সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
, ০৮ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সম্মানিত পিতা, আহাল, সন্তান ও ভাই সবাই শহীদ হওয়ার পরও স্বাভাবিক:
উহুদের সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ঘটনা। এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ একজন আনছার মহিলা ছাহাবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার সম্মানিত পিতা, আহাল, সন্তান এবং ভাই এই চারজন একান্ত আপন লোক অংশগ্রহণ করেন এবং উনারা সবাই সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ কাফির-মুশরিক, মুনাফিকরা গুজব রটিয়েছিল যে, মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! এই সংবাদ শুনামাত্র ঐ হযরত মহিলা ছাহাবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে বেহুঁশী হালে সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দানের দিকে দৌড়াচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একজন বললেন, ‘আপনার সম্মানিত পিতা শাহাদাত বরণ করেছেন। ’ তিনি বললেন, ‘আমার সম্মানিত পিতা শাহাদাত বরণ করেছেন এজন্য আমার কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই। আমি জানতে চাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন আছেন?’ আরো কিছু দূর সামনে যাওয়ার পর আরেকজন বললেন, ‘আপনার সম্মানিত আহাল তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন। ’ উনি বললেন, ‘আমার আহাল শাহাদাত বরণ করেছেন এজন্য আমার কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই। আপনারা বলুন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন আছেন?’ আরো কিছুদূর যাওয়ার পর অন্য একজন বললেন, ‘আপনার সন্তান শাহাদাত বরণ করেছেন। তিনি বললেন, ‘তাতেও আমার কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই। আমি জানতে চাই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন আছেন?’ আরো কিছুদূর যাওয়ার পর উনাকে বলা হল- ‘আপনার ভাই শহীদ হয়েছেন। ’ তখনও তিনি বললেন, ‘তাতেও আমার কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই। আপনারা বলুন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কেমন আছেন?’ সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ফানা ও বাক্বার কি বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক! সুবহানাল্লাহ!
অবশেষে সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে পৌঁছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখতে পেয়ে তিনি ইতমিনান হলেন এবং বললেন-
كُلُّ مُصِيبَةٍ بَعْدَكَ جَلَلٌ يَا رَسُولَ اللَّهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনাকে দেখার সাথে সাথে আমার সমস্ত দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, বালা-মুছীবত সব কিছু দূর হয়ে গেছে। ” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছেন, যখন ঐ হযরত মহিলা ছাহাবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে উনার পিতা, আহাল, সন্তান ও ভাই উনাদের শাহাদাতী শান গ্রহণ করেছেন, এই সংবাদ মুবারক দেয়া হচ্ছিলো, তখন তিনি প্রত্যেক বারই বলছিলেন, এই সমস্ত কথা আমি শুনতে চাইনি; বরং আমাকে এই সংবাদ দিন যে-
مَا فَعَلَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি করছেন, তিনি কেমন আছেন?”
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বলেছিলেন,
خَيْرٌ هُوَ بِحَمْدِ اللَّهِ كَمَا تُحِبّينَ
‘আল হামদুলিল্লাহ, তিনি সর্বোত্তম শান মুবারক-এ রয়েছেন যেমন আপনি চান। ” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বোত্তম শান মুবারক উনার সংবাদ শুনে তিনি বলেছিলেন,
أَرُونِيْهِ حَتَّى أَنْظُرُ إِلَيْهِ
‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক-এ আমাকে নিয়ে যান, আমি যেন উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক লাভ করতে পারি। ’
ঐ হযরত মহিলা ছাহাবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক লাভ করলেন, তখন অত্যন্ত ইতমিনান হলেন এবং বললেন,
يَا رَسُولَ اللَّهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّ مُصِيبَةٍ بَعْدَكَ جَلَلٌ
‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক লাভ করার পর আমার সমস্ত দুঃখ-কষ্ট, মুছীবত সব কিছু দূর হয়ে গেছে। ’ সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে মুনযীর, আর রওদ্বুল উন্ফ, আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্, আস সীরাতুন নুবুবিয়্যাহ্, তারীখুল উমাম ওয়াল মুলুক, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্, আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ্ ইত্যাদি)
তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা কতটুকু ফানা ও বাক্বা ছিলেন? তাহলে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে উনার মাঝে কতটুকু ফানা ও বাক্বা হতে হবে? তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল? এক কথায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
উল্লেখ্য যে, পরবর্তী উম্মত যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা ও বাক্বা হতে চায়, তাহলে অবশ্যই আগে স্বীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা ও বাক্বা হতে হবে। উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা-বাক্বা হতে পারলে আপসেআপ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা ও বাক্বা হতে পারবে। সুবহানাল্লাহ! অন্যথায় কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেনই করবেন ইনশাআল্লাহ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খলীফা মনোনীত হওয়ার ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (১৭)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা সম্পূর্ণরূপে হারাম-নাজায়িয এবং বিদ্রোহীকে কতল করা বৈধ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার অনুসরণ-অনুকরণ করা ফরয
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত খলীফা উনার নিকট আনুগত্যতার বাইআত গ্রহণ করা ফরয
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)