সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

(পূর্বপ্রকাশিতের পর)

চার. আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন, رَجُلٌ يُّقَالُ لَهُ السَّفَّاحُ “তিনি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, এমন একজন মহান খলীফা হবেন যে, উনাকে ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’ বলা হবে। ” সুবহানাল্লাহ!

যা একখানা লক্বব মুবারক। এই লক্বব মুবারক উনার অসংখ্য-অগণিত সুন্দর সুন্দর অর্থ মুবারক রয়েছেন- তার মধ্যে দুটি বিশেষ অর্থ মুবারক হচ্ছেন- (১) অসীম দাতা এবং (২) কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, গুমরাহ্, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্নকারী। সুবহানাল্লাহ!

আমরা এদিক থেকে লক্ষ্য করলেও দেখতে পাবো যে, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আস সাফফাহ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম ১৪৩৪ হিজরীতে ৫৬ দিনব্যাপী এবং ১৪৩৫ হিজরীতে ৫৮ দিনব্যাপী সম্মানিত মাহফিল মুবারক উনার ইন্তিযাম মুবারক করেছেন এবং পর্যাক্রমে সেই মাহফিল মুবারক অনন্তকালব্যাপী জারী করেছেন, আবার বিশেষ ইন্তিযামে ৯০ দিনব্যাপী আযীমুশ শান মাহফিল মুবারক করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান মুবারক প্রকাশ করার লক্ষ্যে দৈনিক আল ইহসান শরীফ, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ এবং আরো অন্যান্য অনেক পত্র-পত্রিকা, রেসালা শরীফ ও কিতাবাদি মুবারক প্রকাশ করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! তাছাড়াও তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে উনাদের পক্ষ থেকে হাজার হাজার পশু কুরবানী মুবারক করে যাচ্ছেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আক্বীক্বাহ্ মুবারকও করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!

আর অপর দিকে তিনি উনার মক্ববূল মুনাজাত শরীফ উনার মাধ্যমে একের পর এক খোদায়ী আযাব-গযবের দ্বারা কাফির-মুশরিক, ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজূসী, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেন। তাই তো বিশ্বের তথাকথিত সুপার পাওয়ার ইউরোপ, আমেরিকা, চীন, জাপান, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মান অর্থাৎ সমস্ত কাফির-মুশরিকরা আজ সুপার ফকিরে পরিণত হয়েছে; এমনকি তাদের সবাইকে আর্থিক সহায়তাকারী সন্ত্রাসী ইহুদীরাও কঠিন ফকিরে পরিণত হয়েছে। কাফির-মুশরিকরা আজ খাদ্যের অভাবে মারামারি করছে, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই করছে, পোকামাকড় খাচ্ছে, কুকুরের সাথে ডাস্টবিন থেকে খাবার খাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এমনকি তারা নিজেদের ইস্তিঞ্জা (প্রস্রাব-পায়খানা) পর্যন্ত খাচ্ছে এবং একে অপরকে হত্যা করে সেই গোশত পর্যন্ত খাচ্ছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!

তারা আজ সম্মানিত মুসলমান উনাদের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করছে। বন্যা, তুফান, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, ভূমিকম্প, ভূমিধস, দাবানল, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি, অর্থনৈতিক মন্দা প্রভৃতি খোদায়ী আযাব-গযবে পড়ে তাদের কোটি কোটি লোক জাহান্নামের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে ইনশাআল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!

ইনশাআল্লাহ আমরা একটা সময় আরো দেখতে পাবো যে, এই সমস্ত কাফির, মুশরিক, ইহুদী, খ্রিস্টানরা পূর্বের ন্যায় সম্মানিত মুসলমান উনাদের গোলামী করবে। সুবহানাল্লাহ!

আর অপর দিকে মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক রোবের দাপটে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে বিশ্বের সমস্ত উলামায়ে সূ’ অর্থাৎ ওহাবী, খারিজী, রাফিজী, সালাফী, লা-মাযহাবী, জামাতী, দেওবন্দী, তাবলিগী তাবৎ ধর্মব্যবসায়ীদের হাক্বীক্বত ফাঁস হচ্ছে। তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। মরার পর তাদের আকৃতি বিকৃতি ঘটছে। যেমন- ফজলু, আনসার, নূরুদ্দীন, উবাইদুল, আজিজুল, কমিনী এবং তাদের সমমনা যারা রয়েছে এই সমস্ত উলামায়ে সূ’দের মৃত্যুর পর আকৃতি-বিকৃতি ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!

পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য কোনো খলীফা উনাদের জীবনী মুবারক-এ এরূপ দেখা যায় না।

সুতরাং এখান থেকেও সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠলো যে, সাইয়্যিদুল খুলাফা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম। তাই তো উনার মুবারক শানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-

وَاَمَّا السَّفَّاحُ فَهُوَ يَسْفَحُ الْمَالَ وَالدَّمَ

অর্থ: “আর যিনি মহান খলীফা হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম হবেন, তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান মুবারক ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে, পবিত্র ইনছাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে অঢেল, বেহিসাব ধন-সম্পদ বিলিয়ে দিবেন এবং রক্ত প্রবাহিত করবেন অর্থাৎ কাফির-মুশরিক, ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দু-বৌদ্ধ, মজূসী, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে দুনিয়ার যমীনে, সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে পবিত্র ইনছাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন, সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক জারী করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ শরীফ ৭/৪২০ ও ১৭/২৫৭, বাইহাক্বী শরীফ ও আবূ নাঈম শরীফ উনাদের বরাতে সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১০/৯২)

আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَاِذْ تَاَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ اِلىٰ يَوْمِ الْقِيٰمَةِ مَنْ يَّسُوْمُهُمْ سُوْءَ الْعَذَابِ

অর্থ: “(আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা দিচ্ছেন যে, তিনি অবশ্যই অবশ্যই তাদের উপর অর্থাৎ ইহুদী, খ্রিস্টান, কাফির-মুশরিক, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজূসী, মুনাফিক্ব¡¡ ও উলামায়ে সূ’দের উপর ক্বিয়ামত অবধি সময়ের মধ্যে এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাকে প্রেরণ করবেন। যিনি তাদেরকে কঠিন শাস্তি প্রদান করবেন। ” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৭)

আর সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারকই হচ্ছেন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি সারা পৃথিবীর ইহুদী, খ্রিস্টান, কাফির-মুশরিক, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজূসী, মুনাফিক্ব¡ ও উলামায়ে সূ’দেরকে কঠিন শাস্তি প্রদান করে যাচ্ছেন, তাদেরকে দুনিয়ার যমীন থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেন। এমন একটি সময় আসবে যখন তিনি তাদেরকে পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে সারা বিশ্বে, সারা কায়িনাতে পবিত্র ইনছাফ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন, সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক জারী করবেন। সুবহানাল্লাহ!

এই প্রসঙ্গে উনার মুবারক শানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ ۨ الصَّدَفـِـىّ ِ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ بَعْدِىْ خُلَفَاءُ وَبَعْدَ الْـخُـلَفَـاءِ اُمَرَاءُ وَبَعْدَ الْاُمَرَاءِ مُلُوْكٌ وَبَعْدَ الْـمُلُوْكِ جَبَابِرَةٌ وَبَعْدَ الْـجَـبَابِرَةِ يـَخْرُجُ رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ بَـيْـتِـىْ يَـمْلَاُ الْاَرْضَ عَدْلًا

অর্থ: “হযরত জাবির ছদাফী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার পরে হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যুগ, হযরত খলীফা আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর আমীর-উমরাদের যুগ, আমীর-উমারাদের পর রাজা-বাদশাহদের যুগ অর্থাৎ রাজতন্ত্র। রাজতন্ত্রের পর হবে চরম অত্যাচারী, চরম যালিম, চরম অহঙ্কারী, চরম প্রতাপশালী, চরম লুটেরা, চরম সৈ¦রাচারী, চরম নাফরমান, চরম উদ্ধত, চরম গুমরাহ্, চরম পথভ্রষ্ট, চরম বিভ্রান্ত, চরম গুমরাহ্কারী, চরম পথভ্রষ্টকারী, চরম বিভ্রান্তকর শাসকদের শাসনব্যবস্থা অর্থাৎ জোর জবরদস্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা, যুলুমতন্ত্র অর্থাৎ সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র। (তখন অবাধ্যতা, ঔদ্ধত্যতা, কঠোরতা, অহমিকা, ধৃষ্টতা, উচ্ছৃঙ্খলতা, ফিতনা-ফাসাদ, বেপর্দা-বেহায়া, অত্যাচার-অবিচার, যুলুম-নির্যাতন ও বে-ইনছাফীতে পুরো পৃথিবী ভরে যাবে। কোথাও পবিত্র ইনছাফ মুবারক উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট থাকবে না। ) অতঃপর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে আমার একজন খাছ আওলাদ, একজন মহান খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক নিবেন। তিনি দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুাবরক নিয়ে পুরো পৃথিবী, সারা কায়িনাত পবিত্র ইনছাফ মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন অর্থাৎ সারা বিশ্বে, সারা কায়িনাতে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠা করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৫/৪৫৬, আল ইস্তি‘আব ১/১৩৭)

সুতরাং সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনিই হচ্ছেন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান খলীফা ‘হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! উনার মুবারক উসীলায় বর্তমান যামানায় অবশ্যই অবশ্যই সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।

(অপেক্ষায় থাকুন। )

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।