু আপনি কি বলেছেন, তা আমাকে বলুন।’ যুবক ছেলেটি বললেন, আমি বলেছিলাম- ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, তাহলে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আমি একটি বড় ওলীমা বা খাবারের মজলিসের ব্যবস্থা করবো।’ তখন কথিত খলীফা বললো, ‘আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আর এই নিন ১ হাজার দীনার (স্বর্ণমুদ্রা), মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আপনাকে আমি এটা হাদিয়া করলাম এবং আপনি আমার ছেলের হত্যার অপরাধ থেকেও মুক্ত।’ অতঃপর যুবক ছেলেটি মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মৃত্যুদ-ের শাস্তি থেকে ক্ষমা পেয়ে এবং এক হাজার স্বর্ণ মুদ্রা গ্রহণ করে বের হয়ে গেলেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইয়ানাতুত ত্বালিবীন ৩/৪১৫)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা এবং উনার সম্মানার্থে খরচ করার নিয়ত করলেই মৃত্যুদ-সহ ইহকালীন-পরকালীন সমস্ত প্রকার বিপদ-আপদ, বালা-মুসীবত থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত ঘটনা মুবারক বর্ণনা করার পর ‘ইয়ানাতুত ত্বালিবীন’ কিতাবের লেখক আল্লামা সাইয়্যিদ আবূ বকর মক্কী দিমইয়াতী শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “প্রকৃতপক্ষে আমি এই বিষয়ে কথা দীর্ঘায়িত করেছি এই কারণে যে, যাতে সমস্ত মুসলমানরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনে মনযোগী এবং আগ্রহী হন। কেননা তিনিই সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজূদ পাক মুবারক যে, উনার সম্মানার্থেই সমস্ত রূহ এবং জিসিম সৃষ্টি করা হয়েছে অর্থাৎ সমস্ত কায়িনাত সৃষ্টি করা হয়েছে। উনার সম্মানার্থেই জান, মাল, খাদ্য-দ্রব্য সমস্ত কিছু হাদিয়া পেশ করা সকলের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য অর্থাৎ ফরয।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে এবং আপনাদেরকে দায়িমীভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার এবং উনার সম্মানার্থে, উনার জন্যই সর্বকালে এবং সবসময় সমস্ত ধন-সম্পদ ব্যয় করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!” (ই‘য়ানাতুত ত্বালিবীন ৩/৪১৫)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৭)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৪)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৬)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক (৩)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)