সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (১)
, ২৬ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০২ সাদিস , ১৩৯২ শামসী সন , ৩০ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৪ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
قَدْ جَآءَكُمْ مِّنَ اللهِ نُـوْرٌ وَّكِـتٰبٌ مُّبِيْـنٌ
অর্থ: “নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক এবং সুস্পষ্ট কিতাব এসেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মায়িদাহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক’ দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
قَدْ جَآءَكُمْ مِّنَ اللهِ نُـوْرٌ هُوَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “{নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক এসেছেন। সুবহানাল্লাহ!} তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। ” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে জালালাইন)
অনুরূপ বর্ণনা আরো অসংখ্য বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থসহ অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন।
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ نُـوْرِىْ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْئٍ مِّنْ نُّـوْرِىْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক সৃষ্টি মুবারক করেন এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেন। ” সুবহানাল্লাহ! (মাকতূবাত শরীফ, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল ইনসানুল কামিল, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইত্যাদি)
মূলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক সৃষ্টি মুবারক করেন। অতঃপর উনার সম্মানার্থে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য, উনারই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে নেয়া এক কাতরা নূর মুবারক দিয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক, সম্মানিত কুরসী মুবারক, সম্মানিত জান্নাত মুবারক, জাহান্নাম, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত কায়িনাত সৃষ্টি করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ‘নূর মুজাসসাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ এবং ‘বেমেছাল মহাসম্মানিত বুলন্দী শান মুবারক ৩য় খ-’ পাঠ করুন।
কাজেই, যেহেতু চন্দ্র-সূর্যসহ সমস্ত কায়িনাত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক থেকে নেয়া এক কাতরা নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। তাই ‘চন্দ্র ও সূর্যের আলোতে উনার কোনো ছায়া মুবারক পড়বেন না বা উনার ছায়া মুবারক থাকবেন না এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক উনার আলো চন্দ্র ও সূর্যের আলোর উপর প্রাধান্য বিস্তার করবেন’ এটাই স্বাভাবিক। সুবহানাল্লাহ! আর এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ মুবারক। এ বিষয়ে অসংখ্য দলীল-আদিল্লাহ মওজূদ রয়েছেন। নি¤েœ সংক্ষেপে কিছু দলীল-আদিল্লাহ পেশ করা হলো-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ لَمْ يَكُنْ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ظِلٌّ وَلَمْ يَقُمْ مَعَ شَمْسٍ قَطُّ اِلَّا غَلَبَ ضَوْءُهٗ ضَوْءَ الشَّمْسِ وَلَمْ يَقُمْ مَعَ سِرَاجٍ قَطُّ اِلَّا غَلَبَ ضَوْءُهٗ ضَوْءَ السِّرَاجِ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না। উনার ছায়া মুবারক সূর্যের আলোতে পড়তেন না এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক উনার আলো সূর্যের আলোর উপর প্রাধান্য বিস্তার করতেন। তিনি (রাতে) বাতির আলোর সামনে দাঁড়ালেও বাতির আলোর উপর উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক উনার আলো প্রাধান্য বিস্তার করতেন। ” সুবহানাল্লাহ! (জুযউল মাফকূদ মিন মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ১/৫৬, ইমতাউল আসমা’ ২/১৭০)
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা হাকীম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,
اِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ يَرٰى لَهٗ ظِلٌّ فِىْ شَمْسٍ وَلَا قَمَرٍ
অর্থ: “নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘ছায়া মুবারক’ দেখা যেতেন না। ” সুবহানাল্লাহ! (খছাইছুল কুবরা ১/১১৬)
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اَخْرَجَ حَضْرَتْ اَلْحَكِيْمُ اَلتِّرْمِذِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ ذَكْوَانَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ يَرٰى لَهٗ ظِلٌّ فِىْ شَمْسٍ وَلَا قَمَرٍ
অর্থ: “হযরত ইমাম হাকীম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত যাকওয়ান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘ছায়া মুবারক’ দেখা যেতেন না। ” সুবহানাল্লাহ! (খছাইছুল কুবরা ১/১১৬)
বাহরুল উলুম, শাইখুল মাশায়িখ হযরত আল্লামা ইবনে সাবা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اِنَّ ظِلَّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لَا يَقَعُ عَلَى الْاَرْضِ وَاِنَّهٗ كَانَ نُوْرًا وَكَانَ اِذَا مَشٰى فِى الشَّمْسِ اَوِ الْقَمَرِ لَا يَظْهَرُ لَهٗ ظِلٌّ
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার ছায়া মুবারক যমীনে পড়তেন না। কেননা তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক। ফলে যখন তিনি সূর্য অথবা চাঁদের আলোতে হাঁটতেন, তখন উনার ছায়া মুবারক দেখা যেতেন না। ” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, খছাইছুল কুবরা)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৬)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৮)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৭)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১২ খলীফা আলাইহিমুস সালাম (১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাধ্যে বর্ণিত ‘আন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি’ উনার হাক্বীক্বী অর্থ ও তাফসীর মুবারক এবং এ বিষয়ে বদ আক্বীদাহধারীদের কুফরীমূলক বক্তব্যের দলীলভিত্তিক খন্ডনমূলক জবাব (৪)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১৬)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক (৩)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)