সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক
, ২২ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২১ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُوْلُ لِصَاحِبِهِ لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللهَ مَعَنَا
অর্থ: “দু’জনের দ্বিতীয়। যখন উনারা সম্মানিত (সাওর) গুহা মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করছিলেন, তখন তিনি উনার ছাহিব অর্থাৎ সঙ্গী, ছাহাবী, খাদিম উনাকে বললেন, আপনি চিন্তিত হবেন না, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সাথে রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪০)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার তিনখানা সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা মুবারক করা হয়েছে-
১. উনাকে দু’জনের দ্বিতীয় বলা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! যদিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বিতীয় কেউ নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন খ¦ালিক্ব মালিক রব হিসেবে একক, তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বায়িম মাক্বাম হিসেবে একক। উনার সমকক্ষ কেউ নেই। তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব। সুবহানাল্লাহ! তারপরেও অত্র সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বিতীয় বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রমাণ করে দিলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা-মর্তবা হচ্ছেন- তিনি শুধু নবী-রসূল নন, এছাড়া সমস্ত মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
২. উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহিব অর্থাৎ সঙ্গী, ছাহাবী, খাদিম বলা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সাথে মহান আল্লাহ পাক তিনি রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ الدَّرْدَاءِ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ وَلاَ غَرَبَتْ عَلى أَحَدٍ أَفْضَلَ مِنْ حَضْرَتْ أَبِي بَكْرٍ الصديق عَلَيْهِ السَّلَامُ إِلاَّ أَنْ يَكُوْنَ نَبِيٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ
অর্থ: “হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এমন কোনো ব্যক্তির উপর সূর্য উদিত হয়নি, অস্তও যায়নি যিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে শ্রেষ্ঠ হতে পারেন; শুধুমাত্র হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত।” অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবাহ্ লি ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি ১/৩৫২, আল মুনতাখাব মিন মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমাইদ ১/১০১ ইত্যাদি)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার তরফ থেকে নীল নদের প্রতি সম্মানিত ফরমান মুবারক
খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া মিসরের শুষ্ক নীলনদের প্রতি ফরমান মুবারক লিখে পাঠিয়ে ছিলেনÑ
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
مِنْ عَبْدِ اللهِ عُمَرَ اَمِيْرِ الْمُؤْمِنِينَ اِلـٰى نِيْلِ اَهْلِ مِصْرَ اَمَّا بَعْدُ فَاِنْ كُنْتَ اِنَّـمَا تَـجْرِيْ مِنْ قِبَلِكَ وَمِنْ اَمْرِكَ فَلَا تَـجْرِ فَلَا حَاجَةَ لَنَا فِيْكَ وَاِنْ كُنْتَ اِنَّـمَا تَـجْرِىْ بِاَمْرِ اللهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ وَهُوَ الَّذِىْ يُـجْرِيْكَ فَنَسْأَلُ اللهَ تَعَالٰى اَنْ يُّـجْرِيَكَ
অনুবাদ:
বিস্মিল্লাহির রহ্মানির রহীম
“এই সম্মানিত চিঠি মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা, আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনে খাত্তাব আলাইহিস সালাম উনার পক্ষ হতে মিসরের নীলনদের প্রতি। হে নীলনদ! তুমি যদি নিজের ইচ্ছায় প্রবাহিত হয়ে থাকো, তাহলে তোমার পানি আমাদের কোনো দরকার নেই। আর যদি তুমি ওয়াহিদুল ক্বহ্হার মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক-এ প্রবাহিত হয়ে থাকো, (তাহলে তোমার পানি আমাদের প্রয়োজন রয়েছে।) মূলত, ওয়াহিদুল ক্বহ্হার মহান আল্লাহ পাক তিনিই তোমাকে প্রবাহিত করে থাকেন। তাই আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আরজু করছি, তিনি যেনো তোমাকে প্রবাহিত করান।” সুবহানাল্লাহ!
চিঠিটি ছিলো কাগজের মত পাতলা চামড়ার মধ্যে লিখা। চিঠিটি নীলনদের উপর নিক্ষেপ করার পর এটি হেলতে দুলতে আস্তে আস্তে নীলনদের ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া শুষ্ক যমীন স্পর্শ করলো। বর্ণিত রয়েছেন- ইতিহাস সাক্ষী, চিঠিখানা নীলনদের যমীন স্পর্শ করার সাথে সাথে একটি বিকট আওয়াজ হয় এবং পানি এক লাফে ১৬ হাত হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
যদি বিষয়টি এরূপই হয়, তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারক কালে মানুষ কতটুকু সুখ-শান্তির মধ্যে ছিলো, তা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে সংক্ষেপে এতটুকু বলা যায় যে, তখন মানুষ দুনিয়াতে থেকেই জান্নাতী অমীয় সুখ-শান্তি উপভোগ করেছিলো। সুবহানাল্লাহ! এর নামই হচ্ছেন সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওয়াহ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীকুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক উনার নূরের আলোতে পুরো পবিত্র হুজরা শরীফ আলোকিত হওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৫)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত যায়িদ বিন হারেছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৪)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার গুরুত্ব এবং আবশ্যকতা
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৩)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারকই হচ্ছেন মুসলমান উনাদের একমাত্র শাসন ব্যবস্থা
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (২)
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার পরিচিতি
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)