সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
, ১৬ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার বেনযীর দৃষ্টান্ত মুবারক:
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণনা মতে- উহুদের সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার পরে আদাল ও কারা গোত্রের কিছু লোক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে আরযী পেশ করে যে, দয়া করে আমাদের গোত্রে কয়েকজন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং সম্মানিত শরীয়াত উনার তা’লীম মুবারক দেয়ার জন্য যাওয়ার অনুমতি মুবারক দান করুন, সেখানে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসার ঘটেছেন, অনেকেই সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তাদের এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে হযরত খুবাইব ইবনে আদী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেসহ মোট ছয়জনকে সেখানে যাওয়ার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক দেন। উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে রওয়ানা করেন। উনারা কিছু দূর যাওয়ার পর হুজাইল গোত্রের ‘আর রাজী’ নামক খালের পাশে মুশরিকরা উনাদের উপর আক্রমণ করে। হযরত খুবাইব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে তারা বন্দি করে এবং অন্যান্যদেরকে শহীদ করে। উনাদের দু’জনকে হাত বেঁধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ নিয়ে যায় এবং হুজাইল গোত্রের দুইবন্দীর বিনিময়ে উনাদেরকে কুরাইশদের নিকট অর্পণ করে। সম্মানিত মুসলমান উনাদের হাতে নিহত উমাইয়্যাহ্ ইবনে খালাফের ছেলে সাফওয়ান ইবনে উমাইয়্যাহ্ তার পিতার হত্যার বদলা নেওয়ার জন্য হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে গ্রহণ করে। সে তার পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারবে মনে করে খুবই আনন্দিত হয়। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মুশরিকরা অনেক চিন্তা-ভাবনা ও পরামর্শের পর সিদ্ধান্ত নিল যে, উনাদের দু’জনকে ‘তানঈম’ নামক স্থানে শহীদ করা হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
আল্লামা কাযী আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব ‘শিফা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
ولما أَخْرجَ أَهْلُ مَكَّةَ حَضْرَتْ زَيْدَ بن الدَّثِنَةِ رَضِىَ اللهُ تعَالٰـى عَنْهُ مِنَ الْحَرَمِ لِيَقْتُلُوهُ قَالَ لَهُ حَضْرَتْ اَبُوْ سُفْيَانُ بْنُ حَرْبٍ رَضِىَ اللهُ تعَالٰـى عَنْهُ أنْشُدُكَ اللَّه يَا حَضْرَتْ زَيْدُ رَضِىَ اللهُ تعَالٰـى عَنْهُ أتُحِبُّ أَنَّ سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْاٰنَ عندنا مكانك يضرب عنقه وأنك في أهلك فقال حَضْرَتْ زَيْدٌ رَضِىَ اللهُ تعَالٰـى عَنْهُ والله ما أحب أن سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْاٰنَ فِي مَكانِهِ الَّذِي هُوَ فِيهِ تُصِيبُهُ شَوْكَةٌ وَأَنِّي جَالِسٌ فِي أهْلِي فَقَالَ حَضْرَتْ اَبُوْ سُفْيَانُ رَضِىَ اللهُ تعَالٰـى عَنْهُ مَا رَأيْتُ مِنَ النَّاسِ أَحَدًا يُحِبُّ أَحَدًا كَحُبِّ أَصْحَابِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মুশরিকরা যখন হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে শহীদ করার জন্য পবিত্র হারাম শরীফ থেকে বের করে নিয়ে আসলো, তখন হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু (তখনো তিনি সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেননি) তিনি হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন- ‘হে হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! আপনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নাম মুবারক-এ ক্বসম করে বলছি যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি এখন আপনার স্থানে আমাদের নিকট থাকতেন, উনাকে শহীদ করা হতো আর আপনি আপনার পরিবার-পরিজন উনাদের নিকট থাকতেন আপনি কি এটা পছন্দ করবেন?’ হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সাথে সাথেই জবাব দিলেন- ‘মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেখানে আছেন সেখানে থাকবেন; অথচ কোনো একটি কাঁটা উনাকে আঁচড় করবে আর আমি আমার পরিবার-পরিজন উনাদের সাথে বসে থাকবো আমি কখনোই এটা পছন্দ করবো না। ’ উনার এই জবাব মুবারক শুনে হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি (আশ্চর্যান্বিত হয়ে) বলেন- ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা যেমন মুহব্বত মুবারক করেন, কোনো মানুষকে আমি অন্য কাউকে এমন মুহব্বত করতে কখনোই দেখিনি। ” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২৩, আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ্ ২/৬১৯, শরহুয যারক্বানী ৯/৮১ ইত্যাদি)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,
أَنَّهُمْ لَمَّا صَلَبُوا حَضْرَتْ زَيْدَ بْنَ الدَّثِنَةِ رَضِىَ اللهُ تعَالٰـى عَنْهُ رَمَوْهُ بِالنَّبْلِ لِيَفْتِنُوهُ عَنْ دِينِهِ فَمَا زَادَهُ إِلَّا إِيمَانًا وَتَسْلِيمًا
অর্থ: “যখন মুশরিকরা হযরত যায়িদ ইবনে দাছিনাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে (শহীদ করার পূর্বে) শূলে চড়িয়ে উনার শরীর মুবারক তীর মেরে (ঝাঁঝরা করে) উনার সম্মানিত ঈমান উনার দৃঢ়তা যাচাই করে, তখন এতে উনার সম্মানিত ঈমান এবং সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর ইস্তিক্বামত থাকার দৃঢ়তাই প্রকাশ পান। ” সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুন নুবুবিয়্যাহ্ লি ইবনে কাছীর ৩/১৩০, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/৭৬)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত খলীফা উনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা সম্পূর্ণরূপে হারাম-নাজায়িয এবং বিদ্রোহীকে কতল করা বৈধ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার অনুসরণ-অনুকরণ করা ফরয
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার নিকট আনুগত্যতার বাইআত গ্রহণ করা ফরয
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই দায়িমীভাবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ পালন করতেই থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (১৬)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার শর্তাবলী
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার গুরুত্ব এবং আবশ্যকতা:
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আজ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে সিব্তু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুল উমাম আল খ¦মিস আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)